প্রসূতির মৃত্যুতে শোরগোল, অ্যাসিডিটি, অ্যান্টিবায়োটিক সহ ৭ ওষুধে নিষেধাজ্ঞা জারি

মেদিনীপুর মেডিক্যাল (Medical College) কলেজ হাসপাতালে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে স্যালাইন বিভ্রাটের কারণে ইতিমধ্যেই এক প্রসূতির মৃত্যু ঘটেছে। এছাড়া, আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরও তিনজন প্রসূতি…

Shocking Scene at Uluberia Medical: Acid Used to Clean Floor During Obstetric Surgery

মেদিনীপুর মেডিক্যাল (Medical College) কলেজ হাসপাতালে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে স্যালাইন বিভ্রাটের কারণে ইতিমধ্যেই এক প্রসূতির মৃত্যু ঘটেছে। এছাড়া, আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরও তিনজন প্রসূতি রয়েছেন, যাদের মধ্যে দুইজনকে ভেন্টিলেশনে পাঠানো হয়েছে। প্রসূতিদের বাঁচাতে চিকিৎসকরা নাছোড় লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে।

এই ঘটনায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল (Medical College) কলেজ কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ স্যালাইন সরিয়ে ফেলেছে, তবে প্রশ্ন উঠছে—কীভাবে নিষেধ সত্ত্বেও এই স্যালাইন মেডিক্যাল কলেজ থেকে জেলা হাসপাতালে ঢুকল? এটি একটি বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং এই ঘটনা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন।

   

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের পক্ষ থেকে স্যালাইনসহ আরও সাতটি ওষুধের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নিষিদ্ধ স্যালাইনের পাশাপাশি, স্ক্যানারে অক্সিটোসিন ও অন্যান্য ওষুধের ব্যবহারও বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাতটি নির্দিষ্ট ওষুধের নির্দিষ্ট কিছু ব্যাচে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এসব ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে Ranitidine (অ্যাসিডিটি কমানোর ওষুধ), Ceftriaxone (অ্যান্টিবায়োটিক), Ondansetron (বমি ভাব কমানোর ওষুধ), Fentanyl Citrate (ব্যথা কমানোর ওষুধ), এবং Oxytocin (প্রসবের গতি বাড়ানো ও প্রসবের পর রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে ব্যবহৃত)।

এছাড়া, পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের মজুত লিঙ্গার ল্যাকটেটের ব্যবহারও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বিশেষজ্ঞদের পরিদর্শনের পর, যাদের মতে, প্রসূতির মৃত্যু ও অন্যান্য অসুস্থতা সৃষ্টির জন্য দায়ী হতে পারে এই স্যালাইন বা অন্য কোনো ওষুধের ব্যবহার। রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল প্রाधिकরণ ইতিমধ্যে সমস্ত চিকিৎসা স্যাম্পল সংগ্রহ করেছে এবং বিষয়টির তদন্ত চলছে। তবে এখনও বিশেষজ্ঞ দল নিশ্চিত হতে পারেনি যে, এই ঘটনা শুধুমাত্র লিঙ্গার ল্যাকটেটের কারণে ঘটেছে কিনা, তাই সাতটি ওষুধের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর, চিকিৎসকদের মধ্যে একাংশ স্বাস্থ্য দফতরের গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন। চিকিৎসক শ্বারদত মুখোপাধ্যায় বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের চূড়ান্ত গাফিলতি ও দুর্নীতির মাসুল দিচ্ছেন প্রসূতি। কোথাও এরকম নজির মেলেনি, যেখানে ব্যান্ড স্যালাইন ব্যবহার করা হয়।” এর মানে, চিকিৎসকরা মনে করছেন যে, স্যালাইন এবং অন্যান্য ওষুধের ভুল ব্যবহার, নিয়মিত তদারকি না করা এবং যথাযথ বিধিনিষেধ না মানার কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।

মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে, তবে এই ঘটনায় পুরো স্বাস্থ্য দফতরের প্রতি জনমানসে ক্ষোভ এবং আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এখন এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করার কথা বলছেন, যাতে ভবিষ্যতে এমন বিভ্রাটের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।