‘কসবা কাণ্ডে বিজেপির ‘তথ্যানুসন্ধান দল’ রাজনৈতিক প্রহসন’, দাবি শশী পাঁজার

সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় রাজ্যের রাজনৈতিক মহল উত্তপ্ত। এবার প্রকাশ্যে মুখ খুললেন তৃণমূল নেত্রী শশী পাঁজা (Kasba-Case)। তিনি বলেছেন, এই জঘন্য ঘটনার পর…

Kasba-Case shashi panja slams BJP

সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় রাজ্যের রাজনৈতিক মহল উত্তপ্ত। এবার প্রকাশ্যে মুখ খুললেন তৃণমূল নেত্রী শশী পাঁজা (Kasba-Case)। তিনি বলেছেন, এই জঘন্য ঘটনার পর কলকাতা পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ১২ ঘণ্টার মধ্যে এফআইআর-এ নাম থাকা তিনজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। .

পরবর্তীতে প্রমাণের ভিত্তিতে আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠন করা হয়েছে, (Kasba-Case) যা ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে দ্রুত গতিতে কাজ করছে। ভুক্তভোগীর পরিবার জনসমক্ষে রাজ্য প্রশাসনের উপর পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছে।

   

এই পরিস্থিতিতে বিজেপির ‘তথ্যানুসন্ধান দল’ গঠনকে শশী পাঁজা ‘পাতলা পর্দায় ঢাকা রাজনৈতিক প্রহসন’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তার দাবি, বিজেপি (Kasba-Case) এই ঘটনাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে। শশী পাঁজা আরও বলেছেন বিজেপির নিজেদের বন্ধু ,পদ্মশ্রী সম্মানিত কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেল এবং জোরপূর্বক গর্ভপাতের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

তারা সেখানে গিয়ে অনুসন্ধান করুন। শশী পাঁজার মতে বিপ্লব দেব যিনি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ব্যর্থ। তার সময়ে নারী নির্যাতন, সাংবাদিকদের নিগ্রহের ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে।

তিনি বলেন কলকাতা পুলিশের তৎপরতা এই মামলায় প্রশংসনীয়। ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র, যিনি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন নেতা ও কলেজের অস্থায়ী কর্মী, সহ জায়েদ আহমেদ, প্রমিত মুখোপাধ্যায় এবং একজন নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে,(Kasba-Case)  ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয় এবং সিসিটিভি ফুটেজ, ফরেনসিক প্রমাণ এবং মোবাইল ফোনে শেয়ার করা একটি ভিডিও তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

ভুক্তভোগী এবং অভিযুক্তদের মেডিকোলিগ্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত ডিএনএ নমুনা, আঙুলের ছাপ এবং ধস্তাধস্তির চিহ্ন তদন্তকে শক্তিশালী করছে। কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) বলেন, “আমরা শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি অবলম্বন করেছি। ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”

তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে বলা হয়েছে, (Kasba-Case) “বিজেপির তথাকথিত ‘তথ্যানুসন্ধান দল’ কেবল একটি রাজনৈতিক প্রহসন। কলকাতা পুলিশ ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে। ভুক্তভোগীর পরিবার রাজ্য প্রশাসনের উপর পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছে।

বিজেপি যদি সত্যিই নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হত, তবে তারা তাদের পদ্মশ্রী সম্মানিত মিত্র কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে ওঠা ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেল ও জোরপূর্বক গর্ভপাতের অভিযোগের নিন্দা করত। কিন্তু বিজেপির কাছে নৈতিকতা কেবল সুবিধাবাদী রাজনীতির অস্ত্র।”

Advertisements

কার্তিক মহারাজ, (Kasba-Case) যিনি ভারত সেবাশ্রম সংঘের সঙ্গে যুক্ত এবং বিজেপির ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত, তাঁর বিরুদ্ধে এক মহিলা ২০১৩ সাল থেকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, তিনি চাকরির প্রলোভনে এই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং অন্তঃসত্ত্বা হলে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো হয়।

তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “বিজেপি যখন বাংলায় নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তখন তাদের নিজেদের মিত্রের বিরুদ্ধে ওঠা এই গুরুতর অভিযোগে নীরবতা লজ্জাজনক। তাদের তথ্যানুসন্ধান দল কেবল মিডিয়ার মনোযোগ আকর্ষণের জন্য।”

বিজেপির তথ্যানুসন্ধান দল, যার নেতৃত্বে রয়েছেন সাংসদ রবি কিষাণ, ঘটনাস্থল পরিদর্শনের জন্য কলকাতায় এসেছে। তারা দাবি করেছে, রাজ্যে নারী নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই দল গঠন কেবল রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য।

তৃণমূল নেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, “বাংলায় গণতন্ত্র আছে। পুলিশ তাদের কাজ করেছে। ১২ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিজেপির এই তথ্যানুসন্ধান দল কেবল রাজনৈতিক নাটক।”

ভুক্তভোগীর (Kasba-Case) পরিবার জানিয়েছে, তারা কলকাতা পুলিশের উপর ভরসা রাখছে এবং সিবিআই তদন্তের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেন, “পুলিশ আমাদের পাশে আছে। আমরা শুধু ন্যায়বিচার চাই।” এদিকে, কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। একজন ছাত্র বলেন, “আমাদের পরীক্ষা আসছে। কলেজ বন্ধ থাকলে আমাদের শিক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

মুখ্যসচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি না মেলায় সিপি-র সঙ্গে দেখা করতে লালবাজারে বিজেপির অনুসন্ধানকারী দল

এই ঘটনা রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে তুলে ধরেছে। জাতীয় মহিলা কমিশন এবং কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলার উপর নজর রাখছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা দ্রুত চার্জশিট দাখিল করবে এবং অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করবে। তবে বিজেপির তথ্যানুসন্ধান দলের পদক্ষেপ রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এই পরিস্থিতি আগামী দিনে রাজ্যের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে জল্পনা চলছে।