পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee) রবিবার রাম নবমীর শুভ উপলক্ষে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং উন্নয়নের মূল্যবোধ বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
Greetings to all on the auspicious occasion of Ram Navami.
I appeal to all to maintain and uphold the values of peace, prosperity and development of all.
I wish the celebration of the Ram Navami all success, in a peaceful manner.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) April 6, 2025
এই বিশেষ দিনে তিনি সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ তাঁর (mamata banerjee) শুভেচ্ছা বার্তা পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, “রাম নবমীর শুভ উপলক্ষে সকলকে আমার শুভেচ্ছা। আমি সকলের কাছে আবেদন জানাই শান্তি, সমৃদ্ধি এবং সকলের উন্নয়নের মূল্যবোধ বজায় রাখতে ও তুলে ধরতে। আমি চাই রাম নবমীর উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সফল হোক।”
আজ রাম নবমী উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশ উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছে। এই দিনে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে উৎসব পালিত হচ্ছে। তবে, এর আগে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতারা অভিযোগ করেছিলেন যে রাজ্যের প্রশাসন তাদের শোভাযাত্রার অনুমতি দিতে অস্বীকার করেছে। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্ট হাওড়ায় শান্তিপূর্ণ উৎসব পালন নিশ্চিত করতে একটি আদেশ জারি করেছে।
দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন
বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, “বাংলায় কোনও অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আমাদের আদালতের অনুমতি নিতে হয়। রাজ্য সরকার এবং পুলিশ আমাদের অনুমতি দেয় না। রাম নবমীর শোভাযাত্রা হিন্দু সম্প্রদায়ের রীতি অনুসারে অনুষ্ঠিত হবে।” হাওড়ায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বিপুল সংখ্যক ভক্ত মন্দিরে ভিড় করেছেন। এছাড়াও দিলীপ ঘোষ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন রামনবমীর মিছিল হবে অস্ত্র নিয়ে কারণ বাংলার প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে অক্ষম।
রবিতেই মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে সোনার দাম! কলকাতায় কত হল জানেন
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও অভিযোগ করেছেন
এদিকে, শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও অভিযোগ করেছেন যে তাদের শোভাযাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ছাত্র সোমসূর্য বন্দ্যোপাধ্যায় এএনআই-কে জানিয়েছেন, গত ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রদের পক্ষ থেকে রাম নবমী উৎসব পালনের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক অনুরোধপত্র জমা দেওয়া হয়েছিল। তিনি দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের একটি লিখিত জবাব দেওয়া হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে উপাচার্যের অনুপস্থিতির কারণে এই অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “২৮ মার্চ আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চিঠি জমা দিয়েছিলাম।
আজ আমরা একটি স্বাক্ষরিত চিঠি পেয়েছি, যাতে বলা হয়েছে উপাচার্য না থাকায় অনুমতি দেওয়া যাবে না।”
তবে, এই বিতর্কের মধ্যেও কলকাতার রাস্তাঘাট এবং হাওড়ার বাজারগুলি উৎসবের জন্য সেজে উঠেছে। রাম নবমী উপলক্ষে পতাকা এবং পোস্টারে ঢেকে গেছে রাস্তাঘাট। হাওড়ায় ভক্তদের উৎসাহ উপচে পড়ছে। মন্দিরে ভিড় বাড়ছে, এবং নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রাম নবমী বাংলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই দিনে ভগবান রামের জন্মদিন পালিত হয়। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে শোভাযাত্রা, পূজা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে এই বছর রাজনৈতিক বিতর্কও সামনে এসেছে। বিজেপি নেতারা বারবার অভিযোগ করেছেন যে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, সরকারের তরফে বলা হয়েছে, শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখাই তাদের প্রধান লক্ষ্য।
কলকাতা হাইকোর্টের আদেশ
কলকাতা হাইকোর্টের আদেশের পর হাওড়ায় শান্তিপূর্ণ উৎসব পালনের জন্য প্রশাসন বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় কর্তৃপক্ষও সতর্ক রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভক্তরা যাতে নির্বিঘ্নে উৎসব উপভোগ করতে পারেন, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।
এদিকে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, ধর্মীয় উৎসব পালনের স্বাধীনতা থাকা উচিত। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও এই বিষয়ে বিস্তারিত কোনও মন্তব্য করেনি। রাম নবমীর এই উৎসব বাংলায় শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিক, এমনটাই প্রত্যাশা সকলের। মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তার মাধ্যমে এই আহ্বান আরও জোরালো হয়েছে।