পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, কী বলছে ভারত সেবাশ্রম?

কলকাতা: পদ্মশ্রী সম্মানপ্রাপ্ত ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে গুরুতর ধর্ষণের অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য। এক মহিলা অভিযোগ করেছেন, ২০১৩ সালে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাঁকে…

Kartik Maharaj Rape Allegations

কলকাতা: পদ্মশ্রী সম্মানপ্রাপ্ত ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে গুরুতর ধর্ষণের অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য। এক মহিলা অভিযোগ করেছেন, ২০১৩ সালে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন মহারাজ। ইতিমধ্যেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছে পুলিশ এবং তদন্ত শুরু হয়েছে।

অভিযোগকারিণীর দাবি, তাঁকে মুর্শিদাবাদের এক আশ্রমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শিক্ষকতার চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে। আশ্রমেই থাকার ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু কিছুদিন পর এক রাতে মহারাজ জোর করে তাঁর ঘরে ঢুকে পড়েন এবং তাঁকে ধর্ষণ করেন। অভিযোগ, ছয় মাস ধরে অন্তত ১২ বার তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।

   

মহিলার আরও দাবি, তিনি এতদিন চুপ ছিলেন কারণ মহারাজ তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন-যদি তিনি পুলিশের কাছে যান, তবে আত্মহত্যা করবেন। এই ভয়েই তিনি এতদিন মুখ খোলেননি।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং IPC-র একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। প্রয়োজনে অভিযুক্তকে তলব করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

কার্তিক মহারাজের প্রতিক্রিয়া

এ বিষয়ে কার্তিক মহারাজ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, “আমি একজন সন্ন্যাসী। আমার জীবনে এমন মিথ্যা অভিযোগ নতুন কিছু নয়। আইনি পথে এর জবাব দেওয়া হবে।” তিনি স্বীকার করেছেন, ওই আশ্রমে থাকার বন্দোবস্ত থাকে, তবে এ ধরনের কোনো অনৈতিক ঘটনার সঙ্গে তাঁর যোগ নেই।

Advertisements

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিতর্ক Kartik Maharaj Rape Allegations

ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে রাজনীতির পারদও চড়তে শুরু করেছে। কারণ, কার্তিক মহারাজের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ নতুন নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অতীতে তাঁকে তৃণমূল বিরোধী কাজ করার অভিযোগে প্রকাশ্যে কটাক্ষ করেছিলেন। সেই সময় মহারাজ মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি নোটিস পাঠিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবিও জানিয়েছিলেন।

কী বলছে ভারত সেবাশ্রম

এই প্রসঙ্গে ভারত সেবাশ্রম সংঘের সঙ্গে (শ্রBharat Sevashram Sangha) যোগাযোগ করা হলে, ভারত সেবাশ্রম সংঘের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে সংঘ সূত্রে খবর, ওই মহিলা আশ্রমে চাকরি করতেন। আগেও নাকি ওই মহিলা বেশকিছু অভিযোগ তুলছিলেন! এমনটাই দাবি করেছে ওই সংঘ সূত্র।

রাজ্যে যৌন হেনস্তার একাধিক অভিযোগের মধ্যে আরও এক বিস্ফোরক ঘটনা

এই অভিযোগ এমন এক সময় সামনে এল, যখন কলকাতার একটি কলেজে আইনের ছাত্রীর ওপর গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনা রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে, এবং ফরেনসিক ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।