নতুন জিএসটি হারে রাজ্যের রাজস্ব আয় বিপুলভাবে কমবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) । সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, কেন্দ্রের নতুন করনীতির ফলে আগামী অর্থবছরে রাজ্যের অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব লোকসান হবে। তবু সাধারণ মানুষের সুরাহার স্বার্থে রাজ্য সরকার নতুন নিয়ম মানতে রাজি হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার একদিকে জিএসটি থেকে রাজ্যের অংশীদারি সময়মতো দিচ্ছে না, অন্যদিকে বিভিন্ন প্রকল্পের অনুদানও বন্ধ করে রেখেছে। “রাস্তার টাকা দেয়নি, আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে, জলস্বপ্ন, সর্বশিক্ষা অভিযান—সব জায়গাতেই অর্থ বন্ধ। আমাদের পাওনা রয়েছে ১ লক্ষ ৯২ হাজার কোটি টাকা। তার উপর নতুন এই জিএসটি হারে আরও ২০ হাজার কোটি টাকার লোকসান হবে। কিন্তু মানুষের স্বার্থে আমরা সব মেনে নিই,” বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, রাজ্য সরকার দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রের কাছে বকেয়া অর্থ চেয়ে যাচ্ছে। একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে, বৈঠক হয়েছে, কিন্তু তবু পাওনা অর্থ মেলেনি। ফলে প্রকল্পগুলির অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষত আবাসন, গ্রামীণ রাস্তা এবং শিক্ষা ও জল সরবরাহের মতো মৌলিক পরিষেবা খাতে কেন্দ্রীয় অর্থ না আসায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রাজ্যকে। তবু সাধারণ মানুষের স্বার্থে রাজ্য সরকার বিকল্প উৎস থেকে অর্থ জোগাড় করে প্রকল্পগুলি চালিয়ে যাচ্ছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা জনগণের পাশে আছি বলেই এই ক্ষতি স্বীকার করছি। করের বোঝা সাধারণ মানুষের উপর না চাপিয়ে রাজ্য সরকার নিজে ক্ষতির দায় নিচ্ছে। এটাই আমাদের রাজনৈতিক দর্শন।” তাঁর দাবি, রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপে ছোট ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগী এবং নিম্ন-মধ্যবিত্তের উপর আর্থিক চাপ কিছুটা কমবে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের জিএসটি নীতি রাজ্যগুলির আর্থিক স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করছে। “আমরা এক সময় বলেছিলাম, জিএসটি চালু হলে রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক ক্ষমতা কমে যাবে। আজ সেই ভয় সত্যি হচ্ছে। রাজ্যগুলিকে ধীরে ধীরে কেন্দ্রের দয়ার উপর নির্ভরশীল করে দেওয়া হচ্ছে,” বলেন তিনি।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
