ভারতবর্ষের বুকে আজও কিছু মানুষ জীবিত আছেন যাদের স্মৃতিতে দেশভাগের যন্ত্রনা অমলিন (Communist Party)। শুধু মাত্র তারাই জানেন দেশভাগের পরে ভিটে মাটি ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়ে পূর্ব বঙ্গ ছেড়ে আসার জ্বালা। শুধু তারাই নন দেশভাগের ফলশ্রুতিতে ঘটা তিনটি আলাদা দেশ এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের অবনতির ফল ভুগছেন প্রায় সমস্ত ভারতীয়। দেশভাগ ইস্যুতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নাম খুব সঙ্গত কারণেই উঠে আসে। তবে এবার এই ইস্যু নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিলেন প্রখ্যাত লেখক এবং গবেষক চন্দ্রচূড় ঘোষ।
চন্দ্রচূড়ের লেখা উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে একটি ‘কোনানড্রাম’, যা নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস কে কেন্দ্র করে একটি গবেষণামূলক লেখা। চন্দ্রচূড় তার সমাজ মাধ্যমের পোস্টে প্রমান সহকারে বলেছেন যে দেশভাগের নেপথ্যে শ্যামাপ্রসাদের পাশাপাশি রয়েছে কমিউনিস্ট পার্টিও। প্রসঙ্গত বর্তমানে চন্দ্রচূড় গুরুগ্রামের বাসিন্দা হলেও তার পৈতৃক বাড়ি বর্ধমানে। বর্ধমান জেলা যা একসময়কার বামেদের (Communist Party)শক্ত ঘাঁটি ছিল। সেখানকার ভূমিপুত্র হয়ে তিনি এই বিতর্কে ঘৃতাহুতি দিয়েছেন।
তিনি দাবি করেছেন, দেশভাগের পেছনে শ্যামাপ্রসাদের পাশাপাশি কমিউনিস্ট পার্টি (Communist Party)অফ ইন্ডিয়ার (CPI) উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। তিনি লিখেছেন, আমাদের প্রত্যেকের উচিত ইতিহাসটা খতিয়ে দেখা ।” তিনি জানিয়েছেন, জ্যোতি বসু বঙ্গভাগের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, কারণ তিনি কমিউনিস্ট পার্টির দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে চলেছিলেন।
২০ জুন, ১৯৪৭-এর ভোটাভুটির আগে সিপিআই-এর (Communist Party) বৈঠকে তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল প্রথমত বিধানসভার যৌথ অধিবেশনে অবিভাজিত বঙ্গের পাকিস্তান কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলিতে যোগদানের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া, দ্বিতীয়ত অবিভাজিত বঙ্গের ভারতের কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলিতে যোগদানের বিষয়ে ভোটদানে বিরত থাকা, এবং তৃতীয়ত হিন্দু ও মুসলিম আসনের সদস্যদের পৃথক অধিবেশনে বঙ্গভাগের পক্ষে এবং পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয় কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলিতে যোগদানের পক্ষে ভোট দেওয়া।
চন্দ্রচূড়ের মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে জ্যোতি বসু (Communist Party)শ্যামাপ্রসাদের সঙ্গে বঙ্গভাগের পক্ষে একমত ছিলেন।এই পটভূমি থেকে তিনি এই বিতর্কিত দাবি করে রাজনৈতিক মহলে ঝড় তুলেছেন। তিনি বলেন, “জ্যোতিবাবু নির্দলীয় সদস্য ছিলেন না, তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে ভোট দিয়েছিলেন। আজ তাঁর অনুসারীরা শ্যামাপ্রসাদকে গালাগালি না দিলে তাদের ভাত হজম হয় না।”
এই মন্তব্য বামপন্থী (Communist Party) মহলের তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে জ্যোতি বসু বঙ্গভাগের পক্ষে ছিলেন না, তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত মেনেছিলেন, যা পাকিস্তানে যোগদানের বিরুদ্ধে ছিল।” তবে, চন্দ্রচূড় তাঁর পোস্টে ঐতিহাসিক নথির উল্লেখ করে বলেছেন, সিপিআই-এর সিদ্ধান্ত ছিল কৌশলগত, যাতে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অংশ থাকে।
ইউক্রেনকে আমেরিকান ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ দেবেন ট্রাম্প
এই বিতর্ক বাংলার রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক মহলে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, চন্দ্রচূড়ের এই দাবি বামপন্থীদের ঐতিহাসিক ভূমিকা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। (Communist Party)অনেকে মনে করেন, এটি শ্যামাপ্রসাদের ভূমিকাকে নতুন আলোয় দেখার সুযোগ, আবার কেউ কেউ এটিকে ইতিহাসের অপব্যাখ্যা হিসেবে দেখছেন। এই ঘটনা বাংলার জনমানসে দেশভাগের স্মৃতিকে আবারও জাগিয়ে তুলেছে, এবং ভবিষ্যতে এই বিতর্ক আরও তীব্র হতে পারে।