ধরা পড়ল কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (KLO) জঙ্গি সংগঠনের প্রধান জীবন সিংহের ঘনিষ্ঠ ধানকুমার রায়। সে জীবন সিংহের নির্দেশে নেপালে গা ঢাকা দিতে যাচ্ছিল বলে জানা যাচ্ছে। ধৃতকে সোমবার শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে হয়। তদন্ত শুরু করেছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স।
ভারত-নেপাল সীমান্ত দার্জিলিং জেলার দেবীগঞ্জ খড়িবাড়ি এলাকা থেকে স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের উত্তরবঙ্গ শাখার হাতে ধরা পড়ে ধানকুমার। তার বাড়ি কোচবিহারের বক্সিরহাটে। এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে ধৃত ব্যক্তি জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য ।
গত ফেব্রুয়ারি মাসের শিলিগুড়ির খালপাড়া এলাকায় থেকে এসটিএফ অবিনাশ রায় নামে অসমের কোকড়াঝাড়ের এক বাসিন্দাকে কেএলও জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার করে। কেএলও জঙ্গি সংগঠনের জন্য টাকা তুলত অবিনাশ। ধৃত অবিনাশ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগসাজশের বিষয়টি স্বীকার করে নেয়। তাকে জেরা করে এস টি এফ ওই দলের মৃণাল বর্মণের খোঁজ পেয়ে তাকে শিলিগুড়ির অদুরে ফাঁসিদেওয়া থেকে গ্রেফতার করে।
এই দুই জঙ্গিকে জেরা করে কোচবিহারের বক্সিরহাটের বাসিন্দা ধানকুমার রায়ের নাম জানতে পারে এসটিএফ। জঙ্গি ধানকুমার মুলত ব্যবসায়ীদের থেকে কেএলও সংগঠনের নাম করে মোটা টাকা তুলত। সেই টাকা দিয়ে বিহার থেকে অস্ত্র কিনে তা দলের আত্মগোপন করে থাকা সদস্যদের কাছে পৌঁছে দিত। তাকে জেরা করে কেএলও প্রধান আত্মগোপনকারী জঙ্গি নেতা জীবন সিংহ সম্পর্কে তথ্য মিলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিধানসভা ভোটে তৃতীয়বার সরকার গড়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভিডিও বার্তায় হুমকি দেয় জীবন সিংহ। তার হুমকি কামতাপুর দাবি মেনে না নিলে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেব।
এই কেএলও প্রধান জীবন সিংহের নির্দেশে বামফ্রন্ট আমলে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে হামলা হয়েছিল। সেই হামলায় ৫ সিপিআইএম নেতাকে খুন করা হয়। পরে ভুটানে তার ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় সে দেশটির সেনাবাহিনী। এর পর থেকে জীবন সিংহ কোথায় আছে সে তথ্য নেই গোয়েন্দা বিভাগের কাছে। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস সরকার আসার পর ধূপগুড়ি হামলায় ধৃত কেএলও জঙ্গিরা জামিন পায়। তাদের অনেকেই নিখোঁজ।
কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন উত্তরবঙ্গে ত্রাসের কারণ হয়ে উঠেছিল। তবে বাম আমলের শেষে দিকে তাদের মধ্যে ভাঙন দেখা দেয়। উত্তরবঙ্গে এখনও কেএলও চোরাস্রোত বইছ।