নকল ব্র্যান্ডেড চাল চক্রের হদিস, মিলছে ঝাড়খণ্ড পর্যন্ত নেটওয়ার্ক

Bangladesh to Import 5 Lakh Tonnes of Rice, Prices Rise in West Bengal

বর্ধমান: বাজারে দুধ, মধু, ডিমের পর এবার চালও নকল (Fake Rice Scam)! হ্যাঁ, একেবারে ঠিক শুনেছেন। পূর্ব বর্ধমানের রাইসমিল ঘিরে এবার এমনই গুরুতর অভিযোগ সামনে এসেছে। শুধু তাই নয়, এই নকল চাল নাকি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের মোড়কেই বিক্রি করা হচ্ছে—যাতে সাধারণ মানুষ একেবারেই ধরতে না পারেন চালটি আসল না নকল।

Advertisements

সম্প্রতি বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদর অঞ্চলের এক নামী রাইসমিলের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ জানানো হয়েছে। মিল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তাদের ব্র্যান্ডের নাম ও ট্রেডমার্ক ব্যবহার করে চালের বস্তা তৈরি করে বিভিন্ন রাজ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তারা জেলা রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনে লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন।

একই বস্তা, একই নাম—তবে চাল নকল
মিল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই নকল চালের প্যাকেট দেখলে প্রথমে বোঝার উপায় নেই সেটি আসল না নকল। বস্তার রং, ব্র্যান্ডের নাম, এমনকি দেওয়া ফোন নম্বর—সবই হুবহু এক। শুধু কৌশল করা হয়েছে রাইসমিলের নাম লেখার ক্ষেত্রে। পুরো নাম না লিখে, তার বদলে শুধু আদ্যক্ষর ব্যবহার করে চালানো হচ্ছে এই প্রতারণা।

চালের সঙ্গে প্রতারণা কোনও নতুন বিষয় নয়। তবে এবার ফের তা সামনে এল বর্ধমানের রায়না থানার গোপালপুরে অবস্থিত একটি পুরনো ও জনপ্রিয় রাইসমিলকে ঘিরে। জানা গিয়েছে, বিগত এক বছর ধরেই তাদের ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করে বাইরে নকল চাল বিক্রি হচ্ছে। এই চাল মূলত যাচ্ছে পশ্চিম বর্ধমান ও ঝাড়খণ্ডে।

হাতেনাতে প্রমাণ পেতে ঝাড়খণ্ড অভিযান
বর্ধমান মিলের কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের চাষথানা এলাকার একটি চাষ মার্কেটে যান। সেখানে গিয়ে তারা নিজেরাই প্রত্যক্ষ করেন—একই সঙ্গে আসল ও নকল দুই ধরনের চালই বিক্রি হচ্ছে। পরে মিল কর্তৃপক্ষ সেই বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের চাপে ফেলেন। এরপর, ওই বিক্রেতারা স্থানীয় থানায় গিয়ে লিখিত বিবৃতি দেন—তারা আর নকল চাল বিক্রি করবেন না।

Advertisements

রাইস মিলের দাবি ও পরবর্তী পদক্ষেপ
মিলের ম্যানেজার জানিয়েছেন, “আমাদের চালের বস্তায় স্পষ্টভাবে আমাদের রাইস মিলের নাম, ফোন নম্বর ও ট্রেডমার্ক থাকে। এমনকি FSSAI অনুমোদনও রয়েছে। কিন্তু এই নকল চালের বস্তায় শুধু নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে মিলের নাম লেখা হচ্ছে। আর বাকি সমস্ত তথ্য হুবহু নকল করা হচ্ছে।”

এই ধরনের ঘটনায় শুধু গ্রাহকরাই প্রতারিত হচ্ছেন না, বরং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অনুমোদনপ্রাপ্ত আসল ব্যবসায়ীরাও। তারা চাইছেন, প্রশাসন দ্রুত এই ধরনের নকল রাইস চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

চালের মতো দৈনন্দিন খাদ্যদ্রব্যে যদি এমন প্রতারণা চলতে থাকে, তবে সাধারণ মানুষের পক্ষে স্বাস্থ্যের দিক থেকে বিপদের সম্ভাবনা তো থাকেই, পাশাপাশি আসল ব্যবসায়ীরাও তাদের প্রাপ্য হারাবেন। প্রশাসনের উচিত এই বিষয়ে তৎপর হয়ে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া।