মালদা: রাজনীতির ময়দানে আবারও বড় মোড় ঘোরাতে চলেছেন মৌসম বেনজির নুর (Mausam Noor)? মালদার রাজনীতিতে এখন ঘুরছে এই প্রশ্নটাই। এক সময়ের কংগ্রেস নেত্রী, পরে তৃণমূলে যোগ দিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ হওয়া মৌসম এবার কি আবার কংগ্রেসে ফিরবেন? জল্পনার কেন্দ্রে এখন তিনিই।
২০০৯ সালে কংগ্রেসের টিকিটে মালদা উত্তর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে সংসদে পা রাখেন মৌসম (Mausam Noor)। পরপর দুই দফায় লোকসভা সদস্য থাকেন তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালে বড় চমক দিয়ে যোগ দেন তৃণমূলে। জেলার সভানেত্রীর দায়িত্ব পান। তাঁর নেতৃত্বেই মালদায় বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম সাফল্য পায় তৃণমূল।
তবে তৃণমূলের হয়ে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে পরাজয়ের মুখ দেখতে হয় তাঁকে। বিজেপির খগেন মুর্মুর কাছে হারেন তিনি। এরপর আর তৃণমূল তাঁকে লোকসভার প্রার্থী হিসেবে ভাবেনি। রাজ্যসভার সদস্য করা হয় তাঁকে ২০২০ সালে। সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী মার্চে। তার আগেই শুরু হয়েছে নতুন চর্চা— মৌসম (Mausam Noor) কি ফিরবেন তাঁর পুরনো ঘরে?
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, রাজ্যসভার সদস্যপদ চলে গেলে তৃণমূলে মৌসমের (Mausam Noor) সক্রিয় ভূমিকায় থাকার আর সুযোগ থাকবে না। জেলা সভানেত্রীর পদও বহু আগেই খুইয়েছেন তিনি। ফলে দলীয় পরিসরে তাঁর গুরুত্বও অনেকটা কমে গেছে। এমন অবস্থায় তাঁর নিজস্ব রাজনৈতিক পরিচিতি ও শক্তিকে ধরে রাখতে তিনি ফের কংগ্রেসে ফিরতে পারেন বলে ধারণা।
জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে মালদা উত্তর কেন্দ্রে বেশ সক্রিয় হয়েছেন মৌসম (Mausam Noor)। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, এইসব পদক্ষেপ আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে নিজের জনভিত্তিকে আবার তৈরি করার ইঙ্গিত।
অন্যদিকে, কংগ্রেসের মালদা জেলা সভাপতি ও একমাত্র কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান চৌধুরির সুরও অনেকটাই ইঙ্গিতপূর্ণ। তিনি জানিয়েছেন, “যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরতে চান, তাঁদের জন্য দরজা খোলা। আমরা সবসময় ভালো মানুষদের দলে স্বাগত জানাই।”
অবশ্য, মৌসম এখনই খোলাখুলি কিছু বলছেন না। তাঁর কথায়, “দল (তৃণমূল) আমাকে রাজ্যসভার সাংসদ করেছে। আমি যে দায়িত্ব পেয়েছি, সেটা মন থেকে পালন করেছি। ভবিষ্যতে দল যা দেবে, তাও পালন করব। এখনো কিছু জানানো হয়নি, দল চিন্তা করছে নিশ্চয়ই।”
তবে রাজনৈতিক ভাষ্যে মৌসম যতই সংযত থাকুন, মালদার রাজনীতির মাটিতে এখন নতুন সমীকরণের সুর। ইশা-মৌসমের (Mausam Noor) সম্পর্ক, একই ভবনে বসবাস, ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ—সব মিলিয়ে আগামী বিধানসভা ভোটের আগে মালদার জমি যে আরও গরম হতে চলেছে, তা বলাই যায়।
নজর এখন মার্চ মাসে। মৌসমের পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ কোন দিকে মোড় নেয়, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।