গলায় গেরুয়া উত্তরীয়। মাথায় গেরুয়া টুপি। তাপপ্রবাহের মাঝে ভোটের প্রচারে অর্জুন সিংয়ের (Arjun Singh) সঙ্গী। বিশেষ নজর কেড়েছে ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থীর টুপি। কারণ গত কয়েকদিন ধরে ভোটের প্রচারে তাঁর মাথায় দেখা গিয়েছে পানামা হ্যাট। যা দেখা যেতো সিপিআইএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর মাথায়।
সিপিআইএমের দাপুটে নেতা সুভাষ চক্রবর্তী। উত্তর ২৪ পরগনার নেতা ছিলেন। বঙ্গ রাজনীতিতে এই জেলা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বাম জমানায় শাসকদলের অনেক বড় নেতা উঠেছেন উত্তর ২৪ পরগনা থেকে। তড়িৎ তোপদার, অমিতাভ নন্দী, মজিদ মাস্টার লম্বা তালিকা। তৃণমূলের একদা সেকেন্ড ম্যান ছিলেন মুকুল রায়। উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়ার বাসিন্দা। অর্জুন সিং, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পার্থ ভৌমিক, সুজিত বসু থেকে শুরু করে হাল আমলের দেবরাজ চক্রবর্তী। সবাই এই জেলার।
নেতাদের রাজনীতির নিজস্ব স্টাইল আছে। রাজনীতির ধরন আছে। তবে পানামা হ্যাট মানেই বঙ্গ রাজনীতি চেনে সুভাষ চক্রবর্তীকে। সাদা পানামা হ্যাট। মুখে হাসি। হাতে লাল ঝান্ডা। একের পর এক ভোট বৈতরণী পার করেছেন। দলের প্রার্থীকে হারিয়ে দেওয়ার দুর্নামও আছে তাঁর বিরুদ্ধে। এমনই সাংগঠনিক ক্ষমতা ছিল। রাজনৈতিক দীরদৃষ্টিও ছিল তীক্ষ্ণ। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটের আগেই আঁচ করেছিলেন বামফ্রন্ট সরকারের দিন শেষ হয়ে আসছে। তবে সেই দুর্দিন তাঁকে দেখতে হয়নি। অনেক আগেই তিনি ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেন। বাঙালির মনে রয়ে গিয়েছেন। পানামা হ্যাটের কমরেড। সুভাষ চক্রবর্তী।
সেই বহু চর্চিত পানামা হ্যাট এখন উত্তর ২৪ পরগনার আরেক নেতার মাথায়। ভোট প্রচারে অর্জুন সিংয়ের সঙ্গী। প্রথমে কংগ্রেস। তারপর তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে যোগ দেন অর্জুন। বরাবরই বাম বিরোধী ময়দানে লড়াই করেছেন। তিনিই এখন সিপিআইএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর স্টাইলে রাস্তায় নেমেছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা বলেন, বঙ্গে রামের উত্থান বামের ভোটে। এবার লোকসভা ভোটের আগে আবার নানা মহলে জোর চর্চায় রাম-বাম জোট। এসবেরই মাঝে, বিজেপি প্রার্থী অর্জুনের প্রচারে সিপিআইএম নেতা সুভাষের স্মৃতি। রামের প্রচারে বামের আইকন। এটা কি বামেদের রামের কাছে টানার কৌশল। জল্পনা নানা মহলে।