মুর্শিদাবাদে এক ভবনের দুই উদ্বোধন ঘিরে শুরু রাজনৈতিক চর্চা

Political Controversy: মুর্শিদাবাদের রানীনগরে থানার নতুন ভবন মান্নান হোসেন স্মৃতি সদনকে (Mannan Hossain Bhavan Murshidabad) ঘিরে শুরু হয়েছে চর্চা। কারণ, একই ভবনের দুই বার উদ্বোধন…

Mannan Hossain Bhavan Murshidabad

Political Controversy: মুর্শিদাবাদের রানীনগরে থানার নতুন ভবন মান্নান হোসেন স্মৃতি সদনকে (Mannan Hossain Bhavan Murshidabad) ঘিরে শুরু হয়েছে চর্চা। কারণ, একই ভবনের দুই বার উদ্বোধন হওয়ার ঘটনায় সৃষ্টি হয়েছে জোর জল্পনা (inauguration controversy)। বৃহস্পতিবার ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ আবু তাহের খান, রানীনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেন, বিডিও কৃষ্ণ নির্মাল্য ভট্টাচার্য, এসডিপিও শুভম বাজাজসহ আরও অনেক আধিকারিক। তবে, এই একই ভবনটি এর আগে চলতি বছরের মার্চ মাসে উদ্বোধন করেছিলেন বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী।

দুই উদ্বোধনের কারণ কী?
এই দুই উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। একদিকে স্থানীয় মানুষদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলেও চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এই ঘটনা। বিষয়টি সম্পর্কে বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে সাংসদ আবু তাহের খান বলেন, “এর আগে যদি উদ্বোধন হয়ে থাকে, সেটি ছিল একটি ঘরের। কিন্তু আজ পুরো বিল্ডিংটি নামকরণ ও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হলো। এটির প্রকৃত নাম দেওয়া এবং পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার শুরু করার জন্যই আজকের এই উদ্যোগ।”

   

বিধায়কের প্রতিক্রিয়া
রানীনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেন আরও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, “পূর্ববর্তী উদ্বোধনের সময় স্থানীয় বিধায়ক, মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ বা এলাকার কোনও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। শুধুমাত্র বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে দিয়ে উদ্বোধন করানো হয়। এটি অত্যন্ত অবমাননাকর এবং অযৌক্তিক। সেই কারণেই আজ আবার নতুন করে এই ভবনের নামকরণ এবং উদ্বোধন করা হলো।”

রাজনৈতিক সংঘাতের ইঙ্গিত
এই দুই উদ্বোধনের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের ইঙ্গিত স্পষ্ট। মুর্শিদাবাদ জেলা বরাবরই কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মঞ্চ। প্রাক্তন সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী, যিনি কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতা, এবং বর্তমান তৃণমূল সাংসদ ও বিধায়কদের মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই ঠান্ডা। এমন পরিস্থিতিতে রানীনগরের এই ভবনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ মনে করছেন, একই ভবনের দুই বার উদ্বোধন অপ্রয়োজনীয় এবং জনসাধারণের অর্থ অপচয়। অন্যদিকে, কিছু মানুষ এটিকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন এবং ভবনের ব্যবহারে কোনও অসুবিধা হবে না বলেও মন্তব্য করছেন।

আর্থ-সামাজিক গুরুত্ব
মান্নান হোসেন স্মৃতি সদন একটি বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য ভবন হিসেবে তৈরী করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন প্রশাসনিক এবং স্থানীয় সভার ব্যবস্থা থাকবে। এই ভবনের উদ্বোধন এলাকাবাসীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এরকম দ্বৈত উদ্বোধন ভবিষ্যতে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার প্রতি মানুষের আস্থা কিছুটা হলেও কমাতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

একই ভবনের দুইবার উদ্বোধন রাজনৈতিক এবং সামাজিক স্তরে প্রশ্ন তুলেছে। সাংসদ ও বিধায়কের বক্তব্যে বিষয়টি সাময়িকভাবে সামাল দেওয়া হলেও স্থানীয় মানুষ এবং রাজনৈতিক মহলে এই বিতর্কের রেশ থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং সব পক্ষকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার উপর জোর দিতে হবে। তবেই এরকম বিতর্ক এড়ানো সম্ভব হবে।