মুকুটে নতুন পালক, রানাঘাটে রেকর্ড গড়ে তৃণমূলের ‘নয়নের মণি’ এই অধিকারী

সাংসদ হতে পারেননি। তবে তৃণমূলের টিকিটে রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে জিতে ফের বিধায়ক হলেন মুকুটমণি অধিকারী (Mukut Mani Adhikari)। সবুজ ঝড়ে কার্যত উড়ে গিয়েছেন এই…

সাংসদ হতে পারেননি। তবে তৃণমূলের টিকিটে রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে জিতে ফের বিধায়ক হলেন মুকুটমণি অধিকারী (Mukut Mani Adhikari)। সবুজ ঝড়ে কার্যত উড়ে গিয়েছেন এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মনোজকুমার বিশ্বাস। প্রায় ৪০ হাজার ভোটে মনোজকে হারিয়েছেন মুকুট (Mukut Mani Adhikari)। আর বিধানসভা উপনির্বাচনে জিতেই বিরাট রেকর্ড গড়লেন তরুণ চিকিৎসক মুকুটমণি অধিকারী।

২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত রানাঘাট দক্ষিণ থেকে জিতে যারা বিধায়ক হয়েছেন, তার মধ্যে সর্বোচ্চ মার্জিন তৃণমূলের মুকুটের (প্রায় ৪০ হাজার)। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, ২০০৬ সাল পর্যন্ত রানাঘাটে দুটি বিধানসভা ছিল। রানাঘাট পূর্ব এবং রানাঘাট পশ্চিম। তবে সীমানা পুনর্বিন্যাসের পর ২০১১ সালে রানাঘাট দক্ষিণ, রানাঘাট উত্তর-পূর্ব এবং রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্রের জন্ম হয়।

   

২০১১ সালে রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন আবীররঞ্জন বিশ্বাস। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল – ৯৯,৪৩২। দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন সিপিএম প্রার্থী অলোক দাস। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল – ৭৯,৮২৪। তৃতীয় স্থানে ছিলেন বিজেপির বিনয়ভূষণ রায়। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল – ৮,৯৩৪। তৃণমূল প্রার্থী জয়ের ব্যবধান – ১৯,৬০৮।

দেশের সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক হলেন বাগদার মধুপর্ণা ঠাকুর

২০১৬ সালে রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সিপিএমের টিকিটে জয়ী হন রমা বিশ্বাস। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল – ১,০৪,১৫৯। দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন তৃণমূলের আবীররঞ্জন বিশ্বাস। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল – ৮৬,৯০৬। তৃতীয় স্থানে ছিলেন বিজেপির সুস্মিতরঞ্জন হালদার। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল – ১৮,১১৪। সিপিএম প্রার্থী জয়ের ব্যবধান – ১৭,২৫৩।

২০২১ সালে রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী হন মুকুটমণি অধিকারী। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল – ১,১৯,২৬০। দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন তৃণমূলের বর্ণালী দে রায়। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল – ১,০২,৭৪৫। তৃতীয় স্থানে ছিলেন সিপিএমের রমা বিশ্বাস। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল – ১৫,১২৪। বিজেপি প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান – ১৬,৫১৫।

আর এবার ২০২৪ সালের উপনির্বাচনে রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে মুকুটমনি পেলেন ১,১৩,৫৩৩ ভোট। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী তথা শিক্ষক মনোজকুমার বিশ্বাস। তাঁর প্রাপ্ত ভোট – ৭৪,৪৮৫। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন সিপিএম প্রার্থী তথা তরুণ শিক্ষক অরিন্দম বিশ্বাস। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল – ১৩,০৮২। তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান – ৩৯,০৪৮।

লোকসভা ভোটের মাঝপথে কেঁদেছিলেন, মানিকতলা জিতিয়ে ‘চাণক্য’ সেই কুণালই

২০২৪ এর লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেন মুকুটমণি অধিকারী। তৃণমূল টিকিটও দিয়ে দেয় মুকুটমণি অধিকারীকে। এই কেন্দ্রে বিজেপির হয়ে লড়েন বিদায়ী সাংসদ জগন্নাথ সরকার। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের তুলনায় জয়ের মার্জিন কিছুটা কমলেও রানাঘাট কেন্দ্রে সহজেই জিতে যান জগন্নাথ সরকার।

মুকুটমণি অধিকারীকে দেড় লক্ষেরও বেশি ভোটে হারান জগন্নাথ। লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভায় বিজেপির প্রাপ্ত ভোট – ১২৩৫৬৮। তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে ৮৬৬৩২ ভোট। আর বাম-কংগ্রেস জোটের দখলে গিয়েছে ২১২১৯ ভোট। অর্থাৎ, এই কেন্দ্রে বিজেপির লিড ৩৬ হাজারেরও বেশি।

কিন্তু সেই লিড এবার কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছে। মুকুট-ঝড়ে উড়ে গিয়েছেন বিজেপি মনোজ। ৩৯ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন মুকুটমণি। জয়ের পর মুকুট বলেন, বিজেপি মানুষের খবর রাখে না। আমোদে ব্যস্ত। পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষের কথা বিজেপি ভাবে না। মানুষ সেটা বুঝে গিয়েছে। তাই আজকের এই ফল।

মানিকতলার ভোটে গো-হারা হেরেও পুরস্কৃত কল্যাণ! বড় ঘোষণা কুণালের