HomeWest BengalKolkata CityNASA Report: কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চলসহ দেশের ১২টি শহর নিশ্চিহ্ন হবে

NASA Report: কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চলসহ দেশের ১২টি শহর নিশ্চিহ্ন হবে

- Advertisement -

নিউজ ডেস্ক: গলছে বরফ! গঙ্গায় তলিয়ে যাবে কলকাতার খিদিরপুর! এমনই আতঙ্কের কথা শোনাল মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা৷ শুধু কলকাতার খিদিরপুর এলাকীয় নয়, নাসার সতর্কবার্তার তালিকায় রয়েছে মুম্বই, চেন্নাই, কোচিসহ ভারতের একডজন শহর৷ সর্তকবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, এই ১২টি শহর শিগগির জলের তিন ফুট গভীরে চলে যাবে৷

বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি)। আর নাসা সেই রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করেছে৷ নাসার সেই রিপোর্ট রীতিমতো চিন্তার কারণ ভারতের কাছে৷ তাতে বলা হয়েছে, ভারতের ১২টি উপকূলীয় শহর এবং বন্দর এক থেকে তিন ফুট জলের তলায় চলে যাবে। এই শহরগুলির মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য রাজধানী মুম্বই, দক্ষিণ ভারতের অন্যতম প্রধান শহর চেন্নাই। এছাড়া কেরলের কোচি, অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখপত্তনম এবং পশ্চিমবঙ্গের খিদিরপুর বন্দর এলাকা এই তালিকায় রয়েছে।

   

বিশ্বে পরিবেশ দূষণ, উষ্ণায়নসহ বিভিন্ন কারণে সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে। এশিয়ায় জলস্তর বৃদ্ধির পরিমাণ অন্য জায়গার তুলনায় বেশি। আইপিসিসি’র মতে, আগে একশ বছরে যে পরিবর্তন হত, ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতি ছয় থেকে নয় বছরে তা হবে। এই শতাব্দী জুড়ে উপকূলে জলস্তর বাড়বে৷ ব্যাপক ভাঙন দেখা দেবে৷ অনেক শহর জলের তলায় চলে যাবে। এককথায় পরিস্থিতি খুব একটা সুখের নয়।

Mumbai, Chennai to Submerge Due to Rising Sea-Levels by 2050

কী করে ঠেকানো যাবে এই ভয়ঙ্কর ভবিষ্যৎকে? পরিবেশবিজ্ঞানী পুনর্বসু চৌধুরী অ্যান্টার্কটিকায় ভারতের মিশন থেকে সম্প্রতি ফিরেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টা সেখান থেকেই সব চেয়ে ভাল বোঝা যায়। গত ফেব্রুয়ারিতে অ্যান্টার্কটিকায় তাপমাত্রা ছিল রেকর্ড ১৮ ডিগ্রি। তখনও তিনি সেখানে ছিলেন।

একটি সংবাদমাধ্যমকে পুনর্বসু জানিয়েছেন, ”জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নানারকম আলোচনা হয়। প্যারিস কনভেনশন থেকে শুরু করে নানা জায়গায় বহু সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু পরিবেশকে তখনই নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে, যখন ব্যক্তিপর্যায়ে কার্বন নিঃসরণ কমানো যাবে। আমাদের বর্তমান জীবনযাত্রায় কার্বন নিঃসরণের হার কমানো অসম্ভব।” তাঁর মতে, ”গাড়ি, এসিসহ বিভিন্ন জিনিসের ব্যবহার বা অভ্যাস বদল না করলে, শুধু জাতীয় বা আন্তর্জাতিকস্তরে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকানো যাবে না।”

পরিস্থিতি কতটা খারাপ তা বোঝাতে একটা উদাহরণ যথেষ্ট। শিল্পবিপ্লবের সময় কার্বন নিঃসরণের যে পরিমাণ ছিল, এখন তা দ্বিগুণেরও বেশি। ফলে মানুষকে বাঁচতে গেলে, বিশ্বকে বাঁচাতে হলে প্রত্যককে উদ্যোগী হতে হবে এবং ব্যবস্থা নিতে হবে বলে মনে করেন পুনর্বসু।

দীর্ঘদিন সরকারি পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন অমিতাভ রায়। পরিকল্পনা কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত এই কর্তার মতে, ”আমরা প্রায়ই শপথ নিই যে, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে ফেলব৷ বাস্তবে তা হয় না। খাতায়-কলমে অনেক পরিকল্পনা নেওয়া হয়৷ আমরা অনেক প্রতিজ্ঞা করি৷ অনেক চুক্তিতে সই করি৷ বাস্তবে তার প্রয়োগ করা হয় না বলেই আইপিসিসি যে রিপোর্ট দিয়েছে, তা সত্যি হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।”

অমিতাভবাবু একটি সংবাদমাধম্যকে আরও জানিয়েছেন, ”এর আগে রাষ্ট্রসংঘ সব দেশের জন্য মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল বেঁধে দিয়েছিল। ২০০০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হত৷ তাতে ১৫ দফা বিষয় ঠিক করা হয়ছিল। ২০১৫ সালে মূল্যায়নের সময় দেখা গেল, তার রূপায়ণ হয়নি।” অমিতাভবাবু বলছেন, ”এরপর ২০১৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল ঠিক করল জাতিসংঘ। সেটাও পূরণ হবে এমন আশা কম। তখন হয়ত আবার ১৫ বছরের জন্য অন্য নামে কোনও লক্ষ্যমাত্রা তৈরি করা হবে। জলবায়ু পরিবর্ত রোধ করার কাজটাও এভাবেই হচ্ছে।”

ফলে পরিস্থিতি খুব সুখের নয়। আইপিসিসি রিপোর্ট বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আঞ্চলিকস্তরেও নানা পরিবর্তন হতে পারে। বৃষ্টি বেশি হবে৷ আবার কোথাও বৃষ্টি হবে না। খরা দেখা দেবে। কোথাও প্রচুর বরফ পড়তে পারে। ২০০৬-১৮ সালের মধ্যে সমুদ্রের জলস্তর নিয়ে যে সমীক্ষা করা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, গোটা বিশ্বে প্রতি বছর জলস্তরের গড় বৃদ্ধি হয়েছে ৩.৭ মিলিমিটার। ফলে এখন থেকেই সতর্ক হয়ে পরিবর্তন রোধ করার চেষ্টা না করলে, ভবিষ্যৎ ভয়ঙ্কর হতে বাধ্য। কারণ, পরিবর্তন রোধ করার কাজ রাতারাতি হয় না। তাতে অনেক সময় লাগে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। অবিলম্বে ব্যক্তি থেকে সরকার প্রতিটি পর্যায়ে উদ্যোগ দরকার।

- Advertisement -
Rana Das
Rana Dashttps://kolkata24x7.in/
Rana Das pioneered Bengali digital journalism by launching eKolkata24.com in 2013, which later transformed into Kolkata24x7. He leads the editorial team with vast experience from Bartaman Patrika, Ekdin, ABP Ananda, Uttarbanga Sambad, and Kolkata TV, ensuring every report upholds accuracy, fairness, and neutrality.
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular