কসবা ল কলেজে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে (Chiranjeet)। এই ঘটনায় প্রথমবার মুখ খুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ও বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা দীপক চক্রবর্তী, যিনি চিরঞ্জিৎ (Chiranjeet)নামে বাঙালির কাছে পরিচিত। একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে ফোনালাপে চিরঞ্জিৎ এই ঘটনায় অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বলেন, “কলেজে আরও অনেক মহিলা ছিলেন, কিন্তু মনোজিৎ কেন শুধু নির্যাতিতাকে টার্গেট করলেন?” চিরঞ্জিৎ (Chiranjeet) আরও বলেছেন “যে ১০ জন মহিলার মধ্যে নির্যাতিতা কেন টার্গেট হলেন মনোজিৎ এর সেটা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।” এই মন্তব্য ঘিরে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে, এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন।শমীক ভট্টাচার্য এক্স প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে বলেন, “কসবা ধর্ষণ কাণ্ডে তৃণমূলের একের পর এক নেতা-মন্ত্রীদের বক্তব্য প্রমাণ করে দেয় তৃণমূলের চরিত্র।
রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মদন মিত্র আর এখন তৃণমূলের বিধায়ক, অভিনেতা চিরঞ্জিৎ(Chiranjeet)। তৃণমূল করলে স্বাভাবিক বিবেক টুকুও বন্ধক রাখতে হয় ক্ষমতার কাছে।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে শমীক তৃণমূলের নেতাদের নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।কসবা ল কলেজে ঘটে যাওয়া এই ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের স্থানীয় নেতা বলে জানা গেছে।
তিনি বর্তমানে কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কর্মরত। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনোজিৎ কলেজের রাজনৈতিক মহলে প্রভাবশালী ছিলেন। এই ঘটনায় তৃণমূলের অভ্যন্তরে অস্বস্তি বাড়ছে, কারণ দলের একাধিক নেতা এই বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন।
এর আগে, (Chiranjeet) তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনাকে ‘বন্ধু-বান্ধবীর মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা’ বলে মন্তব্য করেছিলেন, যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। বিধায়ক মদন মিত্রও এই ঘটনা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন, যার জন্য তিনি পরে ক্ষমা চেয়েছেন। রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া এই ঘটনাকে ‘সামান্য’ বলে উল্লেখ করে আরও বিতর্কের সৃষ্টি করেন। তিনি বলেছিলেন, “ছোট্ট একটা ঘটনা ঘটলেই গেলে গেল রে রব ওঠে। ঘটনা তো ঘটে।” এই ধরনের মন্তব্য তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ অস্বস্তি বাড়িয়েছে।
চিরঞ্জিৎ (Chiranjeet) এর মন্তব্য এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তিনি নির্যাতিতার টার্গেট হওয়ার কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে পরোক্ষভাবে নির্যাতিতার ভূমিকার উপর সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, যা অনেকের কাছে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের মন্তব্য তৃণমূলের নারী নিরাপত্তা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বিশেষ করে, আরজিকর ধর্ষণ কাণ্ডের পর এই ঘটনা রাজ্যে নারী নিরাপত্তার বিষয়টিকে আরও উত্তপ্ত করেছে।
বিজেপি এই ঘটনাকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। শমীক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে দলটি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করছে। একটি বিজেপি নেতা বলেন, “তৃণমূলের নেতারা বারবার নারী নিরাপত্তার বিষয়ে অপমানজনক মন্তব্য করছেন। এটা তাদের নৈতিক অধঃপতনের প্রমাণ।”
এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। নির্যাতিতা ও অভিযুক্তদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, এবং ঘটনাস্থলে পুনর্নির্মাণও করা হয়েছে। তদন্তে আরও চারজনকে যুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে একজন মহিলা সাব-ইনস্পেক্টর রয়েছেন।
১১ জুলাই বাজারে আসছে সবচেয়ে পাতলা ও পাওয়ারফুল ফোন! বিস্তারিত দেখুন
এই ঘটনা ২০২৬ সালের (Chiranjeet) বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। তৃণমূলের নেতাদের বিতর্কিত মন্তব্য এবং বিজেপির আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করছে। আগামী দিনে এই ঘটনা কীভাবে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির উপর প্রভাব ফেলে, তা নির্ধারণ করবে রাজ্যের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দিক।