ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান থেকে বাদ আরামবাগ, বন্যা রোধে নয়া প্রকল্পের দাবি

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের (Ghatal Master Plan) আওতায় নেই আরামবাগ, খানাকুল। এই নাম বাদ পড়ার ফলে, এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে, খানাকুল বাসী মনে…

Exclusion of Arambag from Ghatal Master Plan: Demand for New Flood Control Project

short-samachar

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের (Ghatal Master Plan) আওতায় নেই আরামবাগ, খানাকুল। এই নাম বাদ পড়ার ফলে, এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে, খানাকুল বাসী মনে করছেন, যদি এই মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় তাদের এলাকা অন্তর্ভুক্ত না হয়, তবে তারা বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে না। এই পরিস্থিতিতে, ‘খানাকুল বাঁচাও কমিটি’ নামক একটি সংগঠন ময়দানে নেমেছে এবং তারা দাবি জানিয়েছে, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের সঙ্গে খানাকুলকে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। অথবা, আলাদা একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে খানাকুল ও আরামবাগকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করা হোক।

   

খানাকুলের মধ্যে রয়েছে ২৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ১৭৮টি গ্রাম, যেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বন্যা। বর্ষাকালে, বিশেষ করে দ্বারকেশ্বর, মুণ্ডেশ্বরী ও রূপনারায়ণের জলস্রোতে এলাকায় বিপর্যয় ঘটে। এছাড়া, ২০২৪ সালের বন্যায় খানাকুলের ক্ষয়ক্ষতির পর, এলাকার মানুষ আরও চিন্তিত হয়ে পড়েছে।

এলাকার লোকজনের অভিযোগ, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলে খানাকুলের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছাবে। রূপনারায়ণ নদী একাই বহন করে থাকে শিলাবতী, দারকেশ্বর ও মুণ্ডেশ্বরীর জল। এই নদী থেকে পলি অপসারণ বা ড্রেজিংয়ের কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই, বন্যার সময় এই নদীর জল মজুদ করার ক্ষমতা কমে যায় এবং এলাকার বড় অংশ প্লাবিত হয়।

খানাকুল বাঁচাও কমিটির সদস্য অমিত আঢ্য বলেন, ‘খানাকুলকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে হলে একটি আলাদা মাস্টারপ্ল্যান অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, এবং রাজনৈতিক নেতাদেরও এই বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে।’

অন্যদিকে, জগৎপুর এলাকার বাসিন্দা সৌমেন দোলুই বলেন, ‘আমরা রূপনারায়ণের তীরবর্তী এলাকায় বসবাস করি, এবং আমরা জানি, বন্যার সময়ে আমাদের কত কষ্টের মধ্যে জীবন কাটাতে হয়। তাই, খানাকুল বিধানসভার জন্য একটি আলাদা মাস্টারপ্ল্যানের প্রয়োজন।’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, যদি আলাদা মাস্টারপ্ল্যান করা সম্ভব না হয়, তবে অন্তত আরামবাগ মহকুমাকে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের সাথে যুক্ত করতে হবে। তারা মনে করেন, একমাত্র এই উপায়েই আরামবাগ এবং খানাকুলকে বন্যার হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব।

এলাকার মানুষদের দাবি, প্রশাসন যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তবে আগের মতো বন্যার ক্ষয়ক্ষতি প্রতিবারই বাড়বে। খানাকুল ও আরামবাগের মানুষের জন্য বন্যা প্রতিরোধে উন্নত পরিকল্পনা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

২০২৪ সালের বন্যা খানাকুল ও আরামবাগের জন্য এক বিরাট বিপর্যয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে গিয়েছিল। মানুষজন নিজের জীবন বাঁচাতে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছিল। এই কারণে, স্থানীয় বাসিন্দারা আরও সতর্ক হয়ে উঠেছেন এবং তারা বুঝতে পেরেছেন, ভবিষ্যতে যেন এমন ক্ষয়ক্ষতি না হয়, সে জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

এভাবে, খানাকুল ও আরামবাগের মানুষ তাদের এলাকায় বন্যা প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে চলেছেন। তারা মনে করছেন, এই দাবির প্রতি প্রশাসন সচেতন হলে এবং গুরুত্ব দিলে আগামী দিনে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।