HomeWest BengalKolkata Cityহবু শিক্ষকরা চাকরির দাবিতে রাস্তায়, রাজ্যে পালিত যন্ত্রণা দিবস

হবু শিক্ষকরা চাকরির দাবিতে রাস্তায়, রাজ্যে পালিত যন্ত্রণা দিবস

- Advertisement -

আজ ৫ ই সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবস। দেশ জুড়ে একদিকে মহাসমারোহে শিক্ষক -শিক্ষিকাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারের উদাসীনতার কারণে ন্যায্য চাকরি থেকে বঞ্চিত হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীরা গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্ণারত অবস্থায় যন্ত্রণা দিবস পালন করলেন। ৫ ই সেপ্টেম্বরে শিক্ষক দিবসের দিনে দুই ভিন্ন ধরনের শিক্ষক দিবস পালন নজরে আসলো এই বাংলায়। একদিকে সেই সব শিক্ষক, শিক্ষিকারা যারা বিদ্যালয়ে বসে পেয়েছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সম্মান। অন্য দিকে বঞ্চিত হবু শিক্ষক যারা যোগ্যতা থাকা সত্বেও রাজ্য সরকারের বঞ্চনার শিকার।

কেউ রাখেনি কথা,কেউ বোঝেনি বঞ্চিতদের বুকভরা ব্যথা। প্রখর রোদে তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে গেলেও, শরীর থেকে অবিরাম ঘাম ঝরলেও পাশে আসেনি কেউ। প্রচন্ড বৃষ্টির জলে শরীর ভিজলেও গান্ধীমূর্তির পাদদেশে জলমগ্ন ধর্ণা মঞ্চে বসার মত পরিস্থিতি না থাকলেও ঐ জলমগ্ন ধর্ণা মঞ্চেই দাঁড়িয়ে সারাদিন কাটাতে হয়েছে। তবুও বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা ন্যায্য দাবিতে অনড়।

   

ধর্ণা মঞ্চে নেই পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা,নেই মহিলা শৌচালয়ের ব্যবস্থা। এই ভাবে ধর্ণার ৯০৫ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে কিন্তু সরকারের তরফ থেকে পানীয় জলের ব্যবস্থা কিংবা মহিলা শৌচালয়ের ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয়নি। বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগের বিষয়টি তো দূরদূরান্তে কোথাও নেই।

মালদা, মুর্শিদাবাদ,নদীয়া, কোচবিহার, দিনাজপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, হুগলি, হাওড়া, মেদিনীপুর, বীরভূম,বর্ধমান, কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে নবম -দ্বাদশ স্তরের বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা ধর্মতলার গান্ধীমূর্তির পাদদেশে এসে ধর্ণার পাশাপাশি কলকাতার রাজপথে নেমে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের উদাসীনতার কারণে নবম -দ্বাদশ স্তরের বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের জীবন থেকে মূল্যবান ৭ টি বছর চোখের সামনে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবুও হার মানেনি বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা।

 

 
 
 
 
 
View this post on Instagram
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

 

A post shared by Kolkata24x7 (@kolkata24x7_bengali)

এই বিগত সাত বছরে বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা কেউ হারিয়েছেন তাদের মাকে আবার কেউ বাবাকে আবার কেউ কেউ উভয়কেই। ফলে তারা সংসারের বোঝা নিজ নিজ কাঁধে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে। বীরভূম জেলার সুবোধ হালদার একাদশ-দ্বাদশ স্তরের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে মেধাতালিকা ভুক্ত হয়েও দুর্নীতির কারণে ন্যায্য চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়ে সংসারের হাল ধরতে নিজ রাজ্য ছেড়ে ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে যেতে বাধ্য হয়েছে।

যদি স্বচ্ছ ভাবে মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ হতো, তাহলে সুবোধ হালদার আজকে চাকরি করতো। ভিন রাজ্যে পেটের জ্বালায় সংসার বাঁচানোর জন্য পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যেতে হতো না। শুধুমাত্র একটাই সুবোধ হালদার নয়, এইরকম অনেক বঞ্চিত চাকরি প্রার্থী আজ পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে ভিন রাজ্যে কাজ করতে যেতে বাধ্য হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে হকের চাকরি ফিরিয়ে আনতে নবম -দ্বাদশের বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় বহু মিছিল, মহামিছিল, অবস্থান বিক্ষোভ করলেও এখনোও তাদের সমস্যার সমাধান হয়নি।

সরকারের তরফ থেকে কয়েক বছর ধরে বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগের জন্য আশ্বাসের পর আশ্বাস দেওয়া হলেও সেই আশ্বাসের বাস্তবায়ন হয়নি। বাধ্য হয়ে বিগত ২৯ শে আগস্ট দুর্নীতির কারণে ন্যায্য চাকরি থেকে বঞ্চিত নবম -দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ স্তরের বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা মহানগরীতে মৃত্যুর কার্নিভাল বের করেছিলেন। যোগ্য চাকরি প্রার্থীদের হকের চাকরি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ফলে যারা প্রকৃত যোগ্য চাকরি প্রার্থী ,তারা নিয়োগপত্র পায়নি। অযোগ্যরা দখল করেছে যোগ্যদের জন্য নির্ধারিত চাকরির ভ্যাকান্সি গুলি।

তবে আজ শিক্ষক দিবসের এই সুবর্ণ দিনে যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের এই করুন পরিস্থিতি আজও রাজ্যের আইন ব্যবস্থা নিয়ে ভাবায়। যেখানে এক শ্রেণীর শিক্ষক শিক্ষিকারা সসম্মানে ভূষিত হচ্ছেন। অন্যদিকে মেধা তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন চোখের জল ফেলে হকের চাকরির দাবিতে রাস্তার পড়ে আছেন একদল শিক্ষক শিক্ষিকারা।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular