ভারতবর্ষ যেমন বিস্ময়ের দেশ, তেমন ই মেধার (Sultana)। চাইল্ড প্রডিজি ভারতবর্ষের বুকে নতুন নয়। স্বামী বিবেকানন্দ থেকে শুরু করে রামানুজন। আবার তেমনি সংগীতের ক্ষেত্রে ভারতের গর্ব জাকির হোসেন কিংবা চিত্রশিল্পী পিকাসো। এরা সকলেই চাইল্ড প্রডিজি বা সোজা বাংলায় বিষ্ময় শিশু। এঁরা এদের শৈশব থেকেই মানুষের কাছে ছিলেন বিস্ময়। পেয়েছিলেন জন্মগত বিশেষ ক্ষমতা যা আর পাঁচটা শিশুর সাধারণত থাকেনা।
হাওড়ার উলুবেড়িয়ার কাশমূল গ্রামের সুলতানা, বয়স মাত্র ১ বছর ৬ মাস। এই বয়েসেই সে দেশের সেরা। তার হাতে উঠে এসেছে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডের খেতাব। সুলতানার ক্ষমতা সম্পর্কে জানলে অবাক হতে হয়। এই বয়েসেই সুলতানা গড়গড় করে বলতে পারে মানব শরীরের দশটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নাম। এক থেকে দশ পর্যন্ত সংখ্যা বাংলা এবং ইংরেজিতে বলতে পারে সুলতানা।
সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা, এই টুকু বয়েসেই সুলতানা ৭০ টি ইংরেজি শব্দ বাংলায় ট্রান্সলেট করতে পারে, তাও আবার পরিষ্কার উচ্চারণে। এবার প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে সুলতানা শিখল এত কিছু? এর পেছনেও কৃতিত্ব মা আকলিমার। তিনিই খেলার ছলে মেয়েকে এইসব শিখিয়েছেন এবং সুলতানা তার কম্পিউটার মেমোরিতে গেঁথে নিয়েছে এই শিক্ষা।
সত্যজিৎ রায়ের সেই গান টা মনে আছে। ‘ঘরে আছে পোলাপান এক খান, কচি তারা কথা ফোটে নাই।’ সুলতানার মা আকলিমা খাতুন কথোপকথনের সময় জানিয়েছেন সুলতানা কথা বলতে শিখেছে মাত্র ১১ মাস বয়েসে। সবচেয়ে বড় কথা এইটুকু বয়েসেই সুলতানার উচ্চারণ বেশ স্পষ্ট। আকলিমা আরও জানিয়েছেন প্রথম থেকেই সুলতানার এই প্রখর স্মৃতিশক্তি তিনি এবং সুলতানার বাবা মেহতাবুদ্দিন মোল্লা লক্ষ্য করেন।
পেশায় প্রাইভেট স্কুল শিক্ষিকা আকলিমা জানিয়েছেন তিনি মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই স্কুলে যান। এবং বাচ্চাদের সঙ্গে সঙ্গে সুলতানাও তার প্রখর স্মৃতিশক্তিতে সেই স্কুল শিক্ষা আত্মস্থ করে। না শিখেই কলম ধরতে জানা সুলতানা এখন শিখছে বাংলা মাসের নাম।
আকলিমা বলেন সুলতানার এই জন্মগত ক্ষমতা দেখে তাদের ও ইচ্ছে হয়েছিল যাতে সুলতানার নাম গিনেস বুকে দেওয়া যায়। ঠিক সেই মত ১৭ জুন তারিখে তারা ইন্ডিয়া বুকের ফর্ম ফিলাপ করেন। গিনেসবুক সংস্থা সুলতানার এই আশ্চর্য ক্ষমতার প্রমান হিসেবে চেয়েছিল কিছু সাম্প্রতিক ভিডিও।
সেই ভিডিও গুলি দেখেই ইন্ডিয়া বুক সংস্থা ২০জুন তারিখে সুলতানাকে যোগ্য হিসেবে নির্বাচিত করে। আজ ১৫ জুলাই অবশেষে সুলতানার হাতে এসে পৌঁছেছে এই বিশেষ পুরস্কার। স্বভাবতই আকলিমা এবং মেহতাবুদ্দিন ভীষণ উচ্ছসিত এই এক রত্তি মেয়ের দেশ জোড়া খ্যাতিতে। আকলিমা জানিয়েছেন তারা মেয়ের প্রতি আরও যত্ন নেবেন এবং চেষ্টা করবেন সুলতানা যেন তার ভবিষ্যৎ জীবনে দেশের গর্ব হতে পারে।
শেষ মুহূর্তের গোলে হার, ডার্বির আগে চাপে ইস্টবেঙ্গল
সুলতানা বড় হবে। জীবনে ভবিষ্যতে কোন পথে হাটবে তা সময়ই ঠিক করবে। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্য, এই এক রত্তি মেয়ের স্মৃতি শক্তি এবং তার চেয়েও বেশি কৃতিত্ব আকলিমা এবং মেহতাবুদ্দিনের প্রচেষ্টা। আসলে পৃথিবীতে কিছু ঘটনার ঠিক যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া যায়না। এই বিস্ময় শিশু ও ঠিক তেমন ই, ভারতবর্ষের বুকে এক বিরল উদাহরণ।