মিলন পণ্ডা, কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি-খেজুরি রাজ্য সড়ক আবারও গরু ও ষাঁড় পাচারের(Cattle Smuggling) অভিযোগে উত্তাল। সোমবার সন্ধ্যায় শেরপুর এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে করে গরু ও ষাঁড় পাচার করার সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা তৎপর হয়ে গাড়িটিকে ঘিরে ধরে এবং পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়িটিতে তিনটি ষাঁড় এবং একটি গরু ছিল। কোনও বৈধ নথিপত্র ছাড়াই এই পশুগুলি পরিবহন করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরেই এলাকায় গরু ও ষাঁড় (Cattle Smuggling) চুরির ঘটনা বেড়েছে। এক বাসিন্দা স্বপন বারিক বলেন, ‘‘বিগত দিনে এলাকায় মন্দিরের আশপাশে যেসব ষাঁড় ঘুরে বেড়াত, এখন তারা নেই। এলাকার গরু ও ষাঁড় চুরি হয়ে পাচার হচ্ছে বলেই সন্দেহ।’’
স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে কাঁথি থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গাড়িটি জব্দ করে। গাড়ির চালক সহ মোট চারজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গরু ও ষাঁড়গুলি (Cattle Smuggling) উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান কাঁথি পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অতনু গিরি এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিরঞ্জন মান্না। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। কাউন্সিলর নিরঞ্জন মান্না বলেন, ‘‘গাড়ির লোকেরা বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। আমরা পুলিশকে খবর দিই। পুলিশ এসে গাড়ি, গরু-ষাঁড় এবং অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে যায়।’’
গাড়ির চালক জানিয়েছে, তারা গ্রাম থেকে গরুগুলি নিয়ে এসেছে, তবে তাদের কাছে কোনও বৈধ নথি নেই। অভিযুক্ত এক ব্যক্তি দাবি করেছে, ‘‘কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম থেকে গরুগুলি কেনা হয়েছে।’’ কিন্তু বৈধ ক্রয়-বিক্রয়ের কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তাঁরা।
কাঁথি থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। গাড়ি থেকে তিনটি ষাঁড় ও একটি গরু উদ্ধার করেছি। গাড়ির চালকসহ মোট চারজনকে আটক করা হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। পশুগুলি কোথা থেকে আনা হয়েছে এবং কোথায় পাচার করার চেষ্টা চলছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
স্থানীয়রা জানান, এই রুট দিয়ে মাঝেমধ্যেই গরু ও ষাঁড় পাচারের ঘটনা ঘটে। এর আগেও একাধিকবার এই ধরনের ঘটনা সামনে এসেছে। তাঁরা প্রশাসনের কাছে স্থায়ী নজরদারি এবং কড়া পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি-খেজুরি রাজ্য সড়ক বরাবরই গরু পাচারকারীদের রুট হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি পশু পাচার বন্ধ করতে প্রশাসন নজরদারি বাড়ালেও, মাঝেমধ্যেই এমন ঘটনা ঘটছে। এবার স্থানীয়দের সজাগ ভূমিকার ফলে বড়োসড়ো পাচারচক্রের ছক ভেস্তে গেল বলে মনে করছেন অনেকে।