জেল খাচ্ছে, চুরি করছে তারাই এখন তৃণমূলের মুখপাত্র, বিস্ফোরক তৃণমূল পুরপ্রধান

জেল খাচ্ছে, চুরি করছে তারাই এখন তৃণমূলের মুখপাত্র, বিস্ফোরক দাবি করলেন তৃণমূল পরিচালিত পুরসভায় পুরপ্রধান সুবল কুমার মান্না কাঁথি : বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভঙ্গিমায়…

TMC

জেল খাচ্ছে, চুরি করছে তারাই এখন তৃণমূলের মুখপাত্র, বিস্ফোরক দাবি করলেন তৃণমূল পরিচালিত পুরসভায় পুরপ্রধান সুবল কুমার মান্না

কাঁথি : বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভঙ্গিমায় সহমহিয়া দেখা গেল তৃণমূল পরিচালিত কাঁথি পুরসভার পুরপ্রধান সুবল কুমার মান্না। খোদ দলের মুখপাত্র, রাজ্যের মন্ত্রী জেলা নেতৃত্বকে এক হাত নিলেন বিতর্কিত কাঁথি পুরসভার পুরপ্রধান সুবল কুমার মান্না। তৃণমূলের দলে চোর ডাকাত, সিপিএম থেকে আগত ব্যক্তিরা এখন প্রথম সারিতে। কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী’কে প্রণাম করেও যদি পথ যায়, তাহলে আমার কোন আফসোস নেই। পারলে শিশিরবাবুর জন্য সর্বশ্ব দিতে পারি! কাঁথির সুবলবাবুর কথায় ” একলব্য গুরুদক্ষিণা দিতে, নিজের আঙ্গুল টুকু কেটে দিয়েছিল, আমি না হলে আমার গুরুকে সামান্য চেয়ার টুকু দিলাম! পুরপ্রধানের এমন বক্তব্যের পর রাজনীতিতে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। তাহলে কি কাঁথির পুরপ্রধান এবার বিজেপিতে যোগ দেবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে! পূর্ব মেদিনীপুর থেকে তৃণমূল দলের পতন হবে বলে ভবিষ্যৎবাণীও করেন পুরপ্রধান। তাঁর সাফ দাবি ” পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে উত্থান নিয়ে যায়, এবার দেখবেন কিভাবে পতন নিয়ে যাবে। আগামী দিনে কোন দলে থাকবো সেটা পরে বিবেচনা করবো, এখন আমি দলের কাউন্সিলর “।

সোমবার সকালে কাঁথি পুরসভায় ১৬ জন কাউন্সিলরের সম্মতি কমে পুরপ্রধান সুবল কুমার মান্নার বিরুদ্ধে অনাস্থা জমা হয়। তারপরেই প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কার্যত রাজনীতি তো থেকে জেলা নেতৃত্ব’কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন।

এদিন কাঁথি পুরসভা পুরপ্রধান সুবল কুমার মান্না বলেন ” একবারে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য, যারা চুরি করে বড় বড় বিবৃতি দিচ্ছে জেল খেটেছে! আমি আমার গুরু’কে প্রণাম করতে গিয়ে, রাজনীতি শিকার হতে হল। একেবারে ঘৃণ্য রাজনীতির শিকার হলাম। আমি চেয়েছিলাম মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’কে স্বচ্ছ কাঁথি পুরসভা উপহার দিতে! আজকে ২২ মাস ৭ দিন হল কাঁথি পুরসভা থেকে ১ টাকাও গ্রহণ করিনি। কাঁথির মানুষের উন্নতির জন্যই কাউন্সিলর হিসেবে যতটুকু সহযোগিতা করায় নিশ্চয়ই করবো। পুরপুধানের পথ গেলে কি হবে? কাউন্সিলরার পথটা তো থাকবে! দলের পুরপ্রধানকে অপসারণ করে, আতশবাজি ফাটিয়ে ও আবির খেলছে ! এরা কোন দল করেন ভাবুন “?

শিশির অধিকারী’কে গুরু বলে সম্বোধন বক্তব্যে অনড় পুরপ্রধান! তার দাবি ” শিশিরবাবুকে প্রণাম প্রসঙ্গে বলেন একলব্য তার গুরুদক্ষিণা দিয়েছিল তার আঙ্গুল কেটে। আমি না হলে আমার গুরু’কে প্রণাম করতে গিয়ে চেয়ার খোয়ালাম, এতে আমার কোন দুঃখ নেই। এতে আমার গর্ব হচ্ছে। আমার বাবা মা নেই, এখনো বেঁচে আছেন ( শিশির অধিকারী) , পিতার মতো শ্রদ্ধা করি। তাকে প্রণাম করতে গেলে আমার যদি সর্বশ্ব যায় তাতেও আমি কুণ্ঠিত বোধ করব না। বাবা ও মা শিখিয়েছে বয়স্ক লোকদের প্রণাম করবি। প্রাক্তন কাউন্সিলরদের সম্মান করবে শিশিরবাবুর শিখিয়ে ছিলেন “।

দলের কাউন্সিলরদের উপর ক্ষোভ উগড়ে দেন। তিনি বলেন ” দলের কাউন্সিলর সারাক্ষণ চুরি লেগে থাকতো। আমি তাদের সহযোগিতা করিনি। কেন না পুরসভাতে আমি না খাঙ্গুগা, না খানে দুঙ্গা ! অনেক তথ্য রয়েছে। কাঁথিতে আগুন জ্বলবে। আদালতে মামলা করেছি, বুধবার দিন শুনানি হবে। যে রায় দিবে মাথা পেতে নেবো! প্রথম দিন থেকেই পুরসভা চালাতে কাউন্সিলররা সহযোগিতা করছে না “।

দলের মুখপাত্র থেকে মন্ত্রী ও জেলা নেতৃত্বকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। চোর ডাকাত ও জেল খাটা আসামী বলে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন ” কাঁথি সংগঠনীক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পীযুষ কান্তি পণ্ডা’কে এখানে যাকে বসিয়েছে, সিপিএমের মালকে এনে বসিয়ে দিয়েছে। তিনি আবারও তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দলকে যেভাবে বুঝিয়েছে, সেটাই হয়েছে। সিপিএমের একেবারে কট্টর মাল ছিল। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষ কান্তি পণ্ডা’কে ক্ষমা চেয়ে চিঠি পাঠিয়ে ছিলাম। মান্যতা পায়নি, তার জন্য কোন দুঃখ নেই “।

নাম না করে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ’কে কটাক্ষ। তিনি বলেন ” ভূ-ভারতে কোথাও দেখিনি প্রণাম করতে গিয়ে পথ চলে যাচ্ছে! যারা জেল খাচ্ছে, চুরি করছে তারাই এখন মুখপাত্র। তাদের বালাই কিছু নেই “। রাজ্যের কারাদপ্তরের মন্ত্রী অখিল গিরি’কে কটাক্ষ করে বলেন রামনগরে বিজেপি নেতার কান ফুসফুস করছে, তাতেই রাজ্য নেতৃত্ব দেখতে পাচ্ছে না। এর জন্য ক্ষোভ বা বেদনা নেই “।