‘অযোগ্য’ শিক্ষকরা পাবেন বিকল্প চাকরির সুযোগ, ঘোষণা মমতার

Mamata warnes BJP

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের মাঝে ‘অযোগ্য’ ঘোষিত চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার। ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ প্যানেল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল হওয়ার পর, আদালতের নির্দেশে সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) প্রকাশ করেছে ‘যোগ্য’ ও ‘অযোগ্য’ চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা। সেই তালিকায় মোট ১,৮০৬ জন প্রার্থীকে ‘অযোগ্য’ বা ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের চাকরি খারিজ হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) আশ্বাস দিয়েছেন, রাজ্য সরকার মানবিক অবস্থান নিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়াবে এবং প্রয়োজনে আইনি পরামর্শ নিয়ে গ্রুপ সি পদে নিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

Advertisements

গত বৃহস্পতিবার কলকাতার ‘ধনধান্য’ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে অনেক শিক্ষক এতদিন স্কুলে পড়ানোর পরও আদালতের নির্দেশে ‘অযোগ্য’ বলে প্রতিপন্ন হয়েছেন। তবে তাঁদের চিন্তা করার কিছু নেই। আমাদের সরকার তাঁদের জন্য আইনি পরামর্শ নিচ্ছে। শিক্ষক হিসেবে না হলেও, গ্রুপ সি পদে চাকরির সুযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”

   

তিনি আরও জানান, আগামী ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষক নিয়োগের নতুন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সেই পরীক্ষার পর গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদের জন্যও পরীক্ষা নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “যাঁরা এতদিন পড়াচ্ছিলেন অথচ অযোগ্য বলে প্রতিপন্ন হয়েছেন, তাঁদের ‘বেচারা’ ভাববেন না। রাজ্য সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে।”

উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ প্যানেলকে ‘প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি’র ফলাফল বলে রায় দেয়। আদালতের নির্দেশে স্পষ্ট করা হয়েছিল, প্রার্থীদের যোগ্যতা অনুযায়ী নতুন তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং কে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন তা নির্ধারণ করতে হবে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী ২৯ আগস্ট এসএসসি তালিকা প্রকাশ করে, যেখানে ১,৮০৬ জনকে অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এঁদের মধ্যে অনেকে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করছিলেন এবং শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। কিন্তু এই তালিকা প্রকাশের পর তাঁদের চাকরি খারিজ হয়।

Advertisements

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বার্তা স্পষ্ট—মানবিক কারণে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে জটিল পরিস্থিতিতে একটি নতুন দিশা দেখাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্তে চাকরিপ্রার্থীরা কিছুটা আশার আলো দেখলেও নতুন পরীক্ষার প্রক্রিয়া আরও কঠোর এবং স্বচ্ছ হবে বলে প্রশাসন নিশ্চিত করছে।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগের নতুন পরীক্ষার আয়োজন সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে করা হবে এবং আদালতের নির্দেশ মেনে প্রতিটি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। একইসঙ্গে ‘অযোগ্য’ ঘোষিতদের জন্য বিকল্প চাকরির সুযোগ সৃষ্টিতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। শিক্ষা দপ্তরের একটি অংশ মনে করছে, এই পদক্ষেপ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় স্থিতি আনবে এবং চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে নতুন আস্থা তৈরি করবে।