ফের বিতর্কে হুমায়ুন কবীর, মৃত্যুর আশঙ্ক!

হুমায়ুন কবীরের ( Humayun Kabir ) বিতর্কিত ( controversy) মন্তব্যের পর দলের শৃঙ্খলা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। শোকজ পত্র জমা…

Humayun Kabir On Babri Masjid Claim For The Construction Of A New Babri Masjid In West Bengal

short-samachar

হুমায়ুন কবীরের ( Humayun Kabir ) বিতর্কিত ( controversy) মন্তব্যের পর দলের শৃঙ্খলা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। শোকজ পত্র জমা দেওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুর্শিদাবাদে ফিরে সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলে তিনি তার মতামত পরিষ্কার করেছেন। শনিবার বহরমপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “এই জেলাতে অনেক চক্রান্তকারীদের বাস,” যা একদিকে তার রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছে, অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের ভেতরে বিভাজন ও অস্থিরতার প্রতিফলন।

   

এটা উল্লেখযোগ্য যে, হুমায়ুনের বক্তব্যের পর তৃণমূল কংগ্রেসের শৃঙ্খলা কমিটি তাকে শোকজ করে। দলের শৃঙ্খলা নিয়ে মন্তব্য করায় তাকে দলের নীতি ভঙ্গকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। শোকজ পাওয়ার পর তিনি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে লিখিত প্রতিবেদন জমা দেন, তবে তার সেই প্রতিবেদনও দলের ভিতরে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। হুমায়ুনের এমন মন্তব্য দলের শৃঙ্খলার প্রতি তাঁর অসন্তোষকেই প্রকাশ করেছে।

এছাড়া, তিনি আগে একটি সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করেছিলেন, সেখানে তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনো মন্তব্য করতে পারছিলেন না। কিন্তু শনিবার ফের একবার সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে হুমায়ুন বলেন, “এখানে অনেক চক্রান্তকারী রয়েছে, যারা আমার সঙ্গে থাকলে পিছন থেকে চলে যায়।” তার এই বক্তব্যে দলের ভিতরের কিছু নেতাদের প্রতি ক্ষোভ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি আরও বলেন, “আমি সতর্ক আছি, এবং সতর্কভাবে চলব। তবে যতদিন উপরের সাহায্য থাকবে, ততদিন আমাকে সহজে মারতে পারবে না।” এতে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান আরও দৃঢ় হয়ে ওঠে।

হুমায়ুন মুর্শিদাবাদ জেলা নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “এখানে অনেকেই আমাকে হুমকি দেয়, তবে আমি তাদের মতো হয়ে যেতে চাই না। যদি কেউ এসে সেই চেষ্টা করে, তাদের অবস্থাও ঠিক তেমন করেই হবে।” তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের প্রতি একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠান। এই মন্তব্যের পর, জেলা পুলিশ প্রশাসন তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করে এবং তার নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা কমিয়ে দেয়। বর্তমানে তিনি দু’জন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে চলছেন।

হুমায়ুন তার সংগঠনের কাজের প্রসঙ্গে বলেন, “আমি আজ পর্যন্ত সংগঠনে যা কাজ করেছি, তা নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাইনি। তবে সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে আমি তাদের কথা শুনি এবং তাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করি।” এটি থেকে স্পষ্ট যে, তিনি দলের ভেতরের সমালোচনার বিষয়ে চুপ থাকতে রাজি নন এবং তার কর্মের জন্য কখনোই প্রশংসা বা স্বীকৃতি পাননি, এমনটা তার মন্তব্য থেকে প্রতিফলিত হয়।

বহরমপুরে সংবাদ মাধ্যমের সামনে হুমায়ুন আরও বলেন, “মানুষের জন্য কাজ করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য, এবং আমি কখনোই এই লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হব না।” তার এই বক্তব্য একদিকে তার রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি নিষ্ঠা প্রকাশ করেছে, অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে তার অসন্তোষ পরিষ্কার করে।

হুমায়ুনের এই মন্তব্য তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরমহলে বেশ আলোচনার সৃষ্টি করেছে। তার একদিকে দলের শৃঙ্খলা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, অন্যদিকে তার রাজনৈতিক সংগঠন এবং জনগণের পাশে থাকার অঙ্গীকার, রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তার এই বক্তব্য ভবিষ্যতে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য এক নতুন সংকট সৃষ্টি করতে পারে, কারণ তার বক্তব্যের মাধ্যমে দলের ভিতরের রাজনীতির অস্থিরতার ইঙ্গিত মিলছে। এই পরিস্থিতি দলের জন্য দীর্ঘমেয়াদে কী পরিণতি বয়ে আনবে, তা সময়ই বলবে।