বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার আত্মমর্যাদা আর ইতিহাসকে ভুলে যাওয়ার নাম বিজেপি: মমতা

বোলপুর: “বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার আত্মমর্যাদা আর ইতিহাসকে ভুলে যাওয়ার নাম বিজেপি। আজ যারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কথা বলেন না, তাঁরা কী করে বাংলার…

Mamata Banerjee hindi s[eech controversy

বোলপুর: “বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার আত্মমর্যাদা আর ইতিহাসকে ভুলে যাওয়ার নাম বিজেপি। আজ যারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কথা বলেন না, তাঁরা কী করে বাংলার মানুষের মুখোমুখি হন?” —সোমবার বোলপুরে ভাষা আন্দোলনের পদযাত্রা শেষে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

ভাষা সন্ত্রাস, বাংলাভাষীদের হেনস্তা ও অপমানের বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ভাষা-আন্দোলন কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে এদিন বোলপুরে পদযাত্রার আয়োজন হয়। সেই পদযাত্রার শেষ সভা থেকেই বিজেপিকে একহাত নেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

   

তিনি বলেন, “আমাদের পথ দেখিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, স্বামী বিবেকানন্দ, ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। এই বাংলার ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। এই বাংলাই স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে। আজ যারা এই মাটিকে অস্বীকার করছেন, তাঁরা আসলে ভারতের ইতিহাসকেই অস্বীকার করছেন।”

মমতা অভিযোগ করেন, “যেখানে বাংলা ভাষার অপমান হয়, যেখানে বাংলা মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা কেড়ে নেওয়া হয়, সেখানে বিজেপি চুপ করে থাকে। আর এখন বাংলায় এসেই ভোটের আগে নাটক করছে। আমরা সেই নাটক সহ্য করব না।”

সভামঞ্চ থেকে বাংলার সাংস্কৃতিক গৌরব ও ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলা কারও দয়া চাই না। বাংলা মাথা উঁচু করে নিজের পথ চলতে জানে। দিল্লি থেকে কেউ আমাদের শিখিয়ে দেবে না কীভাবে কথা বলতে হয়, কীভাবে চলতে হয়।”

Advertisements

এই ভাষণ ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশেষ করে বাংলার সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং জাতীয়তাবাদের সঙ্গে যাঁরা সংযুক্ত, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে সমর্থন করেছেন। তবে বিজেপির তরফে পাল্টা বক্তব্যে বলা হয়েছে, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন ভোটের কথা ভেবে ভাষা-জাতি-সংস্কৃতির নাটক করছেন। এই সমস্ত চালাকিতে বাংলার মানুষ আর ভুলবে না।”

উল্লেখ্য, বিগত কয়েক মাস ধরে বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের উপর ভিনরাজ্যে হেনস্তা ও কর্মসংস্থান-শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাভাষীদের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগে তৃণমূল ভাষা আন্দোলন শুরু করেছে। বোলপুরের মতো শান্তিনিকেতন ঘেঁষা সাংস্কৃতিক স্থানে দাঁড়িয়ে তাই রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল।

তাঁর কণ্ঠে আজ ছিল সংবেদন, ছিল প্রতিবাদ, আবার ছিল বাংলার সম্মানের ডাক—“যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, রাখিব বাঙালির মান।”