দুর্গাপুরে তৃণমূল নেতার রহস্যমৃত্যু! কী অভিযোগ তুলছে মৃতের পরিবার ?

দুর্গাপুর, ২০ সেপ্টেম্বর: পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা (Trinamool Leader) নিখিল নায়েকের (৬৫) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শনিবার বিকেলে…

Trinamool Leader

দুর্গাপুর, ২০ সেপ্টেম্বর: পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা (Trinamool Leader) নিখিল নায়েকের (৬৫) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শনিবার বিকেলে তাঁর বাগানবাড়ি থেকে দেহটি উদ্ধার হয়, এবং তৃণমূলের একাংশ কর্মী ও সমর্থকরা দাবি করছেন, এটি আত্মহত্যা নয়, বরং খুন।

ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দুর্গাপুর থানার পুলিশ, তবে মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে।জানা গেছে, নিখিল নায়েক কমলপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে তিনি কংগ্রেসে থাকলেও পরে টিএমসি-তে যোগ দেন এবং এলাকায় তাঁর যথেষ্ট জনপ্রিয়তা ছিল।

   

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে নিখিল নায়েক তাঁর বাগানবাড়িতে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন। এরপর তিনি আর নিজের বাড়িতে ফিরে যাননি। বিকেলে বাগানবাড়ির একতলার ছাদে ওঠার সিঁড়ির ঘরের নীচে তাঁর ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে দুর্গাপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।দেহ উদ্ধারের সময় তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকরা পুলিশের কাজে বাধা দেয়।

তাঁদের দাবি, নিখিল নায়েককে খুন করা হয়েছে, এবং যথাযথ তদন্ত ছাড়া দেহ সরানো যাবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়। সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেন। তাঁর উপস্থিতিতে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। দুর্গাপুরের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসিপি) সুবীর রায় বলেন, “দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর স্পষ্ট হবে। তদন্ত চলছে।” পুলিশ এখন দুপুরে বাগানবাড়িতে উপস্থিত বন্ধুদের খোঁজ করছে।নিখিল নায়েকের মৃত্যুকে ঘিরে তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকরা খুনের অভিযোগ তুললেও পুলিশ এখনও এই দাবি নিশ্চিত করেনি। স্থানীয়রা বলছেন, নিখিল নায়েক ছিলেন একজন জনপ্রিয় নেতা, যিনি গ্রামের উন্নয়ন ও সমাজসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন।

Advertisements

তাঁর এই রহস্যজনক মৃত্যু এলাকায় ধোঁয়াশা তৈরি করেছে। তৃণমূলের একাংশ কর্মী মনে করছেন, এর পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। তবে পুলিশ এই ধরনের অভিযোগের বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।এই ঘটনা দুর্গাপুরে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে। ঘটনাস্থলে প্রচুর তৃণমূল কর্মী ও সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন, এবং তারা ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়েছে। একজন নেটিজেন লিখেছেন, “নিখিল দা ছিলেন আমাদের এলাকার গর্ব। তাঁর মৃত্যুর সত্য উদঘাটন হোক।” আরেকজন লিখেছেন, “দুর্গাপুরে এমন ঘটনা আগে কখনও শুনিনি। পুলিশের উচিত দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া।”এই ঘটনা দুর্গাপুরে টিএমসি-র স্থানীয় স্তরে শোকের ছায়া ফেলেছে।

পশ্চিমবর্ধমান জেলায় এর আগেও রাজনৈতিক নেতাদের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, যেমন পাণ্ডবেশ্বরে নদিয়া ধীবরের আত্মহত্যা। এই ধরনের ঘটনা রাজনৈতিক নেতাদের উপর মানসিক চাপ এবং নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশ্ন তুলছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা সিসিটিভি ফুটেজ এবং সাক্ষীদের জবানবন্দি পরীক্ষা করছে।

এশিয়া কাপের মাঝপথে সিরিজ হারল ভারত, বিশ্বরেকর্ড স্মৃতির

মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেছেন, “আমরা নিখিল নায়েকের পরিবারের পাশে আছি। সত্য বেরিয়ে আসবে।”ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এই ঘটনার রহস্য উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তৃণমূল নেতার মৃত্যু নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বজায় রয়েছে, এবং পুলিশের উপর চাপ রয়েছে দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করার। নিখিল নায়েকের মৃত্যু দুর্গাপুরের রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে দীর্ঘদিনের জন্য প্রভাব ফেলবে। স্থানীয়রা এখন ন্যায়বিচারের অপেক্ষায়।