শুভেন্দুর কাশ্মীর মন্তব্যে বিস্ফোরক কল্যাণ

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Kalyan Banerjee) কাশ্মীর নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় তুলেছে। তিনি বাঙালি পর্যটকদের উদ্দেশে বলেছেন, “মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরে যাবেন না।”…

Kalyan Banerjee slams suvendu

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Kalyan Banerjee) কাশ্মীর নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় তুলেছে। তিনি বাঙালি পর্যটকদের উদ্দেশে বলেছেন, “মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরে যাবেন না।” এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ এবং প্রখ্যাত আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

   

তিনি (Kalyan Banerjee) বিস্ফোরক মন্তব্যে শুভেন্দুর এই বক্তব্যকে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, “পাকিস্তান বলেছিল ভারতীয়রা যেন কাশ্মীরে না যায়। শুভেন্দু ঠিক একই কথা বললেন। তাহলে শুভেন্দু ও পাকিস্তানের মধ্যে পার্থক্য কী? শুভেন্দু কি পাকিস্তানের চর?” এই মন্তব্যের মাধ্যমে কল্যাণ শুভেন্দুর উদ্দেশ্য নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন।

কল্যাণ (Kalyan Banerjee) আরও বলেন, শুভেন্দু এই ধরনের মেরুকরণের রাজনীতি করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছেন। তিনি অভিযোগ করেন, “শুভেন্দু হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে মানুষের রক্তের উপর হেঁটে মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসতে চান।” তৃণমূল নেতার এই বক্তব্য রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

কল্যাণের (Kalyan Banerjee) মতে, শুভেন্দুর এই মন্তব্য কেবল সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতেই নয়, বরং ভারতের ঐক্য ও সংহতির মূল্যবোধের উপর আঘাত হানছে।জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা গতকাল নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ওমর আবদুল্লা পহেলগাঁও হামলার পর পর্যটকদের কাশ্মীরে ভ্রমণের জন্য উৎসাহিত করে বলেছেন, “পহেলগাঁও কাণ্ডের জন্য আতঙ্কিত হবেন না।

বাংলার পর্যটকদের আরও বেশি করে কাশ্মীরে আসার আমন্ত্রণ জানাই।” এই পরিপ্রেক্ষিতে শুভেন্দুর মন্তব্যকে তৃণমূল ‘বিভেদ সৃষ্টিকারী’ হিসেবে অভিহিত করেছে।তৃণমূলের তরফে আরও বলা হয়েছে, শুভেন্দুর এই মন্তব্য বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রতিফলন।

তৃণমূল (Kalyan Banerjee) আরও বলেছে যে প্রধানমন্ত্রী মোদী যখন কাশ্মীরের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার কথা বলে পর্যটকদের সেখানে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন, তখন বিজেপিরই বিরোধী দলনেতা উল্টো বার্তা দিচ্ছেন। এটা বিজেপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের প্রমাণ।” তৃণমূলের সমর্থকরা সামাজিক মাধ্যমে শুভেন্দুকে তীব্র সমালোচনা করে লিখেছেন, “বিজেপি মানেই সাম্প্রদায়িক! শুভেন্দুর মন্তব্য প্রমাণ করে তাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সাম্প্রদায়িকতা।”

Advertisements

অন্যদিকে, বিজেপি শুভেন্দুর মন্তব্যের পক্ষে সাফাই গেয়েছে। দলের এক নেতা বলেন, “শুভেন্দু পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই মন্তব্য করেছেন। পহেলগাঁও হামলার পর কাশ্মীরে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।” তবে, এই ব্যাখ্যা তৃণমূল বা অন্য বিরোধী দলগুলির কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। ” কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও (Kalyan Banerjee)বলেন, “শুভেন্দু এই ধরনের মন্তব্য করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছেন। তিনি হিন্দু-মুসলিম বিভেদ সৃষ্টি করে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

কিন্তু বাঙালি জনগণ এই বিভেদের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করবে।” তিনি শুভেন্দুর এই মন্তব্যকে ‘দেশবিরোধী’ বলেও অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, “কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেখানে যাওয়া থেকে মানুষকে নিরুৎসাহিত করা মানে ভারতের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত হানা।”সামাজিক মাধ্যমে এই বিতর্ক তীব্র আকার ধারণ করেছে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee) ঠিকই বলেছেন। শুভেন্দুর মন্তব্য পাকিস্তানের সুরে সুর মেলানোর মতো।

এটা বিজেপির সাম্প্রদায়িক মুখোশ খুলে দিয়েছে।” অন্যদিকে, বিজেপি সমর্থকরা দাবি করেছেন, “শুভেন্দু কেবল নিরাপত্তার কথা বলেছেন। তৃণমূল এটাকে রাজনৈতিক রঙ দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শুভেন্দুর এই মন্তব্য ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক মেরুকরণ তীব্র করতে পারে।

ভারতীয় বায়ুসেনা পাবে ‘ডাবল বুস্টার’, দুটি দারুণ যুদ্ধবিমানের বিশাল অফার দিল রাশিয়া

একজন বিশ্লেষক বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী এবং তৃণমূলের মধ্যে এই তীব্র বাকযুদ্ধ রাজ্যের রাজনীতিকে আরও উত্তপ্ত করবে। তবে, এই ধরনের মন্তব্য ভারতের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য ক্ষতিকর।” এই বিতর্কের প্রেক্ষিতে কাশ্মীরে পর্যটন এবং ভারতের জাতীয় ঐক্য নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি,(Kalyan Banerjee) শুভেন্দুর মন্তব্য কেবল রাজনৈতিক স্বার্থে নয়, বরং দেশের সংহতির উপর আঘাত হানার চেষ্টা। অন্যদিকে, বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তাদের দল পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। এই বিতর্ক আগামী দিনে কীভাবে রাজনৈতিক সমীকরণকে প্রভাবিত করে, তা দেখার বিষয়।