HomeWest BengalKolkata Cityজাতীয় নিরাপত্তায় কেন্দ্রের গোপন অভিযান ফাঁস করলেন তথাগত রায়!

জাতীয় নিরাপত্তায় কেন্দ্রের গোপন অভিযান ফাঁস করলেন তথাগত রায়!

- Advertisement -

সীমান্তে অভিযান। দেশ বাঁচাতে মগজের লড়াই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের গোপন অপারেশন। সেটাই ফাঁস করলেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায় (Tathagata Roy)। মঙ্গলবার তিনি ফেসবুকে লেখেন, “অনুগ্রহ করে পড়ুন। হতবাক হোন। রাগ হোন। আর জানি না কী বলব। চলুন এমন একটি সত্য গল্প বলি যা আপনাকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে দেবে — একসাথে গর্ব এবং লজ্জায় ভরে তুলবে।

জানুয়ারি ২০২৫। কলকাতা থেকে প্রায় ৫২ কিমি দূরে, ইছামতি নদী প্রবাহিত — যা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর চলে। কখনও এই নদী এতটা ফুলে ওঠে যে গোটা গ্রাম ধ্বংস করে দেয়, আবার কখনও ভাটার সময় এতটাই শুকিয়ে যায় যে এটি একটি সরু ড্রেনের মতো হয়ে পড়ে — যা হয়ে ওঠে চুপিসারে অনুপ্রবেশের সহজ রাস্তা।

   

এটা এক নীরব যুদ্ধের গল্প — যেখানে কোনও বন্দুক নেই। বছরের পর বছর, কিছু বাংলাদেশি নাগরিক এই নদী পার হয়ে নিঃশব্দে ভারতে প্রবেশ করেছে এবং জনস্রোতে মিশে গেছে।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, হাসনাবাদ (পশ্চিমবঙ্গ) থেকে একটি ফোনকল হঠাৎ ইন্টারসেপ্ট করে IB (গোয়েন্দা ব্যুরো)।
কলটি ছিল সাদামাটা — হাসনাবাদ থেকে এক ব্যক্তি কথা বলছিলেন সীমান্তের ওপারে সাতক্ষিরার এক লোকের সঙ্গে। কিন্তু সেই কথোপকথনে একটি রহস্যময় কোডলাইনে সন্দেহ জাগে:

“ছোটো নদী রাত ৩:৩০ চল কে পাঠাও।”

IB তিন দিন ধরে এই বার্তা বিশ্লেষণ করে। অবশেষে তারা কোড ভাঙে:
রাত ৩:৩০ টায় কিছু বাংলাদেশি ইছামতি নদী পেরিয়ে হাসনাবাদের দিক দিয়ে ভারতে ঢুকবে এবং বসিরহাটে মিশে যাবে।
IB এক সিদ্ধান্ত নেয় — তারা স্থানীয় BSF (সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী)-কে জানাবে না। কারণ গোটা এলাকা জুড়ে BSF-এর অনেক জওয়ান ঘুষ খেয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকতে দিচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল।
তাই IB একা নামল এই অপারেশনে।
নামহীন এক গোপন মিশন শুরু হয়। ফিল্ড ইউনিট আলফা-২৩ — মাত্র ৫ জন অফিসার এই দায়িত্বে।
একজন অফিসার র‍্যাগপিকার ছদ্মবেশে সাতক্ষিরা সীমান্তে চলে যান। সেখানে এক নির্জন স্থানে একটি কুঁড়েঘর তৈরি করেন। সঙ্গে এনেছিলেন NTRO-র ইনফ্রারেড সেন্সর। সেটি গোপনে বসিয়ে স্যাটেলাইটের সঙ্গে যুক্ত করেন, যাতে রিয়েলটাইমে তথ্য আলফা-২৩ দলে পাঠানো যায়।

অন্যদিকে, বাকি অফিসাররা বসিরহাটের টাকি গ্রামে নজর রাখছিলেন।
তারা লক্ষ্য করেন, একটি ক্যাফে থেকে অস্বাভাবিক হারে আধার কার্ডের আবেদন আসছে।
তদন্তে দেখা যায়, এই আবেদনের সঙ্গে যুক্ত এক স্কুল মাস্টার — কিন্তু তার প্রকৃত ভূমিকা তখনও পরিষ্কার ছিল না।

সীমান্তে থাকা অফিসার পাঁচ দিন ধরে নিঃশব্দে অপেক্ষা করেন।
ছয় নম্বর রাতে সেন্সর সিগন্যাল দেয় — ৮–১০ জন লোক জেলে সেজে ইছামতি নদী পার হচ্ছে। তাদের নেতৃত্বে ছিল একজন ভারতীয় দালাল।
অফিসারটি সবকিছু রেকর্ড করেন এবং তাদের চুপিচুপি অনুসরণ করেন বসিরহাট পর্যন্ত।
তারা একরাতে একটি সেন্টারে ছিল। অফিসারটি র‍্যাগপিকার সেজে বাইরে থেকে নজরদারি চালান।

পরের দিন, যা তিনি দেখলেন, তা ছিল ভয়ানক:
এক স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এলেন — সঙ্গে নিয়ে এলেন কাপড়, টাকা, ভুয়া আধার কার্ড, ভোটার আইডি, রেশন কার্ড এবং জন্ম শংসাপত্র।
প্রতিটি অনুপ্রবেশকারীকে নতুন হিন্দু পরিচয় দেওয়া হল এবং খেতে দেওয়া হল ভাত ও মাছ।
তারপর তাদের বাসে তুলে পাঠানো হল বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দিতে।

অফিসারটি বেসে ফিরে যান। IB পুরো তথ্য জোড়া লাগায় ২–৩ দিনে।
এরপর চলে নিঃশব্দ স্ট্রাইক — না স্থানীয় পুলিশ, না কোনও ফাঁস।
IB অভিযান চালায়:
* হাসনাবাদের একটি বাড়ি — পাওয়া গেল ৯টি আধার এনরোলমেন্ট কিট।
* টাকি-র একটি ক্যাফে — উদ্ধার হয় ২৮০টি ভুয়া ভোটার আইডি এবং ৩৯০টি ভুয়া আধার কার্ড।
* টাকি-র একটি স্কুলের স্টোর রুম — ভরা ছিল শত শত ভুয়া নথিপত্রে।

পুরো চক্রের মাথা ছিল:
একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল প্রধান শিক্ষক,
একজন স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসার,
এবং সেই রাজনৈতিক নেতা।
IB এখানেই থেমে থাকেনি।
তারা ট্র্যাক করে ৩০টি UPI অ্যাকাউন্ট — সবই ঘুষ নেওয়া BSF জওয়ানদের স্ত্রীর নামে খোলা।
প্রতিবার ছোট অঙ্কে লেনদেন — ₹১১৩০, ₹২৩৫০, ₹৬২৭০ — যেন সন্দেহ না হয়।
কিন্তু এই লেনদেনগুলি ঠিক সেই সময়েই হত, যখন অনুপ্রবেশকারীরা ভাটার সময় নদী পেরোত।

মিডিয়ায় কোনও শব্দ নেই।
কোনও দোষারোপ নেই।
পুরো BSF কমান্ড বদলে দেওয়া হল রাতারাতি।
না কোনও মেডেল, না কোনও খবরের হেডলাইন।

শুধু IB থেকে PMO-তে পাঠানো হল একটি সংক্ষিপ্ত রিপোর্ট:

“অপারেশন ইলিগ্যাল ইমিগ্রেশন – ফেজ ১ সম্পন্ন।
ফেজ ২-এর জন্য অনুমতি চাওয়া হল।”

এবং অনুমতি দেওয়া হল।….”

মঙ্গলবার সোশাল মিডিয়ায় এই পোস্ট করেন তথাগত রায়। তারপর অনেকেই তা কপি-পেস্ট করেন। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা সম্পর্কে কেন্দ্রের তরফে কিছুই জানানো হয়নি।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular