খড়্গপুর: ১ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিন শহিদ দিবস হিসাবে পালন করে তৃণমূল কংগ্রেস৷ অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যখন সেই দিন উত্তরকন্যা অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তখন রাজনীতির উলটো স্রোতে হাঁটলেন প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দলীয় কোনও কর্মসূচিতে নয়, নিজের ছন্দে খড়গপুর চষে বেড়ালেন তিনি।
মঙ্গলবার সকালে খড়গপুরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দিলীপ। সেখানেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয় তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেতা দেবকে নিয়ে। জবাবে কটাক্ষ ঝরে পড়ে দিলীপের গলায় (Dilip Ghosh slams Dev)। বলেন, “মেদিনীপুরের ছেলে, ভালো ছেলে। কিন্তু এমন নিষ্কর্মা ভালো ছেলে হয়ে লাভ কী? প্রতিবার ভোটে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রতিশ্রুতি দেন, আর পরে কিছুই করেন না।”
এর পরেই দিলীপ আরও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন
“কার চাপে দেব এখনও রাজনীতি করছেন? ও তো এবার ভোটে দাঁড়াতেই চায়নি। তৃণমূল জোর করে দাঁড় করিয়েছে। আমি তো বলছি, দম থাকে তো বেরিয়ে এসো। না হলে ইস্তফা দাও।”
প্রসঙ্গত, দেব ওরফে দীপক অধিকারী ঘাটাল থেকে টানা তিনবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে লড়তে তিনি প্রথমে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন না হওয়া এবং চলচ্চিত্রজগতের ব্যস্ততার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে শেষপর্যন্ত রাজি হন এবং রেকর্ড ব্যবধানে জয় পান।
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান
মমতা পরে ঘোষণা করেন, কেন্দ্র অর্থ না দিলে রাজ্যই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের ভার নেবে। সেইমতো প্রকল্প এগোলেও এখনও বাস্তবায়নে সময় লাগছে। দেব নিজেও ঘন ঘন এলাকায় যান না, যার সুযোগ নিয়েই বিজেপি বহুদিন ধরেই তাঁকে নিশানা করছে।
২১ জুলাই শহিদ দিবসের সমাবেশে যোগ দিতে দেব স্কটল্যান্ড থেকে উড়ে এলেও ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি দেখতে না যাওয়ায়, নতুন করে তাঁকে আক্রমণ শানালেন দিলীপ ঘোষ।
তৃণমূল হুমকি দেয়
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ প্রশ্ন উঠছে এখন, দিলীপ কি তবে দেবকে বিজেপিতে টানার ইঙ্গিত দিলেন? বললেন,
“তৃণমূল ওকে হুমকি দেয়, সিনেমা বন্ধ করে দেবে, প্রোডাকশনে বাধা দেবে। কিন্তু যদি সত্যিই সৎ থাকো, দম থাকে, তবে বেরিয়ে এসো।”
দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে মেদিনীপুরের রাজনীতিতে। দেব নিজে এখনও এ নিয়ে মুখ খোলেননি, তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই মন্তব্য নিছক কটাক্ষ নয়-এর পেছনে রয়েছে বিজেপির সুপ্ত বার্তা।