ঝাড়গ্রাম: বাংলা ভাষাকে ঘিরে ফের উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। ‘বাংলা কোনও ভাষাই নয়’, বিজেপি নেতা অমিত মালব্যের এই মন্তব্যে কার্যত বিস্ফোরণ ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পরিকল্পিতভাবে বাংলা ভাষা ও বাংলা ভাষাভাষীদের অসম্মান করছে। ঝাড়গ্রামের সভা থেকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে বিজেপিকে মনে করালেন ১৯১২ সালের দশ টাকার নোটের কথা, যেখানে বাংলা ভাষায় লেখা হত (mamata banerjee slams bjp)।
সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে মোবাইল তুলে সেই নোটের ছবির প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার মোবাইলে ১৯১২ সালের ১০ টাকার নোটের ছবি আছে, যেখানে স্পষ্ট বাংলা লেখা রয়েছে। আর এই অপদার্থরা ২০২৫ সালে এসে বলে বাংলা কোনও ভাষা নয়? তাহলে জাতীয় সঙ্গীত কোন ভাষায় লেখা? রবীন্দ্রনাথ, রাজা রামমোহন রায়, স্বামী বিবেকানন্দ, তাঁরা কি অন্য ভাষায় কথা বলতেন?”
‘বাংলায় কথা বললেই রোহিঙ্গা?’ সরাসরি অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর
শুধু ভাষা নয়, মমতার অভিযোগ, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলা ভাষাভাষী মানুষ আজ চরম নিপীড়নের শিকার। এদিন ঝাড়গ্রামের সভা থেকে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “বাংলা ভাষায় কথা বললেই আজ রোহিঙ্গা বলে গালি দিচ্ছে। প্রায় ২ হাজার বাঙালির উপর বাইরের রাজ্যে অত্যাচার চলছে। আর ভোটের সময় এলে বলে, টাকা নাও, ভোট দাও। এই অপমান আমরা কিছুতেই মানব না।”
বিজেপির বিরুদ্ধে ভাষা-রাজনীতির অভিযোগ, তৃণমূলের প্রতিবাদে শান
বিগত কয়েক মাস ধরেই তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি একটি সুপরিকল্পিত ভাষা-রাজনীতির মাধ্যমে বাংলাকে কোণঠাসা করতে চাইছে। অমিত মালব্যের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সেই অভিযোগ আরও জোরদার হল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কেবল প্রতিবাদ করেই থেমে থাকেননি, মিছিল থেকে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাকও দিয়েছেন।
পটভূমি: বিতর্কের কেন্দ্র অমিত মালব্যের মন্তব্য
সম্প্রতি বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য একটি আলোচনায় মন্তব্য করেন, “বাংলা আদতে কোনও স্বতন্ত্র ভাষা নয়।” তাঁর এই উক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই রাজনৈতিক শোরগোল চরমে ওঠে। বাঙালি আত্মপরিচয়ের প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতিক্রিয়া তাই শুধুই একটি সভার বক্তব্য নয়, বরং একটি বড় রাজনৈতিক বার্তাও বটে।