গারদ ছেড়ে কিষেনজি ঘনিষ্ঠ এই মাওবাদী হঠাত্ কেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে?

কারাগারের চার দেওয়াল থেকে বেরিয়ে এবার শিক্ষাঙ্গণে কিষেনজি ঘনিষ্ট বন্দি মাওবাদী নেতা। বুধবার বর্ধমান বিশ্ববদ্যালয়ে পিএইচডির ইন্টারভিউ দিতে হাজির হলেন কুখ্যাত মাওবাদী নেতা অর্নব দাম।…

FotoJet 32 2 গারদ ছেড়ে কিষেনজি ঘনিষ্ঠ এই মাওবাদী হঠাত্ কেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে?

কারাগারের চার দেওয়াল থেকে বেরিয়ে এবার শিক্ষাঙ্গণে কিষেনজি ঘনিষ্ট বন্দি মাওবাদী নেতা। বুধবার বর্ধমান বিশ্ববদ্যালয়ে পিএইচডির ইন্টারভিউ দিতে হাজির হলেন কুখ্যাত মাওবাদী নেতা অর্নব দাম। দেশবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার জন্য তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা শুনিয়েছে আদালত। সেই প্রেক্ষিতে এদিন কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় গোলাপবাগ চত্বরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানেই ইতিহাস নিয়ে অধ্যাপনার জন্য স্টেট এলিজিবলিটি টেস্টবা সেট’র ইন্টারভিউ দিলেন তিনি।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলে থাকাকালীন বরাবরই পড়াশোনায় মনযোগ ছিল তাঁর। জেলে ভাল লাইব্রেরী থাকায় সেখানেই পড়াশুনা করতেন অর্নব। সেই সুবাদেই সেটের লিখিত পরীক্ষায় ৬৬ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেন তিনি। তারপরেই ডাক পান ইন্টারভিউতে। জেল কর্তৃপক্ষের তত্পরতায় সোজা পৌঁছে যান বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই ইন্টারভিউ পাশ করলে তিনি গবেষণা করতে পারবেন ইতিহাস নিয়ে।

   

জানা গিয়েছে, মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত হওয়ার আগে অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন অর্নব। কলকাতার গড়িয়ার বাসিন্দা তিনি। বাবা এসকে দাম অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। উচ্চমাধ্যমিকের পর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশুনা করতে ভর্তি হন খড়গপুর আইআইটিতে। সেখানে পড়াকালীন হঠাত্ বেপাত্তা হয়ে যান তিনি। পরে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে নিষিদ্ধ মাওবাদী সংগঠনে যোগ দেন তিনি। তারপর একের পর এক ‘দেশ বিরোধী’ কার্যকলাপে যুক্ত হয়ে পড়েন। লালগড় আন্দোলনের সময় অযোধ্যা-বাঘমুন্ডি পাহাড়ে ডেরা বাঁধেন তিনি।

পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে ‘একে-৪৭’ নিয়ে দাপিয়ে বেড়াতেন অর্নব। সেই সুবাদেই যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতা বাড়ে কুখ্যাত মাওবাদী নেতা কিষেনজির সঙ্গে। শুরু হয় একের পর এক চক্রান্তের ‘গোপন প্ল্যান’। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১২ সালে ঝাড়গ্রামের শিলদায় আধাসামরিক বাহিনীর ক্যাম্পে দলবল নিয়ে হামলা চালান তিনি। সেনার সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে আহত হলে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। তারপরই আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন সাজা হয় তাঁর। কুখ্যাত মাও নেতা কিষেনজির একরকম শিষ্য ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় ক্ষমতায় এসে কিষেনজীকে হত্যা করলে জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের দাপট অনেকটাই কমে যায়।

আদালতের যাবজ্জীবন শাস্তি ঘোষণার পর হুগলির সংশোধনাগারেই বন্দি ছিলেন অর্নব। সেখানে থেকেই বাকি পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার জেদ চেপে বসে তাঁকে। নানান প্রতিবন্ধকতায় অবশেষে নিজের কাঙ্খিত লক্ষ্যে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন।