কলকাতা: গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ। আসছে রবিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বন্ধ থাকবে দ্বিতীয় হুগলি সেতু (Second Hooghly Bridge)। জানা গিয়েছে, ওইদিন সেতুর উপরে রাস্তা মেরামতির কাজ চলবে। তাই যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রতিদিন অসংখ্য গাড়ি হাওড়া ও কলকাতার মধ্যে এই সেতু পেরিয়ে যাতায়াত করে। অফিসগামী, পণ্যবাহী ট্রাক, ট্যাক্সি, অ্যাপ ক্যাব সব মিলিয়ে সেতুর উপর প্রতিনিয়ত চাপ থাকে ব্যাপক। এই কারণে কর্তৃপক্ষ ছুটির দিনেই এই ধরনের মেরামতির কাজ বেছে নিচ্ছে, যাতে সপ্তাহের দিনে অফিস সময়ে সাধারণ মানুষকে অসুবিধায় পড়তে না হয়।
এর আগে অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাস্তা সংস্কারের কাজের জন্য কয়েক ঘণ্টা বন্ধ ছিল বিদ্যাসাগর সেতু। সেই সময় শনিবার ও রবিবার দু’দিনেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এবার ফের একইভাবে রবিবারে বন্ধ থাকবে সেতুটি, তবে এবার সময় আরও দীর্ঘ—টানা আট ঘণ্টা।
কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেতু বন্ধ থাকাকালীন সময় যাত্রী ও চালকদের সুবিধার জন্য বিকল্প রুট ঠিক করা হয়েছে।
বিকল্প রুট:
হাওড়া থেকে কলকাতামুখী যানবাহনকে হাওড়া ব্রিজ (রবীন্দ্র সেতু) ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
আলিপুর, তারাতলা, বা এক্সাইড মোড় থেকে আসা যানবাহনকে প্রিন্সেপ ঘাট হয়ে শহরে ঢোকানো হবে।
ডানলপ, শ্যামবাজার, বা বেলগাছিয়া দিক থেকে আগত গাড়িগুলিকে পুলিশ চেতলা ঘাট বা হেস্টিংস ঘুরিয়ে পাঠাবে।
ভারী যানবাহনের (যেমন পণ্যবাহী ট্রাক বা লরি) ক্ষেত্রে রবিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
পোর্ট ট্রাস্টের এক আধিকারিক জানান, “সেতুর উপরে জয়েন্ট ও ডেক প্যানেলের পরিদর্শন ও সংস্কার হবে। সেতুর নিরাপত্তা বজায় রাখতে এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার হওয়ার ফলে কিছু জায়গায় ক্ষয় দেখা দিয়েছে।”
কলকাতা পুলিশের এক সিনিয়র অফিসার বলেন, “রাস্তায় নামার আগে গুগল ম্যাপ বা কলকাতা ট্রাফিক অ্যাপ দেখে নেওয়া জরুরি। যাত্রীরা যাতে বিভ্রান্ত না হন, তার জন্য আগাম তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।”
অফিসগামীদের জন্য যদিও এটি ছুটির দিন, তবু সকাল থেকে শহরের অন্যান্য সংযোগ রাস্তায় যানজটের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষত রবীন্দ্র সেতু ও মেটিয়াবুরুজ সংলগ্ন এলাকায় ট্রাফিকের চাপ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যাত্রীদের অনুরোধ করা হয়েছে, জরুরি প্রয়োজনে বের হলে বিকল্প রুট ব্যবহার করুন এবং ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশ মেনে চলুন।
প্রসঙ্গত, বিদ্যাসাগর সেতু নির্মিত হয়েছিল ১৯৯২ সালে। এটি কলকাতা ও হাওড়ার মধ্যে অন্যতম প্রধান সেতু এবং দেশের অন্যতম ব্যস্ততম ব্রিজ। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া এত ভারী যানচলাচল বহন করা সম্ভব নয় বলেই এই ধরনের সাময়িক বন্ধ অপরিহার্য বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।



