সরকারি পরিকাঠামোর নজরদারিতে ওটিপি ভিত্তিক অনলাইন অ্যাপ আনতে চলেছে নবান্ন

সরকারি (Government) পরিকাঠামোর (Infrastructure) নজরদারিতে ওটিপি (OTP) ভিত্তিক (based) অনলাইন (online) অ্যাপ (App) আনতে চলেছে নবান্ন। রাজ্য সরকারের (Government) এই উদ্যোগটি কেবলমাত্র পরিকাঠামোর (infrastructure) রক্ষণাবেক্ষণই…

nabbnna

short-samachar

সরকারি (Government) পরিকাঠামোর (Infrastructure) নজরদারিতে ওটিপি (OTP) ভিত্তিক (based) অনলাইন (online) অ্যাপ (App) আনতে চলেছে নবান্ন। রাজ্য সরকারের (Government) এই উদ্যোগটি কেবলমাত্র পরিকাঠামোর (infrastructure) রক্ষণাবেক্ষণই নয়, বরং নীচুতলার প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে আরও কার্যকরী ও দায়বদ্ধ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সঠিক পরিকাঠামো উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত করা সম্ভব। এই পরিকল্পনা শুধু সরকারী পরিকাঠামোকে নতুন করে উজ্জীবিত করবে না, বরং সেই অঞ্চলের মানুষের সেবা প্রদানকে আরও দ্রুত ও কার্যকরী করবে।

   

এখন পর্যন্ত যে সমস্যাগুলি দেখা দিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ছিল সরকারি পরিকাঠামো সম্পর্কিত তথ্যের অভাব এবং সঠিক সময়ে পরিদর্শন না হওয়া। অনেক সময় কর্মকর্তারা আগাম পরিকল্পনা ও তথ্য ছাড়াই পরিদর্শনে যান, এবং এতে পরিকাঠামোর প্রকৃত অবস্থা সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এই নতুন মোবাইল অ্যাপের (online app) মাধ্যমে তা সহজ হয়ে যাবে।

প্রতিটি কর্মী যখন নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিকাঠামো পরিদর্শন করবেন, তখন তাদের জন্য পূর্বে নির্ধারিত কোনও দিকনির্দেশনা বা সূচী থাকতে হবে না। তারা সরাসরি, অপ্রত্যাশিতভাবে পরিদর্শন করতে পারবেন, যা আসল অবস্থা জানার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অ্যাপটি তোলানো ছবি ও রিয়েল-টাইম জিও-ট্যাগিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করবে যে, কোনো তথ্য মিথ্যা বা ভুলভাবে প্রদান করা হচ্ছে না। অর্থাৎ, প্রতিটি পরিদর্শন সঠিকভাবে নথিভুক্ত হবে এবং পরবর্তী সময়ের জন্য নির্ভরযোগ্য একটি তথ্য ভান্ডার তৈরি হবে।

পরিদর্শন শেষে ত্রি-রঙ সংকেতের মাধ্যমে পরিকাঠামোর বর্তমান অবস্থা রিপোর্ট করা হবে। অ্যাপে দেওয়া সবুজ সংকেত তার মানে, পরিকাঠামো এখন পর্যন্ত অক্ষত রয়েছে, সংস্কারের কোনো প্রয়োজন নেই। হলুদ সংকেত সংকেত দেয় যে কিছু ছোটখাটো সংস্কারের প্রয়োজন, এবং লাল সংকেত দেয় যে, দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন। এই রিপোর্ট সরাসরি বিডিও (ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার), এসডিও (সাব-ডিভিশনাল অফিসার), এবং জেলা স্তরের কর্মকর্তাদের কাছে যাবে। এর পর, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যথাসম্ভব দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেবেন।

অ্যাপটির মাধ্যমে কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে এবং প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যাবে। কিছু ক্ষেত্রে, সরাসরি অর্থ বরাদ্দ করাও সহজ হয়ে যাবে, কারণ বড় ধরনের প্রকল্পের জন্য যে অর্থ বরাদ্দের সময়সীমা এবং প্রশাসনিক অনুমোদন প্রক্রিয়া রয়েছে তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। তবে ছোটখাটো সংস্কারের জন্য মহকুমা স্তরের অফিসারদের কাছে ইতিমধ্যেই অর্থ বরাদ্দ রয়েছে, যা তাঁরা দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজে লাগাতে পারবেন।

রাজ্যের প্রশাসন আশা করছে, এই নতুন ব্যবস্থা চালু হলে প্রতি বিভাগে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারবেন, যাতে মানুষের সমস্যা এবং তাদের প্রয়োজনীয় সেবা সহজেই মেটানো যায়। এমনকি, সরকারের এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সরকারী পরিকাঠামোর প্রতি বিশ্বাস আরও বাড়বে, এবং তাদের পরিষেবার প্রতি নতুন আগ্রহ তৈরি হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে সরকারি পরিকাঠামো সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে আরও স্পষ্টতা আসবে। পরিকাঠামোর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা যখন স্বচ্ছভাবে জানা যাবে, তখন সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো দ্রুত পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ শুরু করতে পারবে। প্রশাসনিক স্তরে দীর্ঘসূত্রিতা ও ধীরগতির কারণে যে সমস্ত কাজ আটকে ছিল, তা দ্রুত সমাধান হবে।

এছাড়া, রাজ্য সরকার ব্লক, মহকুমা, জেলা এবং রাজ্য স্তরে নোডাল অফিসার নিয়োগের মাধ্যমে পরিকাঠামো নজরদারির একটি সুসংগঠিত এবং কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থার ব্যবস্থা করছে। এতে করে, সকল স্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবেন এবং একে অপরের কাজের প্রতি নজরদারি রাখবেন। এটি একটি সুসংগঠিত ব্যবস্থা তৈরি করবে যা আরও কার্যকরী ও দায়বদ্ধ হবে।

এই অ্যাপটি যখন পুরোপুরি কার্যকরী হবে, তখন সরকারের জন্য একটি বৃহৎ তথ্য ভান্ডার তৈরি হবে যা সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে। যেমন, পরিকাঠামোর কোন অংশে কোন ধরনের সংস্কার প্রয়োজন, কতটা খরচ হবে, এবং সেই খরচটি কোথা থেকে বরাদ্দ করা যাবে—এগুলি সব নির্ধারণ করা সহজ হবে। প্রশাসনিক স্তরে আরও কার্যকরী পর্যবেক্ষণ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া সরকারী পরিকাঠামোর ভবিষ্যৎ উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হবে।

রাজ্য সরকার আশা করছে, এই পরিকল্পনা সফল হলে, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আরও উন্নত হবে, এবং সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে।