বিরোধী জোটে জল ঢালল ডিভিসি!

ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি। জল ছেড়েছে ডিভিসি (DVC)। দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা বানভাসি।  আর এতেই স্পষ্ট বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার (INDI alliance) ফাটল। কারণ ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন…

ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি। জল ছেড়েছে ডিভিসি (DVC)। দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা বানভাসি।  আর এতেই স্পষ্ট বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার (INDI alliance) ফাটল। কারণ ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানাও সিল করেছে নবান্ন। দুই মুখ্যমন্ত্রীর দলই বিজেপি বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার শরিক।

বঙ্গোপসাগরে তৈরি নিম্নচাপ বাংলা হয়ে ঝাড়খণ্ডে গিয়েছিল। লাগাতার বৃষ্টি। ফুঁসল নদী। ভরল বাঁধ। ঝাড়খণ্ডের একাধিক বাঁধের জল ছাড়া হয়। রেকর্ড পরিমাণ জল ছাড়ে ডিভিসি। তাদের মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধারের ছাড়া জলে ভাসছে বাংলার বিস্তীর্ণ এলাকা।

   

দুর্যোগে দুর্ভোগ। এতেই বাড়ছে রাজনীতির উত্তাপ। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ম্যান মেড বন্যা। কেন্দ্র পরিচালিত ডিভিসি পরিকল্পনা করেই অতিরিক্ত জল ছেড়েছে। রাজ্য সরকারের অনুরোধ শোনেনি।

ডিভিসির পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকেও নিশানা করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, তিনি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে তিন বার ফোন করেন। জল না ছাড়ার অনুরোধও করেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি।

বন্যার বদলা নিতে ঝাড়খণ্ড সীমানা সিল করেছে বাংলা। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং পুরুলিয়ার সব চেকপোষ্ট বন্ধ। যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচল করলেও আটকানো হচ্ছে পণ্যবাহী গাড়ি। বাংলার উপর নির্ভরশীল ঝাড়খণ্ডের উপর চাপ বাড়ছে।

ঝাড়খণ্ডের শাসক দস ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। আর বাংলার শাসক তৃণমূল। দুই দলই বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার শরিক। দুই বন্ধু দলের সরকারের দূরত্ব বাড়িয়েছে দুর্যোগ। লোকসভা ভোটের আগে হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। যা নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ায় বিরোধীরা। তৃণমূলও সেই দলে ছিল। কিন্তু মাস খানেকের মধ্যেই সব গোলমাল।

এখানেই প্রশ্ন, এভাবে চললে কতদূর এগোবে বিরোধীদের ইন্ডিয়া? কেন্দ্রে অবিজেপি সরকার গঠনের লক্ষ্য পূরণ হবে? সরকার গঠনের পর এই ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হলে তখন কী হবে? সরকার গঠন দূরের কথা, চব্বিশের ভোটে বিজেপিকে যে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে সেই জোর কি থাকবে? এমন নানা প্রশ্ন ঘুরছে রাজনৈতিক মহলে।

বাংলা-ঝাড়খণ্ড বা মমতা-হেমন্ত বিবাদ নিয়ে এখনও চুপ ইন্ডিয়ার শরিকরা। কোনও নেতা মুখ খোলেননি। বিজেপিও জল মাপছে। তবে এটা যে তাদের বড় অস্ত্র হয়ে গেল তা বলাই বাহুল্য। এই অস্ত্রে তারা কতটা শান দেবে সেটাই এখন দেখার।

ঝাড়খণ্ড সীমানা তিন দিনের জন্য সিল করার কথা বলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেই আশা। কিন্তু এই তিন দিনে ঝাড়খণ্ডের ভালো ক্ষতি হবে। তা হয়তো পূরণ হয়ে যাবে। কিন্তু বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার কি ক্ষতিপূরণ সম্ভব? এটাও এখন বড় প্রশ্ন।

চব্বিশের লোকসভা ভোটে বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট ছিল না। বামেরাও আলাদা লড়ে। ভোটে বিজেপির আসন কমেছে। তারপর বিরোধী ঐক্য মজবুত হতে দেখা যায়। এর মাঝেও বিভিন্ন শরিকদলের মতানৈক্য প্রকাশ্যে আসে। এবার সরাসরি সংঘাতে তৃণমূল- জেএনএম। সামনে তেমন বড় ভোট নেই, এটাই যেন বাঁচোয়া।