“অকৃতজ্ঞের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম”: মহুয়াকে অতাতে সমর্থন নিয়ে অনুতপ্ত কল্যাণ

কলকাতা: তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে। লোকসভার প্রাক্তন চিফ হুইপ তথা শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবার সরাসরি আক্রমণ শানালেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। শুধু…

Kalyan regrets backing Mahua in past

কলকাতা: তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে। লোকসভার প্রাক্তন চিফ হুইপ তথা শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবার সরাসরি আক্রমণ শানালেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। শুধু তাই নয়, সংসদে মহুয়াকে একসময় প্রকাশ্যে সমর্থনের জন্য জাতির কাছে ‘ক্ষমা’ চেয়ে নিলেন তিনি (Kalyan regrets backing Mahua in past)।

একটি পুরনো ভিডিও পোস্ট করে কল্যাণ লিখেছেন, “মহুয়া মৈত্র যখন চাপে ছিলেন, তখন তাঁকে সমর্থন করেছিলাম, নিছক বিশ্বাস থেকে। এখন তিনি আমাকে ‘নারীবিদ্বেষী’ বলেন। আমি অনুতপ্ত, একজন অকৃতজ্ঞ মানুষকে সমর্থন করেছিলাম। মানুষ বিচার করুক।”

   

এই পোস্টের ঠিক আগেই লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন কল্যাণ। দলের অভ্যন্তরে সাংসদদের সমন্বয়হীনতা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই তিনি পদত্যাগ করেন। তার পরেই দলের নতুন চিফ হুইপ নিযুক্ত হন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে মহুয়ার টুইটকে অনেকেই দেখছেন কল্যাণের প্রতি ‘পলিটিকাল স্নাব’ হিসেবেই।

সাম্প্রতিক এক পডকাস্টে মহুয়া বলেন, “শূয়োরের সঙ্গে কুস্তি হয় না। কারণ, ওরা মজা পায় আর তুমি নোংরা হও। ভারতীয় সংসদেও নারীবিদ্বেষী, বিকৃতমনস্ক, হতাশ পুরুষদের প্রতিনিধিত্ব আছে।” এই মন্তব্য ঘিরেই ফের বিতর্ক।

জবাবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “একজন সহ-সাংসদের সঙ্গে শূয়োর তুলনা করা সাংসদীয় শালীনতার পরিপন্থী। লিঙ্গের দোহাই দিয়ে গালাগালি চালানো যায় না। মহুয়া যদি পুরুষ হতেন, এ ধরনের কথা বললে দেশে আগুন লেগে যেত।” তাঁর মতে, “নারীবাদ আর অবমাননাকর ভাষার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এটা সাহস নয়, এটা নিছক অপমান।”

Advertisements

তবে কল্যাণের অতীত মন্তব্যও আবার সামনে এসেছে। এক কলেজে ধর্ষণের ঘটনাকে ঘিরে তিনি বলেছিলেন, “বন্ধু যদি বন্ধুকে ধর্ষণ করে, তা হলে কীভাবে সুরক্ষা দেবে? প্রতিটি স্কুলে পুলিশ মোতায়েন হবে?” সেই মন্তব্য নিয়ে দলের অস্বস্তি তৈরি হয়। মহুয়াও সেসময় বলেন, “নারীবিদ্বেষ কোনও একক দলের বিষয় নয়। কিন্তু তৃণমূলের বৈশিষ্ট্য হল, আমরা নিজের দলের ভুলের বিরুদ্ধেও মুখ খুলি।”

তার পরেই ফের ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাকে মহিলা-বিরোধী বলা হচ্ছে। আর উনি কী? একটা পরিবার ভেঙে ৬৫ বছরের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছেন!”

তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই বিবাদ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও, সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, দলের শীর্ষ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই সংসদ সদস্যদের ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দল’ থামানোর বার্তা দিয়েছেন। বরং কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা পুনর্বিবেচনা নিয়ে আন্দোলনে মনোনিবেশ করতে বলেছেন। জানা যাচ্ছে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ইস্তফার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করছেন এবং শীঘ্রই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।