CPM to TMC: বিধায়কের সড়ক শিলান্যাসে গিয়ে সিপিএম কর্মীর তৃণমূলে যোগ

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন ২ ব্লকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস হল আজ। সাবড়া থেকে মনোহরপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পাকা রাস্তা নির্মাণের কাজ…

CPM Leader Joins TMC

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন ২ ব্লকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস হল আজ। সাবড়া থেকে মনোহরপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পাকা রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে, যার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৭ কোটি টাকা। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম চন্দ্র প্রধান। তবে, এই দিনটি শুধু রাস্তার শিলান্যাসের জন্যই নয়, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল। অনুষ্ঠানে সিপিএমের একজন প্রবীণ আদিবাসী নেতা দশরথ সরেন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন, যা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শিলান্যাস অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিধায়ক বিক্রম চন্দ্র প্রধান বলেন, “আমাদের চেষ্টা যদি এলাকার মানুষকে খুশি করে, তাহলে আমি তাতেই সন্তুষ্ট। আদিবাসী ভাই-বোনেরা দীর্ঘদিন ধরে বামফ্রন্ট সরকারের হয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু তারা এখন দেখছেন, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য যেভাবে নিজে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন এবং বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তা অতুলনীয়।” তিনি আরও যোগ করেন, “রাস্তাঘাটের উন্নতি, পাড়ায় পাড়ায় রেশন—এসব দেখে আদিবাসী নেতা দশরথ সরেন উদ্বুদ্ধ হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। এই যোগদান তৃণমূলের জন্য বাড়তি শক্তি যোগ করেছে।”

   

এদিনের অনুষ্ঠানে দশরথ সরেন ছাড়াও সিপিএম থেকে বেশ কয়েকজন কর্মী তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। নবাগতদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন বিধায়ক বিক্রম চন্দ্র প্রধান, দলের ব্লক তৃণমূল সভাপতি শেখ ইফতেখার আলি এবং জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি নির্মাল্য চক্রবর্তী। এই যোগদানের মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেস আরও শক্তিশালী হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিধায়ক বিক্রম চন্দ্র প্রধান এই প্রসঙ্গে বলেন, “আগামী দিনে বিজেপিকে আর এলাকায় দেখা যাবে না। মানুষ এখন উন্নয়নের পক্ষে, আর তৃণমূলই তাদের ভরসা।”

Advertisements

দশরথ সরেন তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর নিজের মত প্রকাশ করে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে চারদিকে উন্নয়নের কাজ করছেন, তা দেখে আমি সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। আমি চাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী দিনে আরও উন্নয়ন করুন এবং এলাকার মানুষের জীবন আরও ভালো হোক।” তিনি আরও জানান, তৃণমূলের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প তাকে আকৃষ্ট করেছে এবং তিনি এখন দলের একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করতে চান।

পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন এলাকায় রাস্তাঘাটের উন্নয়ন দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। সাবড়া থেকে মনোহরপুর পর্যন্ত এই ১৫ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা যাতায়াতে সুবিধা পাবেন। এছাড়া, এই প্রকল্প এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতিতেও ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিধায়ক বিক্রম চন্দ্র প্রধান জানান, “এই রাস্তা শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে। আমরা চাই, প্রতিটি গ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছাক।”

রাজনৈতিক মহলের মতে, দশরথ সরেনের মতো একজন প্রভাবশালী আদিবাসী নেতার তৃণমূলে যোগদান এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তি আরও বাড়িয়ে তুলবে। দীর্ঘদিন ধরে সিপিএমের সমর্থক হিসেবে পরিচিত দশরথ সরেনের এই সিদ্ধান্ত বাম শিবিরে ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অন্যদিকে, তৃণমূলের নেতারা এটিকে দলের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে দেখছেন।

এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস গ্রামীণ এলাকায় উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করছে। দশরথ সরেনের মতো নেতারা যখন দলবদল করছেন, তখন এটি স্পষ্ট যে তৃণমূলের প্রতি সাধারণ মানুষের ভরসা বাড়ছে। বিধায়ক বিক্রম চন্দ্র প্রধানের মতে, এই যোগদান শুধু একটি রাজনৈতিক ঘটনা নয়, বরং এলাকার উন্নয়নের প্রতি তৃণমূলের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।

এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত দলীয় কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই উন্নয়ন প্রকল্প ও রাজনৈতিক যোগদানকে স্বাগত জানিয়েছেন। আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেস আরও শক্তিশালী হয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দলের নেতারা।