নয়া মাইলফলক ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ এর, পশ্চিমবঙ্গে ৬ কোটি টেলিমেডিসিন পরামর্শ

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের অভিনব টেলিমেডিসিন উদ্যোগ ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ (Health-Indicator) একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক অর্জন করেছে। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে শুরু হওয়া এই পরিষেবা এখন পর্যন্ত ৬…

Health-Indicator news mile stone

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের অভিনব টেলিমেডিসিন উদ্যোগ ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ (Health-Indicator) একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক অর্জন করেছে। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে শুরু হওয়া এই পরিষেবা এখন পর্যন্ত ৬ কোটি টেলিমেডিসিন পরামর্শ প্রদান করেছে। বর্তমানে এই পরিষেবা রাজ্যের ১০,০০০-এরও বেশি ‘সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র’-এর মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে, যা দূরবর্তী ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবাকে আরও সহজলভ্য করেছে। এই বার্তা এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেল থেকে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন এই উদ্যোগের মাধ্যমে নিউরোলজি, নেফ্রোলজি, কার্ডিওলজি, অনকোলজি এবং পেডিয়াট্রিক্সের (Health-Indicator) মতো বিশেষায়িত চিকিৎসা পরিষেবাও এখন রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায় উপলব্ধ। এই মাইলফলক উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিকাল স্টাফ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়েছে।‘

   

স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ (Health-Indicator) পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় একটি বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। এই উদ্যোগ শুরু হয়েছিল কোভিড-১৯ মহামারীর সময়, যখন শারীরিকভাবে হাসপাতালে যাওয়া অনেকের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে রোগীরা তাদের বাড়ি থেকে বা নিকটবর্তী সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন।

এই পরিষেবা বিশেষত গ্রামীণ এলাকার মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে, যেখানে উন্নত চিকিৎসা সুবিধা সাধারণত পাওয়া যায় না।রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ বর্তমানে রাজ্যের প্রত্যন্ত জেলাগুলিতে ১০,০০০-এরও বেশি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।

এই কেন্দ্রগুলি গ্রামীণ (Health-Indicator) এবং শহরাঞ্চলের মানুষের জন্য একটি সেতু হিসেবে কাজ করছে, যেখানে রোগীরা টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারেন। এই কেন্দ্রগুলিতে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ, ভিডিও কনফারেন্সিং সুবিধা এবং প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন, যারা রোগীদের সঠিকভাবে চিকিৎসা পরামর্শ পেতে সহায়তা করেন।

এই উদ্যোগের সাফল্যের পিছনে রয়েছে রাজ্য সরকারের দূরদর্শী নীতি এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টা। পশ্চিমবঙ্গের (Health-Indicator)মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মাইলফলক উপলক্ষে বলেন, “‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি গর্বের বিষয়। এই উদ্যোগ রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে বিশেষায়িত চিকিৎসা পৌঁছে দিয়েছে।

আমি আমাদের চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিকাল স্টাফ এবং এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলকে অভিনন্দন জানাই।” তিনি আরও বলেন, এই উদ্যোগ ভারতের অন্যান্য রাজ্যের জন্য একটি মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে।‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’-এর মাধ্যমে শুধু সাধারণ চিকিৎসা নয়, নিউরোলজি, নেফ্রোলজি, কার্ডিওলজি, অনকোলজি এবং পেডিয়াট্রিক্সের মতো বিশেষায়িত চিকিৎসা পরিষেবাও প্রদান করা হচ্ছে।

উদাহরণস্বরূপ, (Health-Indicator) উত্তর দিনাজপুর বা পুরুলিয়ার মতো প্রত্যন্ত জেলার বাসিন্দারা এখন তাদের নিকটবর্তী সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে সরাসরি পরামর্শ করতে পারছেন। এই পরিষেবার ফলে হাসপাতালে দীর্ঘ যাত্রা এবং অপেক্ষার সময় অনেকাংশে কমেছে।স্বাস্থ্য দফতরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ প্রকল্পের সাফল্যের পিছনে প্রযুক্তি এবং মানবসম্পদের সমন্বয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

Advertisements

তিনি বলেন, “আমরা প্রতিটি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে উচ্চগতির ইন্টারনেট এবং আধুনিক সরঞ্জাম স্থাপন করেছি। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা রোগীদের সঠিকভাবে সেবা দিতে পারেন।” এই প্রকল্পের মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসার খরচও অনেকাংশে কমেছে, কারণ তাদের শহরে এসে ব্যয়বহুল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে না।

এই উদ্যোগের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো এর নারী কেন্দ্রিক স্বাস্থ্যসেবা। গ্রামীণ এলাকার অনেক মহিলা, যারা সাধারণত হাসপাতালে যেতে দ্বিধাবোধ করেন, তারা এখন সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে নিজেদের স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলছেন। এছাড়া, শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও এই প্রকল্প উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।

‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ (Health-Indicator) প্রকল্পের সাফল্যে রাজ্য সরকারের ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচারের উন্নয়নও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক এবং ৫জি সংযোগের সম্প্রসারণ এই পরিষেবাকে আরও কার্যকর করেছে। স্বাস্থ্য দফতরের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক বছরে টেলিমেডিসিন পরামর্শের সংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা এই প্রকল্পের জনপ্রিয়তা এবং কার্যকারিতার প্রমাণ।

ভারতীয় বায়ুসেনার বিপজ্জনক অস্ত্র হবে এই সিক্রেট ড্রোন, -60 ডিগ্রিতেও চালাবে ধ্বংসযজ্ঞ

এই মাইলফলক (Health-Indicator) উপলক্ষে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “স্বাস্থ্যইঙ্গিত আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠেছে। আমরা ভবিষ্যতে এই পরিষেবাকে আরও সম্প্রসারিত করব এবং আরও বিশেষায়িত চিকিৎসা পরিষেবা যুক্ত করব।” তিনি আরও জানান, রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের আওতায় আরও সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।

‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’-এর (Health-Indicator) এই সাফল্য পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এই উদ্যোগ শুধুমাত্র গ্রামীণ মানুষের জন্যই নয়, শহরাঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্যও স্বাস্থ্যসেবাকে আরও সহজলভ্য করেছে। এই মাইলফলক উদযাপনের মাধ্যমে রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে এই ধরনের উদ্ভাবনী পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে।