গর্গ-কৌশিকের জেলার স্কুলে বন্ধ সরস্বতী পুজো

সরস্বতী পুজো (Saraswati Puja) বন্ধকে ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধল হুগলির হরিপালে। স্থানীয় একটি প্রাইমারি স্কুলে দীর্ঘদিন ধরেই সরস্বতী পুজো অনুষ্ঠিত হয়নি বলে অভিযোগ।…

Saraswati Puja west bengal with girl

সরস্বতী পুজো (Saraswati Puja) বন্ধকে ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধল হুগলির হরিপালে। স্থানীয় একটি প্রাইমারি স্কুলে দীর্ঘদিন ধরেই সরস্বতী পুজো অনুষ্ঠিত হয়নি বলে অভিযোগ। এবারও পুজোর আবেদন জানানো হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজনীয়তার কথা জানায়। কিন্তু প্রশাসন বিষয়টি স্কুলের উপর ছেড়ে দেয়, ফলে শেষ পর্যন্ত পুজো করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়দের দাবি, সংখ্যালঘুদের আপত্তির কারণেই স্কুলে সরস্বতী পুজো বন্ধ রাখা হয়েছে।

এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্কুলে সরস্বতী পুজো বন্ধ থাকার খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয়দের একাংশ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তাঁরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন, যা দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।

   

দুই শীর্ষ নেতার জেলাতেই পুজো বন্ধ!
বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা এই এলাকা বাংলাপক্ষের অন্যতম শীর্ষ নেতা গর্গ চট্টোপাধ্যায় ও কৌশিক মাইতির জেলা। গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের আদি বাড়ি হুগলির জিরাটে, আর কৌশিক মাইতি আরামবাগের বাসিন্দা। বাংলাপক্ষ সংগঠন সরস্বতী পুজোর পক্ষে জোরালো সওয়াল করে থাকে, এমনকি স্কুলে পুজো চালু রাখার দাবিতেও সরব হয়েছে। কিন্তু তাঁদের নিজের জেলার এক স্কুলে পুজো বন্ধ থাকায় প্রশ্ন উঠছে।

প্রশাসনের দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থান
সরস্বতী পুজোর অনুমতি প্রসঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথমে প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজনীয়তার কথা জানায়। কিন্তু হরিপাল থানা ও বিডিও অফিস জানিয়ে দেয়, স্কুল কর্তৃপক্ষ চাইলে তারা নিজে থেকেই পুজোর আয়োজন করতে পারে, এতে প্রশাসনের কোনো হস্তক্ষেপ প্রয়োজন নেই।
প্রশাসনের এই দ্বৈত অবস্থান নিয়েই স্থানীয়দের ক্ষোভ। তাঁরা মনে করছেন, বিষয়টি ইচ্ছাকৃতভাবে জটিল করা হয়েছে, যাতে পুজো না করা যায়।

বাংলাপক্ষের প্রতিক্রিয়া
সরস্বতী পুজো বন্ধের ঘটনায় বাংলাপক্ষও কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সংগঠনের এক সদস্য বলেন, “সরস্বতী পুজো বাংলার ঐতিহ্যের অংশ। যদি এই ধরণের ঘটনায় প্রশাসন নীরব থাকে, তাহলে আমরা আন্দোলনে নামব।”

এই পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলেও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, হিন্দু উৎসবগুলিকে পরিকল্পিতভাবে কোণঠাসা করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের দাবি ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি
হরিপালের বহু বাসিন্দা স্কুলে সরস্বতী পুজোর দাবি জানিয়ে বলেছেন, “এই স্কুলে আগে সরস্বতী পুজো হতো, এখন কেন হচ্ছে না? আমাদের কাছে এর সঠিক উত্তর চাই।”

এই ইস্যু ক্রমশ বড় আকার নিচ্ছে। বাংলাপক্ষ এই ঘটনা নিয়ে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাতে পারে, এমন ইঙ্গিত মিলেছে। অন্যদিকে, স্কুল কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট মন্তব্য করেনি। এই বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে হরিপালে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা এখন দেখার বিষয়।