কলকাতা: ফের গণধর্ষণের (Gangrape) ঘটনায় সংবাদ শিরোনামে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ। আর জি করের পর এবার দুর্গাপুরের (Durgapur) একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে ওড়িশা থেকে আগত চিকিৎসক পড়ুয়ার গণধর্ষণ-কান্ডে তোলপাড় রাজ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত ৮.৩০ নাগাদ বান্ধবীর সঙ্গে রাতের খাবার খেতে বেরিয়েছিলেন দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী।
রাত ১০ টা নাগাদ ৩ জন অপরিচিত ব্যক্তি এসে তাঁদেরকে ঘিরে ধরে। নির্যাতিতাকে ফেলে পালান তাঁর বান্ধবী। এরপর মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রীকে টেনে হিঁচড়ে বাইরের একটি জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ (Gangrape) করা হয় বলে অভিযোগ। সকালে ফোন পেয়েই ওড়িশার জ্বালেশ্বর থেকে দুর্গাপুরে ছুটে যান নির্যাতিতার মা-বাবা। তাঁরা জানিয়েছেন, মেয়ের বন্ধুর ফোন পেয়েই তাঁরা দুর্গাপুরে ছুটে আসেন।
নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগ, শুক্রবার রাত ১০ টা নাগাদ তাঁর মেয়েকে গণধর্ষণ করা হয়। নির্যাতিতার বাবা বলেন, “এই মেডিক্যাল কলেজের সুনাম শুনেই আমরা মেয়েকে ওড়িশা থেকে এখানে পড়তে পাঠিয়েছিলাম। আজ সকালেই আমরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছি”। পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “নির্যাতিতার বাবা-মায়ের বয়ানের ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এখনও অভিযুক্তদের শনাক্ত করা যায়নি। নির্যাতিতা বর্তমানে একটি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন”।
পাশাপাশি, পুলিশ আধিকারিক বলেন, “শুক্রবার রাতে তিনজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি ঘিরে ধরলে নির্যাতিতাকে একা ফেলে পালান তাঁর বান্ধবী। অভিযুক্তরা ডাক্তারি পড়ুয়ার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং ঘটনা কাউকে না জানানোর হুমকি দেওয়া হয়। মোবাইল ফেরত চাইলে টাকা দিতে হবে বলেও দাবী করে অভিযুক্তেরা”। পুলিশ আধিকারিক আরও জানান, হাসপাতাল চত্বর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং নমুনা সংগ্রহে ফরেন্সিক দল পাঠানো হবে বলেও জানায় পুলিশ।
নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে NCW-র প্রতিনিধি দল
খবর পেয়েই নির্যাতিতা এবং তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতে দুর্গাপুর পৌঁছয় জাতীয় মহিলা কমিশনের (NCW) একটি প্রতিনিধি দল। দলের এক সদস্য অর্চনা মজুমদার বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুর্ভাগ্যক্রমে, এই ধরণের ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। অপরাধীদের পাকরাও করতে এবং তাঁদের উপজুক্ত শাস্তি দিতে আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পদক্ষেপ দাবী করছি”।
অন্যদিকে, শনিবার দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগ। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমরা এই বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে দ্রুত রিপোর্ট চেয়েছি। সেই অনুযায়ী, আমরা পদক্ষেপ নেব।”