শ্রীলংকা, বাংলাদেশের পর এবার বিশ্ববাসীর নজর নেপালে। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা ঠান্ডা লড়াই আজ নিয়েছে ধ্বংসের রূপ (Left Front Dominance)। সম্প্রতি নেপাল সরকার সিদ্ধান্ত নেয় সমাজ মাধ্যমকে নিষিদ্ধ করার। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম থেকে ইউটিউব সমস্ত প্ল্যাটফর্মেই তালা লাগিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফাঁপরে পড়েছেন চরম কমিউনিস্ট মনোভাবাপন্ন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি।
আর এই সিদ্ধান্তেই জেন জিরা শুরু করেছে প্রতিবাদ, জ্বলছে আগুন। ইতিমধ্যেই দেশ ছেড়ে পালানোর কথা ভেবেছেন প্রধানমন্ত্রী সহ আরও কয়েকজন মন্ত্রী। সোশ্যাল মিডিয়া, আজকের দিনে এমন এক মাধ্যম যা হয়ে উঠেছে মানুষের নিত্যসঙ্গী। সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রিটি প্রত্যেকেই সারা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন এই মাধ্যমের সাহায্যে।
নেপালের মত একটি উন্নতিকামী দেশে সেই সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করে দেওয়া যে বিপজ্জনক হতে পারে তা কমিউনিস্ট ভাবধারায় পুষ্ট রাজনীতিবিদদের মনে রাখা উচিত ছিল। মনে রাখা উচিত ছিল বিশ্ব আজ অনেক এগিয়ে গেছে।
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জায়গা করে নিচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে। সেই যুগে দাঁড়িয়ে অত্যন্ত অর্বাচীনের মত একটি মান্ধাতা আমলের সিদ্ধান্ত যে সারা দেশে আগুন জ্বালাবে এবং সেই আগুন যে ছড়িয়ে পড়বে ওলির ঘরেও তা হয়তো বোঝা উচিৎ ছিল এই বামপন্থীদের।
আজ নেপালের এই ঘটনা দেখে হঠাৎ ই মনে পড়ল বাংলার কমিউনিস্ট শাসনের ৩৪ টা বছর। এই ৩৪ বছর যে বা যারা প্রজন্ম প্রতক্ষ করেছেন তাদের মনে থাকা উচিত বামপন্থী বা কমিউনিস্ট মনোভাবের প্রভাব কতটা ক্ষতিকর হতে পারে। প্রথমে আসি শিক্ষা ক্ষেত্রে। তখন মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় জ্যোতি বসু। হঠাৎ তার ইচ্ছে হল প্রাইমারী পাঠক্রম থেকে ইংরেজি তুলে দেবেন। যে কথা সেই কাজ।
কারণ তৎকালীন সময়ে ক্ষমতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের পার্থক্য গুলিয়ে ফেলেছে তথাকথিত মার্কসবাদীরা। এরপরে এল আরেক দুঃসময় যখন বাম সরকার সিদ্ধান্ত নিল নতুন প্রজন্মের হাতে কম্পিউটার নামক প্রযুক্তি তুলে দেওয়া যাবে না। সিদ্ধান্তের পিছনে আবার সেই মাননীয় বসু। নতুন প্রযুক্তি নিষিদ্ধ করার পিছনে দিলেন অকাট্য যুক্তি, কি না নয়া প্রযুক্তি বাংলায় এলে কাজ খোয়াবেন বহু কর্মচারী।
কারণ কম্পিউটার দিয়ে অনেকজনের কাজ এক জন ই করে নেবে। সুতরাং শিক্ষা হোক বা নতুন প্রযুক্তি এ সবকিছুর বিরোধিতা করাই বামেদের চরিত্র। তা তারা বুঝিয়ে দিয়ে গেছে তাদের কাজের মাধ্যমে। আজ নেপালের অবস্থা দেখে সবাই হয়তো আহা উহু করতে পারেন। অনেকে হয়তো অবাক হবেন যে নতুন প্রজন্মের এত ক্ষমতা যে সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করেছে বলে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।
ভারতকে ব্রোঞ্জ জিতিয়ে নেটমাধ্যমে কী লিখলেন গুরপ্রীত?
কিন্তু এটাও ঠিক যদি বাংলায় এই সিদ্ধান্তগুলোর বিরুদ্ধে সেদিন এই ধরণের আন্দোলন হত তাহলে হয়ত রাজ্যের কিছু মেধাকে রাজ্য বা দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিতে হতনা। হয়তো অনেক আগেই নতুন প্রজন্ম শিখত প্রযুক্তির ব্যবহার। হয়তো অনেক আগেই এই তথাকথিত মার্কসবাদীরা দেশ ছেড়ে বিদায় নিতে বাধ্য হত এবং দেশের বাইরে যেতে যেতে ভাবত শূন্য কেন শুধুই শূন্য।