তিলোত্তমার নামে টাকা তোলার অভিযোগে ৭ জুনিয়র ডাক্তারকে পুলিশি তলব

Division Bench Ruling a Big Boost for Aniket Mahato in Posting Controversy

তিলোত্তমা, কলকাতার অপর নাম। তার জন্মদিনের একদিন আগে, শহরে নতুন এক বিতর্কের জন্ম হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগে বিধাননগর পুলিশ তাদের তলব করেছে। অভিযোগ, জুনিয়র ডাক্তাররা “জাস্টিস ফর আরজি কর” আন্দোলনের নাম করে বাজার থেকে টাকা তুলছেন। তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক তহবিলের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং সেই কারণেই পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়।

Advertisements

অনিকেত মাহাতো, অর্ণব মুখোপাধ্যায়, রাজু সাউ সহ মোট সাতজনকে তলব করা হয়েছে। এই অভিযোগের মূল কারিগর হলেন রাজু ঘোষ, যিনি প্রথমে একটি অভিযোগ দায়ের করেন বিধাননগর পুলিশে। রাজু ঘোষ জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় “জাস্টিস ফর আরজি কর” নামে প্রচারিত একটি বিজ্ঞাপন দেখার পর, তিনি নিজেও পাঁচ হাজার টাকা দান করেন। কিন্তু তার পরেই তিনি দেখতে পান যে, বেশ কিছু ব্যক্তিগত কিউআর কোড ও অ্যাকাউন্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে, যা তাকে সন্দেহের মুখে ফেলে। তিনি আরও দাবি করেন যে, জুনিয়র ডাক্তারদের অ্যাকাউন্টে কয়েক কোটি টাকা জমা হয়েছে, তবে সেগুলোর ব্যয়ের নির্দিষ্ট খাত কিছুই জানা যাচ্ছে না।

   

রাজু ঘোষ বলেন, “আমি প্রথমে যে বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম, তার পর থেকেই ব্যাপারটি আমার কাছে সন্দেহজনক হয়ে ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরতে থাকা এই সব কোড দেখে আমি বুঝতে পারলাম কিছু ভুল হচ্ছে। এরপর, পুলিশের কোনো পদক্ষেপ না দেখে আমি বিধাননগর কোর্টে অভিযোগ করি।”

এদিকে, এই অভিযোগের পর থেকেই আরজি কর আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে, এই আন্দোলনে অন্যতম মুখ হিসেবে পরিচিত জুনিয়র ডাক্তার আসফাকুল্লা নাইঞারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ ছিল, তিনি সার্জেন পরিচয়ে চিকিৎসা প্রদান করছিলেন, যদিও তিনি জুনিয়র ডাক্তার ছিলেন। এ বিষয়ে ইলেকট্রনিক কমপ্লেক্স থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল, এবং মামলাটি পরে হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়।

Advertisements

এবার রাজু ঘোষের অভিযোগে বিধাননগর পুলিশ ৭ জন জুনিয়র ডাক্তারকে তলব করেছে, এবং তাদের আর্থিক তহবিলের উৎস ও খরচের বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করবে। এদিকে, জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন, ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্ট (WBJDF), এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। তবে সংগঠনের সদস্যরা জানান, তারা সব সময়ই আন্দোলন পরিচালনা করতে সচেষ্ট, এবং সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে বাধ্য।

এ ঘটনা শহরে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রশ্ন উঠছে, যে ধরনের আন্দোলন সাধারণ মানুষের সহযোগিতা ও সমর্থন চাইছে, তা কি সঠিক পথে এগোচ্ছে? বা কোথাও আর্থিক অনিয়মের ছায়া পড়ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত। তবে পুলিশ ও আদালতের তদন্তের পর এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।