কলকাতা: লক্ষ্মীবারের সকালেই গৃহস্থদের মুখে চিন্তার ভাঁজ। কারণ, কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী জেলার সবজির বাজারে ফের দাম বেড়েছে এক ধাক্কায়। গত সপ্তাহে সামান্য স্বস্তি মিললেও, নভেম্বরের শুরুতেই সবজির ঝুড়ি আবারও ভারী হয়ে উঠেছে। বৃষ্টি এবং পরিবহন খরচ বৃদ্ধির ফলে সবজি পাইকারি বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়াই এর অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
আজ সকালে সিসু মার্কেট, কাঁদুয়াতে, শ্যামবাজার এবং গড়িয়াহাট বাজারে সবজির দামে ওঠানামা চোখে পড়েছে। বড় পেঁয়াজ (Onion Big) বিক্রি হচ্ছে ₹২৩–২৬ টাকা থেকে শুরু করে ₹৩৮ টাকা কিলো পর্যন্ত, ছোট পেঁয়াজ (Onion Small) ₹৪৭–৭৮ টাকা কেজি দরে। টমেটোও বাজারে আগুন প্রতি কেজি ₹২২–₹৩৬।
গোয়ায় লাল-হলুদের বড় পরীক্ষা! পাঞ্জাবকে হারিয়ে কি ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল?
কাঁচা লঙ্কার দাম এখনও সাধারণের নাগালের বাইরে। আজ পাইকারি বাজারে সবুজ লঙ্কা বিক্রি হচ্ছে ₹৪৬ থেকে ₹৭৬ প্রতি কেজি দরে। একইভাবে বিটরুট ₹৩৪–₹৫৬ টাকা কেজি, আলু ₹২৮–₹৪৬ টাকা কেজি এবং কাঁচা কলা ₹৯–₹১৫ প্রতি কেজি।
তুলনামূলকভাবে শাকসবজির দামেও দেখা যাচ্ছে ঊর্ধ্বগতি। পাটশাক, লাল শাক, পালং শাকসহ অন্যান্য শাকের দাম গড়ে ₹১৪ থেকে ₹২৩ প্রতি কেজি। ধনেপাতার দামও নাগালের বাইরে, কেজিপ্রতি ₹১৫ থেকে ₹২৫। কলমি শাক বা আমরান্থ লিভস এখন ₹১৪–₹২৩ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আশ্চর্যজনকভাবে, বাজারে কিছু সবজির দাম স্থিতিশীল থাকলেও অন্যদিকে কয়েকটি সবজিতে অতিরিক্ত চাপ দেখা যাচ্ছে। যেমন বেবি কর্ন ₹৪৯–₹৮১, ফুলকপি ₹৩২–₹৫৩, বাঁধাকপি ₹২৯–₹৪৮, ঢেঁড়স ₹৪১–₹৬৮ এবং উচ্ছে ₹৩৭–₹৬১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কুমড়ো ও লাউয়ের দামও গড়ে ₹৩৩ থেকে ₹৫৪ কেজি পর্যন্ত উঠেছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, সাম্প্রতিক বৃষ্টির প্রভাবে হুগলি, নদিয়া, বীরভূম এবং পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কিছু কৃষিক্ষেত্রের ফসল নষ্ট হয়েছে। তার ফলেই সরবরাহ কমে বাজারদরে আগুন লেগেছে। অন্যদিকে, পরিবহন খরচও বাড়ায় পাইকারি থেকে খুচরো দরে পার্থক্য আরও বেড়েছে।
তবে কিছু বাজারে এখনো কিছুটা স্বস্তির ইঙ্গিত মিলছে। যেমন পেঁপে ₹২০–₹২৫, শশা ₹২৮–₹৪৬, গাজর ₹৪৩–₹৭১ এবং টমেটো ₹২২–₹৩৬ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে উপস্থিত ক্রেতাদের কথায়, “এখন এক ব্যাগ সবজি কিনতেই যেন আধা মাইনে উড়ে যাচ্ছে!”
পাইকারি ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, আগামী সপ্তাহে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দামের কিছুটা পতন ঘটতে পারে। তবে আপাতত সাধারণ ক্রেতাদের পকেটে চাপ থেকেই যাচ্ছে।

