সাতসকালে ফের ইডির তল্লাশি, শহরের একাধিক স্থানে অভিযান শুরু

ED Launches Dawn Raid at Nadia Businessman’s House in Passport Fraud Probe

কলকাতা, ২৮ অক্টোবর: কলকাতার বুকে ফের সক্রিয় ইডি। মঙ্গলবার সকাল হতেই শহরে চাঞ্চল্য ছড়াল বেলেঘাটার একটি অভিজাত অঞ্চলে ইডি-র আকস্মিক (ED Raid in Kolkata) হানায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অভিযানের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন দুই ভাই — বিশ্বজিৎ চৌধুরী ও রণজিৎ চৌধুরী। তাঁরা দু’জনই শহরের পরিচিত ব্যবসায়ী। একজন কাপড়ের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, অন্যজন নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে।

Advertisements

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ছ’টা নাগাদ কেন্দ্রীয় বাহিনী ও ছয়জন ইডি আধিকারিকের একটি দল হাজির হয় বেলেঘাটা ৭৫ নম্বর হেমচন্দ্র নস্কর রোডের একটি বাড়িতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, তখনও বেশিরভাগ মানুষ ঘুমে আচ্ছন্ন। হঠাৎই এলাকায় কয়েকটি কালো গাড়ি ঢোকার পরই বোঝা যায় কিছু একটা ঘটতে চলেছে। মুহূর্তের মধ্যেই ইডি আধিকারিকরা প্রবেশ করেন ওই দুই ভাইয়ের বাড়িতে।

   

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অভিযান মূলত আর্থিক অনিয়ম সংক্রান্ত তদন্তের অংশ হিসেবেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে ঠিক কোন মামলার সঙ্গে এই তল্লাশি যুক্ত, তা এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কিছু পুরনো আর্থিক লেনদেন, নির্মাণ ব্যবসার প্রকল্প এবং অর্থ বিনিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র যাচাই করতেই ইডি এই অভিযান শুরু করেছে।

বেলেঘাটার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, চৌধুরী পরিবারের সামাজিক অবস্থান বেশ প্রভাবশালী। দুই ভাইয়ের ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় পরিচিত। বিশ্বজিৎ চৌধুরী শহরের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে কাপড় সরবরাহ করেন বলে জানা গিয়েছে, অন্যদিকে রণজিৎ চৌধুরী রিয়েল এস্টেট ও নির্মাণ ব্যবসায় যুক্ত। তাঁদের ব্যবসা সম্পর্কিত কিছু আর্থিক লেনদেনে অসঙ্গতি নিয়েই তদন্ত চলছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের ইঙ্গিত।

Advertisements

ইডি আধিকারিকরা সকাল থেকে ওই বাড়িতে নথিপত্র খতিয়ে দেখেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট জব্দ করেন বলে জানা গিয়েছে। অভিযানের সময় বাড়ির আশপাশে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা গোটা এলাকা ঘিরে রাখেন যাতে বাইরে থেকে কেউ প্রবেশ বা বেরোতে না পারেন।

অভিযান ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। অনেকেই রাস্তায় বেরিয়ে আসেন ঘটনাটি দেখতে। কেউ কেউ জানান, “চৌধুরী পরিবারকে আমরা বহু বছর ধরে চিনি। এঁদের বিরুদ্ধে কখনও কোনো অভিযোগ শুনিনি। হঠাৎ এই অভিযান সত্যিই চমকে দিয়েছে।” তবে তদন্ত সংস্থা কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ইডি-র এক আধিকারিক সংক্ষেপে বলেন, “তদন্ত চলছে, এখনই কিছু বলা যাবে না।”