শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় বহু প্রতীক্ষিত এসি লোকাল ট্রেন (Bongaon AC Local Train) চালুর আগেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে এই নতুন এসি লোকাল ট্রেন চালু হতে চলেছে বলে রেল সূত্রে খবর। তবে ট্রেনটির স্টপেজ তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে অশোকনগর রোড স্টেশনকেন্দ্রিক যাত্রী মহলে। কারণ, প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করা সত্ত্বেও অশোকনগরে এই ট্রেনের কোনও স্টপেজ রাখা হয়নি। ফলে বহু যাত্রীকে হাবড়া বা অন্য কোনও স্টেশনে গিয়ে এই ট্রেন ধরতে হবে।
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, বনগাঁ থেকে ছাড়ার পর এসি লোকাল ট্রেনটি দাঁড়াবে ঠাকুরনগর, গোবরডাঙ্গা, হাবড়া, দত্তপুকুর, বারাসত, মধ্যমগ্রাম, দমদম ক্যান্টনমেন্ট, দমদম জংশন এবং বিধান নগর রোড স্টেশনে। কিন্তু অশোকনগরবাসীদের ক্ষোভের কারণ পরিসংখ্যান। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের রেল পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অশোকনগর স্টেশনে প্রায় ৩ কোটি ১৭ লক্ষ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। অথচ দত্তপুকুর এবং গোবরডাঙা স্টেশনে প্রায় একই পরিমাণ টিকিট বিক্রি হলেও সেখানে স্টপেজ রাখা হয়েছে। আরও বিস্ময়ের বিষয়, বিরাটি (২ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা) ও চাঁদপাড়া (২ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা) স্টেশনে টিকিট বিক্রি অশোকনগরের তুলনায় কম হলেও সেখানেও ট্রেন থামবে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, কোন যুক্তিতে অশোকনগরকে বাদ দেওয়া হল?
অশোকনগরের বাসিন্দারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন এবং বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। বহু মানুষ মনে করছেন, অশোকনগরের মতো যাত্রীসমৃদ্ধ স্টেশনে এসি লোকাল না থামানো রেলের একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত। স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক ও যাত্রী সংগঠন রেলের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অশোকনগরবাসীদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে তারা বনগাঁ শাখায় যাত্রী পরিষেবার উন্নতির দাবি জানিয়ে আসছেন। এই শাখায় নতুন এসি লোকাল চালুর সিদ্ধান্ত অবশ্যই স্বাগত জানানো হলেও অশোকনগরকে স্টপেজ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া তাঁদের কাছে এক বড় ধাক্কা। অনেক যাত্রী মনে করছেন, অশোকনগরে স্টপেজ থাকলে যাত্রীসংখ্যা আরও বাড়বে এবং রেলের আয়ও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।
যাত্রীদের দাবি, স্টপেজ পুনর্বিবেচনা করা হোক এবং অশোকনগর রোড স্টেশনকেও এই ট্রেনের স্টপেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হোক। ইতিমধ্যেই রেলের কাছে লিখিতভাবে এই বিষয়ে দাবি জানানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বনগাঁ শাখার যাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। অনেকেই মনে করছেন, স্থানীয় মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করেই এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘#StopAtAshoknagar’ হ্যাশট্যাগে প্রচার শুরু হয়েছে। যাত্রীদের বক্তব্য, রেল কর্তৃপক্ষ যদি দ্রুত সিদ্ধান্ত না বদলায়, তবে তারা প্রতিবাদী আন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হবেন।