কলকাতা: দেবীপক্ষের সূচনা “সাশ্রয় উৎসব” দিয়ে শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। পণ্য পরিষেবা কর বা জিএসটি (GST) ২.০-তে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ বলে দাবি তাঁর। আমজনতা এবার সাশ্রয় ও সঞ্চয়ের মুখ দেখবেন বলে রবিবার জাতির উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেছেন তিনি। তবে এটিও প্রধানমন্ত্রীর অন্য আরও পাঁচটি ঘোষণার মতই “দেখনদারি”-তেই পর্যবসিত হবে বলে কটাক্ষ করলেন সিপিআইএম (CPIM) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা বর্ষীয়ান নেতা ডঃ সুজন চক্রবর্তী।
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার তথ্য উল্লেখ করে মানুষের মাথাপিছু আয় এবং সঞ্চয় যে ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে স্মরণ করিয়ে দিলেন তিনি। বর্ষীয়ান বামপন্থী নেতা বলেন, “রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার বুলেটিন বলছে, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সংসার চালানোর জন্য ধারের পরিমাণ দেরগুণ বেড়ে গেছে। সঞ্চয়ের পরিমাণ ক্রমশ কমছে। সংসার চালাতে গিয়ে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে”। এরপর নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে সুজন বলেন, “আমি জানি না উনি কিসের সাশ্রয় উৎসবের কথা বলছেন! ক’টা দিন যেতে দিন। এটাও নরেন্দ্র মোদীর আর পাঁচটা ঘোষণার মত দেখনদারিতেই পরিণত হবে”।
মাথাপিছু আয় নিয়ে প্রাক্তন আরবিআই (RBI) গভর্নর সি রঙ্গরাজনের বক্তব্য
গত সপ্তাহেই ভারতীয়ের মাথা পিছু আয় (Per capita Income) নিয়ে প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর সি রঙ্গরাজন বলেছিলেন, “ভারত বিশ্বের পঞ্চম অর্থনীতির দেশ, এটি চিত্তাকর্ষক হলেও মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে আমাদের এখনও বহুদূর পথ চলা বাকি।” মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে ২০২০ সালের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে রঙ্গরাজন বলেছিলেন, “বিশ্বের ১৯৭ টি দেশের মধ্যে মাথা পিছু আয়ের ক্ষেত্রে ভারতের স্থান ছিল ১৪২! এর থেকেই প্রমাণিত, আমাদের কতটা পথ অতিক্রম করা বাকি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই”।
প্রসঙ্গত, মানুষের মাথা পিছু ঋণের বোঝাও বর্তমানে ঊর্ধ্বমুখী। চলতি বছরের ৩০ জুন প্রকাশিত আরবিআই-এর প্রতিবেদন এদেখা গিয়েছে, ২০২৩-এর মার্চে যেখানে মানুষের মাথা পিছু ঋণের পরিমাণ ছিল ৩.৯ লক্ষ টাকা, ২০২৫ সালের মার্চে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৮ লক্ষে। সুতরাং, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানো কেবলমাত্র ঘোষণাতেই থেকে গেলে আমজনতার তরীও তিরেই দাঁড়িয়ে থাকবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে বিরোধীরা।
অন্যদিকে, জিএসটি নিয়ে বরাবর প্রতিবাদ জানানো কংগ্রেসও রবিবারের ঘোষণার পর কেন্দ্র সরকারকে বিঁধতে ছাড়েনি। পাল্টা কটাক্ষে কংগ্রেস বলে, জিএসটির জন্মের সন্ধিক্ষণ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জিএসটি বা “গব্বর সিং ট্যাক্স”-এর মাধ্যমে যেভাবে আমজনতাকে লুট কড়া হয়েছে, তা দেশের মানুষ কোনদিন ভুলবে না।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
