দফায় দফায় বৃষ্টি ও ডিভিসি জল ছাড়ায় হাওড়ার (Howrah) উদয়নারায়ণপুরে প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দামোদরের জল বাঁধ টপকে উদয়নারায়ণপুরের ডিভুশুট, কুরচি শিবপুর, টোকাপুর, হোদল, হরিহরপুর, শিবানীপুর সহ একাধিক গ্রামে ঢুকতে শুরু করেছে। ডিভুশুট রাস্তার ওপর দিয়ে বইছে জল। চাষের জমি জলের তলায় চলে যাওয়ার আশঙ্কা। পুজোর মুখে বন্যার আতঙ্কে ভুগছেন গ্রামবাসীরা। এলাকায় পৌঁছেছে NDRF-এর টিম। ত্রাণ শিবিরে যাওয়ার জন্য় প্রশাসনের তরফে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। আজও দুর্গাপুর ব্য়ারেজ থেকে জল ছাড়া হয়েছে। সকাল ৮টায় ১ লক্ষ ১ হাজার ৭৫০ কিউসেক জল ছাড়া হয়। সকাল ৯টায় জল ছাড়ার পরিমান কমে হয় ৯৯ হাজার ৩৫০ কিউসেক।
গত দুদিনে ঝাড়খণ্ড থেকে (পাঞ্চেত এবং মাইথন) দুলক্ষ কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হয়েছে। মঙ্গলবার দামোদরের সেই জল দুর্গাপুর পৌঁছলে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ডিভিসি ১লক্ষ ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়ে। এতেই পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়াতে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পুজোর মুখে বন্যা ঠেকাতে আগেভাগেই সতর্ক নবান্ন।
টানা বৃষ্টি এবং জলাধারগুলি থেকে জল ছাড়ার কারণে রাজ্যের অন্তত সাতটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি এবং হাওড়ার জেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। পরিস্থিতির দিকে ক্রমাগত নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন।
আপাতত রাজ্যে বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা নেই। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, চলতি সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গ জুড়েই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ইতিমধ্যে একাধিক জেলা প্লাবিত। মালদহের গাজল এবং বামনগোলা ব্লকের বেশ কিছু জায়গায় পুনর্ভবা নদীর জল ঢুকেছে। প্লাবনের আশঙ্কায় রাত জেগে কাটাতে হচ্ছে বামনগোলার কুপাদহ গ্রামের মানুষদের। বৃষ্টিতে পুরুলিয়ার বেশ কয়েকটি জায়গাতেও জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের কংসাবতী নদীতে জলস্তর বৃদ্ধির ফলে ডুবেছে সাঁকো। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মুণ্ডেশ্বরীতেও জলের তোড়ে বাঁশের সাঁকো ভেঙে জনজীবন বিপর্যস্ত। বীরভূমে লাভপুর ব্লকের কাঁদরকুলা, জয়চন্দ্রপুর-সহ ১৫টি গ্রামে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে। এর পরে জলস্তর বৃদ্ধি পেলে বাইরের জগতের সঙ্গে সংযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসীরা।