বাংলায় লজ্জার হার বিজেপির একঝাঁক হেভিওয়েট প্রার্থীর

দিলীপ ঘোষ, নিশীথ প্রামানিক, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অমৃতা রায়…এ তালিকা (Lok Sabha Election) সহজে শেষ হওয়ার নয়। এবারের লোকসভা নির্বাচনে হারলেন গেরুয়া শিবিরের একঝাঁক হেভিওয়েট প্রার্থী।…

Photograph of Narendra Modi, Prime Minister of India

দিলীপ ঘোষ, নিশীথ প্রামানিক, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অমৃতা রায়…এ তালিকা (Lok Sabha Election) সহজে শেষ হওয়ার নয়। এবারের লোকসভা নির্বাচনে হারলেন গেরুয়া শিবিরের একঝাঁক হেভিওয়েট প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন অল্প কয়েক হাজার ভোটে হারলেও বেশিরভাগই বিরাট মার্জিনে পর্যদস্তু হয়েছেন।

সবার প্রথমেই বলতে হয় নিশীথ প্রামানিকের কথা। কোচবিহারের বিদায়ী সাংসদ নিশীথ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও বটে। কিন্তু তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার কাছে প্রায় ৪০ হাজার ভোটে হেরেছেন তিনি। মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষকে এবার বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে টিকিট দিয়েছিল গেরুয়া শিবির।

   

দাপুটে নেতা দিলীপ ওই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের কাছে ১ লক্ষ ৩৭ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাজিত হয়েছেন। ভোটে হেরেই দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিজেপি প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। এরপর বলতে হয় কৃষ্ণনগরের হেভিওয়েট বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়ের কথা।

মিনমিনে গলায় শুভেন্দুর মুখে বাংলায় বিজেপির ভরাডুবির ‘আজব’ তত্ত্ব

মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের পরিবারের সদস্য অমৃতাকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীই দলে এনে টিকিটের জন্য উচ্চ নেতৃত্বের কাছে সুপারিশ করেন। বলে রাখা ভালো, এই কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে এক নয়, দু’বার সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টার্গেট একটাই, তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রকে হারানো।

কিন্তু হারানো তো দূর, মহুয়া ঝড়ে উড়ে গিয়েছেন অমৃতা রায়। তৃণমূলের ‘বহিষ্কৃত’ সাংসদ মহুয়া ৫৬ হাজারেরও বেশি ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থীকে। নির্বাচনে লড়ার টিকিট না পেয়ে তৃণমূল ছাড়েন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। ‘দলবদলু’ অর্জুন সিংকেও টিকিট দিয়েছিল বিজেপি।

PM Modi: হাওয়া মোদীর ক্যারিশ্মা, শেষমেষ মুখ খুললেন নরেন্দ্র

সেই অর্জুন ডুবিয়েছেন বিজেপিকে। তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিকের কাছে ৬৪ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাজিত হয়েছেন অর্জুন। হুগলির বিদায়ী সাংসদ লকেট চটোপাধ্যায়কে এবারও টিকিট দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু এবার আর ‘লকেট’ পরতে চাইল না হুগলিবাসী। দিদি নম্বর ১ রচনাতেই ভরসাতেই রেখেছেন তাঁরা।

এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী রাজনীতিতে নবাগতা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় লকেটকে হারিয়েছেন ৭৬ হাজার ৮৫৩ ভোটে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে দল ছেড়েছিলেন বরানগরের প্রাক্তন বিধায়ক তাপস রায়। সেই তাপসকে উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। এর পিছনেও ছিল শুভেন্দুর হাত!

নিখোঁজ শুভেন্দু! গণনার দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখা মিলল না বিরোধী দলনেতার

উত্তর কলকাতায় অবশ্য পদ্ম ফোটাতে ব্যর্থ হয়েছেন তাপস রায়। তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ৯২ হাজার ভোটে হারিয়েছেন তাপসকে। তাপসের ছেড়ে আসা বরানগর আসনে উপনির্বাচন হয়েছিল লোকসভা ভোটের সঙ্গে। বিজেপি প্রার্থী সজল ঘোষ কিছুটা লড়াই দিলেও এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ঘাটালেও বিজেপির তরী ডুবিয়ে ছেড়েছেন খড়গপুরের বিধায়ক তথা গেরুয়া প্রার্থী হিরণ। তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ দেবের কাছে ১ লক্ষ ৮২ হাজারেরও বেশি হেরে গিয়েছেন হিরণ। মেদিনীপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালকে ২৭ হাজার ১৯১ ভোটে হারিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া।

দল বদলেও ‘মুকুট’ পরা হল না মুকুটমণির