দক্ষিণ-পশ্চিম ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘মান্থা’ (Cyclone Montha) ক্রমেই শক্তি বাড়াচ্ছে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের সোমবার বিকেলের তথ্য অনুযায়ী, মান্থা বর্তমানে বিশাখাপত্তনম থেকে প্রায় ৫৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে এবং চেন্নাই থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছে।
আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, মঙ্গলবার সকালে এই ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী হয়ে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে (Severe Cyclonic Storm) পরিণত হবে। এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যা বা রাতের দিকে এটি অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপত্তনম ও কলিঙ্গপত্তনমের মধ্যবর্তী উপকূলে ল্যান্ডফল করতে পারে। ল্যান্ডফলের সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মান্থার কেন্দ্র বাংলার উপরে না থাকলেও, তার পরোক্ষ প্রভাব দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় পড়বে বলে সতর্ক করেছে হাওয়া অফিস।
২৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশেষত উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এই সময়ে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে সাগর উত্তাল থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
৩১ অক্টোবরের মধ্যে উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে বৃষ্টির পরিমাণ ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
এছাড়াও মালদা ও উত্তর দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ২৯ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলায় বজ্রবিদ্যুৎসহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে, সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া।
মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে বুধবার ও বৃহস্পতিবার শহরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে বেশি।
এই সময়ে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমে যাবে এবং আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
ঘূর্ণিঝড় মান্থার গতিবিধি বিবেচনা করে দক্ষিণ ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হাওয়া অফিস। ২৮ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে কোনো ট্রলার বা নৌকাকে যাত্রা না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে গভীর সমুদ্রে রয়েছেন, তাঁদের সোমবারের মধ্যেই উপকূলে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় প্রশাসন ইতিমধ্যেই দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। এনডিআরএফ ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম মোতায়েন করা হয়েছে একাধিক জেলায়।


