৮৪ কোটি টাকায় চালু ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য ক্লিনিক, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

Mamata Banerjee Voter Form

কলকাতা: রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরও শক্তিশালী ও জনমুখী করতে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মঙ্গলবার নবান্নে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য ক্লিনিক (Mobile Health Clinic) প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের প্রত্যন্ত, দুর্গম ও পিছিয়ে পড়া এলাকাতেও উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।

Advertisements

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের আমলা, চিকিৎসক, প্রশাসনিক আধিকারিক, জনপ্রতিনিধি এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করেন, এটি সাধারণ স্বাস্থ্য ভ্যান বা মোবাইল ইউনিট নয় এটি এক পূর্ণাঙ্গ চলমান স্বাস্থ্য ক্লিনিক, যেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা থেকে শুরু করে একাধিক জরুরি রোগ পরীক্ষার সুবিধা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাওয়া যাবে।

   

প্রকল্পের অর্থসংস্থানের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যসভার সাংসদদের তহবিল (MPLADS) থেকে ৬০ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ দফতরের CSR ফান্ড থেকে ২৪ কোটি টাকা সব মিলিয়ে মোট ৮৪ কোটি টাকায় এই ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা পরিষেবা গড়ে তোলা হয়েছে।

তিনি বলেন, “আগেও আমরা অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু করেছি। কিন্তু এবার সরাসরি মানুষের এলাকায় পৌঁছে যাবে হাসপাতালের সুবিধা।”

মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকে থাকবে ইসিজি পরীক্ষা, আল্ট্রাসাউন্ড, রক্ত পরীক্ষা, চিকিৎসকের পরামর্শ, শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও গুরুতর রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও রেফার পরিষেবা। বিশেষ করে শিশু, গর্ভবতী মা, বয়স্ক মানুষ এবং প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা এই পরিষেবায় সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন।

Advertisements

জানা গিয়েছে, এই ক্লিনিকের সুবিধা পাওয়া যাবে সুন্দরবন, জঙ্গলমহল, পাহাড়ি অঞ্চল, সীমান্তবর্তী গ্রাম, নদীঘেরা ও দুর্গম এলাকা সব জায়গায় এই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে আগাম জানানো হবে, যাতে মানুষ আগে থেকেই পরিষেবা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই পরিষেবা চালাতে প্রতি মাসে ২ কোটি টাকারও বেশি খরচ হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষকে এক টাকাও দিতে হবে না। ৮ কোটি ৭২ লক্ষ মানুষ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে উপকৃত হবে৷ প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা৷ ২৬ লক্ষ বিনামূল্যে চোখের ছানি অস্ত্রোপচার হবে৷ ৩৪ লক্ষ বিনামূল্যে চশমা বিতরণ করা হবে৷ জেনেরিক ওষুধ সরবরাহে রাজ্য পথ দেখিয়েছে৷ 

বেসরকারি কিছু হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসা দিতে অনীহার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “স্বাস্থ্যসাথীতে চিকিৎসা দিতে না চাইলে লাইসেন্স রাখার দরকার নেই। মানুষের স্বাস্থ্যই সবচেয়ে বড় সম্পদ। চিকিৎসা পরিষেবা সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার। আর সেই অধিকার পৌঁছে দিতে এই সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”