মমতাকে ‘মডার্ন জিন্না’ বলে কটাক্ষ বিজেপি নেতার

মুর্শিদাবাদ জেলায় সাম্প্রতিক হিংসাত্মক (Murshidabad violence) ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন…

BJP Leader Calls Mamata Banerjee ‘Modern Jinnah’ Over Murshidabad Violence

মুর্শিদাবাদ জেলায় সাম্প্রতিক হিংসাত্মক (Murshidabad violence) ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘ। মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকাকে ‘বিরাট লজ্জার বিষয়’ আখ্যা দিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে এবং হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর আপস করা হয়েছে।

তরুণ চুঘ কটাক্ষ করে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন ‘মডার্ন জিন্না’-র রূপ ধারণ করেছেন। এই ঘটনা যেন ১৯৪০-এর দশকের মুসলিম লিগের কার্যকলাপের প্রতিধ্বনি। রাজ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান আজ প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে। তাঁর নিঃশব্দতা এক রহস্যজনক মৌনতা, যা একদিকে যেমন লজ্জার, অন্যদিকে তেমন বিপজ্জনকও।”

Also Read |  মুর্শিদাবাদ হিংসার জেরে বাংলায় AFSPA দাবিতে শাহকে চিঠি সাংসদের

বিজেপি নেতার বক্তব্য অনুযায়ী, রাজ্যে সংখ্যালঘু তোষণকে হাতিয়ার করে তৃণমূল সরকার হিন্দুদের নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাঁর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রীর একপেশে নীতির ফলেই এমন হিংসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। শুধু সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থেই তিনি হিন্দুদের উদ্বেগকে উপেক্ষা করছেন।”

মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি সংঘটিত হিংসার ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত এক বিক্ষোভ ও জমায়েতকে ঘিরে, যা পরে সহিংস আকার ধারণ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মোতায়েন করা হলেও, বিরোধীদের অভিযোগ, প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং শাসক দলের ‘নীরব প্রশ্রয়’-এর কারণেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে।

Also Read |  হিন্দুদের উপর পরিকল্পিত হামলার অভিযোগ বিজেপি মুখপাত্র শেহজাদের

Advertisements

তরুণ চুঘ আরও অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে কেন্দ্রীয় ওয়াকফ আইন পশ্চিমবঙ্গে কার্যকর হবে না। এই মন্তব্যকে ‘সংবিধানবিরোধী’ বলে দাবি করে তিনি বলেন, “একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে কেন্দ্রীয় আইনের বিরোধিতা করতে পারেন? এ একপ্রকার সাংবিধানিক সীমালঙ্ঘন। এতে আবারও স্পষ্ট হয়েছে, তিনি কেবল তোষণের রাজনীতিতেই বিশ্বাসী।”

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের উত্তেজনার ঘটনা আরও বাড়বে। রাজনৈতিক দলগুলি তাদের নিজ নিজ ভোটব্যাঙ্ককে সুসংহত করতে যেভাবে মন্তব্য করছেন, তাতে রাজ্যের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

তবে সাধারণ মানুষের একাংশ মনে করছেন, হিংসা বা কটাক্ষ নয়, বরং সব পক্ষের দায়িত্ব হল শান্তি ও সংহতি বজায় রাখা। রাজনীতির নামে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করলে, তার খেসারত দিতে হবে রাজ্যবাসীকেই।

মুর্শিদাবাদ হিংসা ও তার পরবর্তী রাজনৈতিক তরজার মধ্য দিয়ে একবার আরও স্পষ্ট হল—পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি এখন ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, যেখানে আইন-শৃঙ্খলা, ধর্মীয় সহাবস্থান ও সাংবিধানিক মূল্যবোধ প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়েছে।