সমবায় সমিতির ১৪ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন শহর সভাপতি শিবনাথ চৌধুরী। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সমবায় সমিতির অর্থ তছরুপ করে গেছেন। গ্রেপ্তারির পর শিবনাথ চৌধুরী দাবি করেছেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে এবং তিনি নির্দোষ। শুক্রবার কৃষ্ণনগর শহরের প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শিবনাথ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রাক্তন বর্ষীয়ান নেতার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের এবং তদন্তের পর এ বিষয়ে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তারের পর, পুলিশ দাবি করেছে যে শিবনাথ চৌধুরী ওই সমিতির পরিচালনায় সঙ্গতিপূর্ণভাবে দুর্নীতি চালিয়ে গেছেন, যার ফলে রাজ্যের একটি বড় অঙ্কের অর্থ তছরুপ হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, চৌধুরী এবং তার সহযোগীরা সমবায় সমিতির বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অর্থ জোগাড় করার প্রক্রিয়ায় অসঙ্গতি ও অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে তছরুপ করেছেন। এই ঘটনায় শিবনাথ চৌধুরীকে একাধিক অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হতে পারে। তবে, গ্রেপ্তারির পর শিবনাথ চৌধুরী তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “এটা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। আমি কিছুই জানি না। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।” বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা আরও বলেন, “বিচার হওয়ার পর সব কিছু পরিষ্কার হবে। আমি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছি। এমন অভিযোগের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।”
এদিকে, কৃষ্ণনগর এলাকার তৃণমূল নেতারা এই ঘটনার সঙ্গে একেবারেই যুক্ত নন বলে দাবি করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন যে, শিবনাথ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে ভুল এবং একে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে অভিহিত করেছেন। এই ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও, অনেকের দাবি, দুর্নীতি এবং তছরুপের ঘটনা যে কোনো রাজনৈতিক দলেরই সদস্যদের মধ্যে ঘটতে পারে। এই ঘটনায় তদন্ত চলছেই এবং শীঘ্রই আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। অন্যদিকে, কৃষ্ণনগরের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। বহু লোকেরা মনে করছেন যে এমন ঘটনা রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে দুর্নীতির পরিবেশ তৈরি করেছে। তারা আশাবাদী যে, আইন প্রতিটি দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা নেবে এবং সাধারণ মানুষের টাকা যাতে কোনোভাবেই তছরুপ না হয় তা নিশ্চিত করবে। এই ঘটনার পর সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপনার দিকে আরও মনোযোগ দেওয়ার দাবি তুলেছেন স্থানীয় নেতারা, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।