Durga Puja: দুর্গা মূর্তির রূপ খোলে মুসলিমদের তৈরি চুলের বাহারে

মাথার চুল মহিলাদের সৌন্দর্য্যের একটা বড় দিক। দুর্গাপ্রতিমা সহ বিভিন্ন প্রতিমার মাথার চুল তৈরী করছে হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের পার্বতীপুর গ্রাম। ওই গ্রামে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে কৃত্রিম…

মাথার চুল মহিলাদের সৌন্দর্য্যের একটা বড় দিক। দুর্গাপ্রতিমা সহ বিভিন্ন প্রতিমার মাথার চুল তৈরী করছে হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের পার্বতীপুর গ্রাম। ওই গ্রামে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে কৃত্রিম চুল তৈরী করছে প্রায় ২০০ মুসলিম পরিবার। যা কলকাতার কুমোরটুলি সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যে পৌঁছে যায়।

হাওড়া জেলার ডোমজুড় ব্লকের পার্বতীপুর গ্রামে রাস্তার দু’ধারে চোখে পড়বে সারি দিয়ে রঙিন পাট শুকোতে দেওয়া রয়েছে। ওগুলো আসলে পাটের চুল। দুর্গা পুজোর জন্য কাজ চলছে জোর কদমে। পার্বতীপুর গ্রামের ৮০ ঘর মানুষ এই জীবিকার সঙ্গে যুক্ত। এই ৮০ জন ওস্তাগারের অধীনে রয়েছেন গড়ে কুড়িজন করে শ্রমিক।

   

এই ব্যবসার প্রধান কাঁচামাল পাট যা হাওড়া আর পাশের জেলা হুগলি থেকেই মূলত আসে। তারপর সেই পাট জমিতে সেদ্ধ করে রং করা হয়। রং করার পরে রোদে শুকোতে দেওয়া হয়। দুর্গাপূজার সময় এই ব্যবসার চাহিদা থাকে তুঙ্গে। তবে সেই সময় বর্ষাকাল কাজেই পাট শুকনো করার সময় বরুণ দেবের সঙ্গে একটা মানসিক প্রতিযোগিতা চলতে থাকে। বৃষ্টি নামলেই পন্ড হয় সকল পরিশ্রম।

পাটের চুল ভালোভাবে শুকিয়ে যাওয়ার পর নির্দিষ্ট মাপ অনুযায়ী কেটে চুল গুলিকে পেরেকের চিরুনির মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার করা হয়।ওস্তাগাররা নিপুন হাতে পাটকে চুলের রূপ দেন। দেবদেবীর কেশসজ্জায় এই মুসলিম ওস্তাগাররা জড়িয়ে রয়েছেন কয়েক পুরুষ ধরে।

পেরেকে চিরুনি দিয়ে চুল বাছাই হয়ে যাবার পর চুলগুলোকে কোকড়ানো করার জন্য পাট কাটিতে পেঁচিয়ে রাখতে হয় অনেকটা সময়। এরপর সেগুলোকে আবার রঙে ডুবিয়ে রাখতে হয়। পুরো প্রক্রিয়াটাই বেশ লম্বা। শুকনো করার জন্য লাগে অনেক জায়গা। যে জায়গার অভাব দিন দিন প্রকট হয়ে উঠেছে।

এক চুল ব্যবসায়ীর কথায় একটা সময় মাঠে ঘাটে ফেলে রেখেই পাটের চুল শুকতেন তারা। এখন সে সুযোগ কমে আসছে। তার পূর্বপুরুষের হাত ধরে পার্বতীপুরে এই পাটের চুলের কারবার গড়ে উঠেছিল বলে জানান।তবে পরবর্তী প্রজন্ম এত পরিশ্রম আর ময়লা কাজ করতে আগ্রহী নয়। আমি যে কয়দিন আছি চলছে। তারপর আমাদের ব্যবসা বন্ধই হয়ে যাবে।

ফরিদুল ইসলাম চান না তাঁর ছেলেমেয়ে এই পেশায় আসুক। তবে পরবর্তী প্রজন্মের ইচ্ছাটা অন্যরকম। তারা চায় অন্য মজুর দিয়ে এই ব্যবসা টেনে নিয়ে যেতে। নিজের হাতে কাজ করতে গেলে এই পেশায় বড় নোংরা ঘাটতে হয়।