কলকাতা: আর হাতে গোনা ক’টা দিন। তারপরেই আলোর উৎসব দীপাবলিতে (Diwali) মেতে উঠবেন আপামোর ভারতবাসী। তবে দীপাবলির দীপ যাতা নিজের হাতে গড়ে থাকেন, তাঁদের ঘরে আলো জ্বলবে কিনা, ঠিক নেই। বিগত দুই দশকে বিশ্বজুড়ে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে ভারতীয় আচার, অনুষ্ঠান, উৎসবেও।
আগে যেখানে দীপাবলি বা কালিপুজোয় বাংলার ঘরে ঘরে তেল বা ঘি-এ জ্বলে উঠত মাটির প্রদীপ, বর্তমানে তা প্রায় বিলুপ্তির পথে। মাটির প্রদীপের জায়গা নিয়েছে বৈদ্যুতিক টুনি বাল্ব এমনকি প্লাস্টিকের জল দিলেই জ্বলে ওঠা প্রদীপ। দীপাবলির আগে প্রদীপ বানানো মৃৎশিল্পীদের কিছু বাড়তি রোজগার এখন প্রায় নেই বললেই চলে।
তাই আলোর উৎসবে মানুষকে মাটির প্রদীপ কেনার অনুরোধ জানাচ্ছেন তাঁরা। কলকাতার উল্টোডাঙার দক্ষিণদাঁড়ি এলাকার এক মৃৎশিল্পী ফি-বছর বাহারি রকমের মাটির প্রদীপ বানিয়ে থাকেন। রং-বেরঙের এক মুখী প্রদীপের পাশাপাশি তাঁর হাতের শৈলীতে তৈরি হয় বাহারি রকম আকারের মাটির প্রদীপ (Clay Diyas)।
কিন্তু এই বছর তুমুল বৃষ্টির কারণে মাথায় হাত পড়েছে মৃৎশিল্পী মদন প্রজাপতির। একে মাটির প্রদীপের বাজার মন্দা। তার উপর বৃষ্টির জেরে অন্যান্যবারের তুলনায় অনেকটাই কম সংখ্যক প্রদীপ বানিয়েছেন তিনি। মদন বাবু বলেন, “এই বছর আমরা ৫০,০০০ এর মত মাটির প্রদীপ বানিয়েছি। বৃষ্টির জন্যই দীপাবলির আগে যথেষ্ট পরিমাণে প্রদীপ বানানো সম্ভব হল না”।
প্রধানমন্ত্রীর ‘দেশীয় পণ্য’ বেচাকানার অংশ হতে চান মৃৎশিল্পীরা
প্রসঙ্গত, এবছর ট্রাম্পের শুল্ক-ত্রাসের পর স্বদেশীকতার পালে হাওয়া দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বদেশী পণ্য বেচা-কেনায় উদ্বুদ্ধ করেছেন তিনি। দক্ষিণদাঁড়ির মৃৎশিল্পী। মদন বাবু বলেন, “এবছর কেন্দ্র সরকারের স্বদেশী পণ্য ব্যবহারের আহ্বানের পর অনেকেই মাটির প্রদীপ কেনার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। আমিও সকলকে দীপাবলিতে মাটির প্রদীপ জ্বালানোর অনুরোধ করব”।
অন্যদিকে, মাটির প্রদীপ কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, “আমাদের যতটা সম্ভব পরিবেশ-বান্ধব পদ্ধতিতে দীপাবলি উদযাপন করা উচিৎ। মৃৎশিল্পীদের জন্য দীপাবলি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য একটি উৎসব। ওনারা দীপাবলির অনেক আগে থেকেই মাটির প্রদীপ বানানো শুরু করে থাকেন। দিনরাত জেগে ওনারা কাজ করেন। আমাদের উচিৎ ওনাদের পাশে দাঁড়ানো। আমি আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধবদেরকেও মাটির প্রদীপ কিনতে বলি”।